মোবাইলে ফলাফল দেখতে ব্যস্ত মাদ্রাসা পড়ুয়ারা। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এ বার কিছু বেশিই ছিল। কিন্তু পাশের হার কমে গেল মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের ফাজিল বা দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায়। গত বছরের থেকে তিন শতাংশেরও বেশি কমে এ বার ওই পরীক্ষায় পাশের হার দাঁড়িয়েছে ৭৪.৫০%। মঙ্গলবার ফাজিল ছাড়াও এ বছরের হাই মাদ্রাসা, আলিম পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে।
পর্ষদ জানিয়েছে, এ বার মোট ৩৭০৩ জন পড়ুয়া ফাজিল পরীক্ষা দেন। তাঁদের মধ্যে ২,৫৬৩ জন ছাত্র আর ১১৪০ জন ছাত্রী। গত বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩৫৫৪। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বাড়লেও এ বার পাশের হার কমে গেল কেন?
পর্ষদের সভাপতি ফজলে রব্বি বলেন, “এ বার দ্বাদশ শ্রেণির নতুন পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে পরীক্ষা হয়েছে। সেই জন্য ছেলেমেয়েদের সমস্যা হয়ে থাকতে পারে। তা ছাড়া প্রতি বছরই তো সমমানের পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেন না। হেরফের থাকেই। ঠিক কোন কারণে পাশের হার কমলো, সেটা বিশ্লেষণ করে দেখা হবে।” যদিও তাঁর দাবি, পাশের হার সামান্যই কমেছে। তাই তেমন উদ্বেগের কারণ নেই।
পর্ষদেরই দেওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত বারের তুলনায় এ বছর ফাজিলে ছাত্রীদের পাশের হার বেশ খানিকটা কমেছে। গত বছর ৬৮.৮৫% ছাত্রী এই পরীক্ষা পাশ করেছিলেন। এ বার পাশ করেছেন ৫৭.৬৩%। ছাত্রদের পাশের হার অবশ্য বেড়েছে। এ বছর পাশ করেছেন ৮২.০১% ছাত্র। গত বার তাঁদের পাশের হার ছিল ৮১.৩৭%। মাদ্রাসার পরীক্ষায় পাশের হারে প্রতি বারেই ছাত্রীদের পিছনে ফেলে দেন ছাত্রেরা। কিন্তু এ বছর ছাত্রীদের সাফল্যের হার এতটা কমে গেল কেন, তা বিশ্লেষণ করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন পর্ষদ-কর্তৃপক্ষ।
ফাজিলে পিছিয়ে পড়লেও হাই মাদ্রাসা বা দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ছাত্রীদের ফল এ বার বেশ ভাল। ওই পরীক্ষায় পাশের হার ৭৭.৮৬%। ছাত্রদের পাশের হার ৮৩.৯১%, ছাত্রীদের ৭৫.০৫%। গত বছর হাই মাদ্রাসায় পাশ করেছিল ৭৭.৬০% পরীক্ষার্থী। এ বছর এই পরীক্ষার মেধা-তালিকায় প্রথম দু’টি স্থানই অধিকার করেছে ছাত্রীরা। হাই মাদ্রাসায় প্রথম হয়েছে মালদহের বটতলা আদর্শ হাই মাদ্রাসার মরিয়ম খাতুন। দ্বিতীয় ওই জেলারই মহারাজনগর হাই মাদ্রাসার জিনাত আরজুমান। দ্বিতীয় স্থানে অবশ্য কোচবিহারের পরীক্ষার্থী রফিকুল আলিও রয়েছে। জিনাতের সঙ্গে সে যুগ্ম ভাবে দ্বিতীয় হয়েছে।
দশম শ্রেণিরই অন্য পরীক্ষা আলিম (যেখানে ধর্মতত্ত্বের পাঠ বেশি)-এ পাশের হার গত বারের থেকে সামান্য বেড়ে হয়েছে ৭৭.৫০%। এতে ৬৮.৮৫% ছাত্রী এবং ৮৬.৩৭% ছাত্র পাশ করেছে। দুই ক্ষেত্রেই পাশের হার গত বছরের থেকে সামান্য বেশি।
এ দিনই বিভিন্ন মাদ্রাসার প্রতিনিধিদের মার্কশিট ও শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানান পর্ষদ-কর্তৃপক্ষ। পর্ষদ জানিয়েছে, যাঁরা আগামী বছর বহিরাগত পরীক্ষার্থী হিসেবে হাই মাদ্রাসা ও ফাজিল পরীক্ষা দিতে চান, তাঁরা আগামী ২২ মে থেকে ২০ জুনের মধ্যে কোয়ালিফাইং টেস্টে বসার আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। ওই টেস্ট শুরু হবে ১১ অগস্ট।
ফাজিলে প্রথম পাঁচ: প্রথম: মহঃ আব্দুস সালাম মোল্লা (৫৪৪)। দ্বিতীয়: মহঃ আমিনুর রহমান মণ্ডল (৫৪৩)। তৃতীয়: মুশফিকুজ্জামান (৫৩৫)। চতুর্থ: মহঃ হাবিবুল্লাহ (৫২২)। পঞ্চম: মুন্সি জাকির হাসান (৫২০)।
হাই মাদ্রাসায় প্রথম পাঁচ: প্রথম: মরিয়ম খাতুন (৭৩২)। দ্বিতীয়: জিনাত আরজুমান (৭২) ও রফিকুল আলি (৭২৮)। তৃতীয়: মহঃ হেফজুর আলম (৭২৬) ও সরফরাজ আহমেদ (৭২৬)। চতুর্থ: মহঃ একতারুল আলি (৭২৫)। পঞ্চম: রেজাউল আনসারি (৭২০)।
আলিমে প্রথম পাঁচ: প্রথম: হাফিজ মাহমুদুল্লাহ (৭৮৪)। দ্বিতীয়: শামিম মণ্ডল (৭৭৯)। তৃতীয়: মহঃ বসির আহমেদ মণ্ডল (৭৭৪)। চতুথর্র্: মহঃ নুরুল আমিন (৭৭০)। পঞ্চম: মহঃ আমির খান (৭৬৫)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy