Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ফল বেরোনোর তিন দিন পরেও সংঘর্ষ অব্যাহত

ভোটের ফল বেরোতে রাজ্য জুড়ে শান্তি বজায় রাখার আবেদন করছেন শাসক দলের নেতা-নেত্রী, নব্য সাংসদেরা। কিন্তু সংঘর্ষ থামার লক্ষণ নেই। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়, উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি, হুগলির খানাকুলে শাসক দলই যেমন মারধর-ভাঙচুরে অভিযুক্ত, তেমনই চন্দননগরে দুই তৃণমূল কর্মীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ওই ঘটনার পরে ভাঙচুর চলে সিপিএমের পার্টি অফিসে।

চন্দননগরের গোস্বামী ঘাটে সিপিএম কার্যালয়ে ভাঙচুর।  নিজস্ব চিত্র

চন্দননগরের গোস্বামী ঘাটে সিপিএম কার্যালয়ে ভাঙচুর। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৪ ০৩:২৬
Share: Save:

ভোটের ফল বেরোতে রাজ্য জুড়ে শান্তি বজায় রাখার আবেদন করছেন শাসক দলের নেতা-নেত্রী, নব্য সাংসদেরা। কিন্তু সংঘর্ষ থামার লক্ষণ নেই।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়, উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি, হুগলির খানাকুলে শাসক দলই যেমন মারধর-ভাঙচুরে অভিযুক্ত, তেমনই চন্দননগরে দুই তৃণমূল কর্মীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ওই ঘটনার পরে ভাঙচুর চলে সিপিএমের পার্টি অফিসে। পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় কংগ্রেস-তৃণমূল সংঘর্ষে দু’পক্ষের সাত জন জখম হন। পুড়শুড়ায় গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে মার খেয়েছেন দুই তৃণমূল কর্মী।

সোমবার রাতে দলীয় বৈঠক সেরে ফেরার পথে এক দল সশস্ত্র দুষ্কৃতীর হাতে আক্রান্ত হন বাঁকুড়ার পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ শাহজাহান মিদ্যা-সহ তৃণমূলের কিছু নেতা। বোমার ঘায়ে বুদ্ধদেববাবু-সহ তিন জন জখম হন। এক তৃণমূলকর্মীকে বল্লম দিয়ে আঘাত করা হয়। পাত্রসায়র ব্লক সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, দলেরই এক নেতা এলাকায় অশান্তি পাকানোর উদ্দেশ্যে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। ওই নেতার বিরুদ্ধে খুন, তোলাবাজির অভিযোগ রয়েছে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে আবার আরএসএস নেতা তপন পালকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য কাইজার আহমেদের বিরুদ্ধে। ভাঙড় থানার সামনে তপনবাবুর চায়ের দোকানেও তৃণমূল সমর্থকেরা ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। মারধর, শাসানির অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন কাইজার। ভাঙড় ১ ও ২ ব্লকেও শাসক দলের হাতে বিরোধী সমর্থকেরা আক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী। তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব অভিযোগ মানেননি। যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের চৌবাগা এলাকায় এক বিজেপি সমর্থকের বইয়ের দোকান পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মণ্টু পাত্র নামে ওই সমর্থকের অভিযোগ, “বিজেপি-র হয়ে নির্বাচনে কাজ করার জন্য তৃণমূলের ছেলেরা শাসাচ্ছিল। রবিবার আমার বইয়ের দোকানে আগুন লাগায় তারা।” তাঁর দাবি প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার বই পুড়ে গিয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

বিজেপি-কে ভোট দিয়েছেন সন্দেহে রবিবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতেও কিছু আদিবাসী পরিবারের উপরে বোমা-বন্দুক নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে শাসক দলের বিরুদ্ধে। আদিবাসী বিকাশ পরিষদের এলাকার নেতা সুশান্ত সর্দারের দাবি, হামলার জেরে বেশ কিছু পুরুষ ঘরছাড়া। ওই রাতেই হাড়োয়াতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বোমা-গুলি ছুড়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ভয় দেখিয়ে ভেড়ি এলাকায় কয়েক লক্ষ টাকার মাছ লুঠ করে বলে অভিযোগ।

হুগলির খানাকুলে তৃণমূলের কর্মীরা বিজয় মিছিল থেকে এক সিপিএম সমর্থক গ্রামীণ চিকিৎসকের চেম্বারে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ মানেনি তৃণমূল। সোমবার আরামবাগে গিয়ে স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দার (আফরিন আলি) দলীয় কর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “অশান্তি নয়, উন্নয়ন করে দেখাতে হবে।”

হামলার অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধেও। রবিবার রাতে চন্দননগরে গোস্বামী ঘাটের কাছে একটি চায়ের দোকানে ভোটের ফল নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত তৃণমূল কর্মীদের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে এক সিপিএম সমর্থকের উপরে। তৃণমূলের দাবি, হামলায় তাদের দু’জন আহত হন। সিপিএমের পাল্টা অভিযোগ, ওই রাতেই বিনা প্ররোচনায় গোস্বামী ঘাটে তাদের স্থানীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় তৃণমূল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cpm tmc political violance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE