Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বাঁকুড়ায় ভিড়, আসানসোলের পাল্টা সভা ফাঁকাই

শহর দু’টো এক। সভা করার জায়গা দু’টোও এক। বাঁকুড়ায় ম্যাচ ড্র রাখতে পারলেও আসানসোলে গো-হারা হারল তৃণমূল! নরেন্দ্র মোদীর পাল্টা হিসাবে বাঁকুড়ায় ভিড়ে ঠাসা সভা করল রাজ্যের শাসক দল। আসানসোলে কিন্তু মাঠ রইল কার্যত ফাঁকাই। রবিবার বাঁকুড়ার তামলিবাঁধ স্টেডিয়াম ও আসানসোলের পোলো ময়দানে সভা করেন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী।

পিছনে চলছে মুকুল রায়ের সভা। সে দিকে মন নেই অনেকেরই। সোমবার আসানসোলে শৈলেন সরকারের তোলা ছবি।

পিছনে চলছে মুকুল রায়ের সভা। সে দিকে মন নেই অনেকেরই। সোমবার আসানসোলে শৈলেন সরকারের তোলা ছবি।

সুশান্ত বণিক ও রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
আসানসোল ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৪ ০৩:২০
Share: Save:

শহর দু’টো এক। সভা করার জায়গা দু’টোও এক। বাঁকুড়ায় ম্যাচ ড্র রাখতে পারলেও আসানসোলে গো-হারা হারল তৃণমূল!

নরেন্দ্র মোদীর পাল্টা হিসাবে বাঁকুড়ায় ভিড়ে ঠাসা সভা করল রাজ্যের শাসক দল। আসানসোলে কিন্তু মাঠ রইল কার্যত ফাঁকাই।

রবিবার বাঁকুড়ার তামলিবাঁধ স্টেডিয়াম ও আসানসোলের পোলো ময়দানে সভা করেন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। দু’টি সভাতেই ভিড় উপচে পড়েছিল। পোলো ময়দানে তো লাখখানেক লোকের ভিড় হয়েছিল। সোমবার সেই দু’টি জায়গাতেই পাল্টা সভা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় ও মিঠুন চক্রবর্তী।

তামলিবাঁধে কানায় কানায় পূর্ণ স্টেডিয়াম দেখে মুকুলবাবু প্রকাশ্যেই বললেন, “শুনেছি কাল নাকি ভিড় হয়েছিল এখানে। তবে, আজকের ভিড় কালকের ভিড়কে ছাপিয়ে গেছে।” আসানসোল কিন্তু যারপরনাই নিরাশ করেছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বকে। বিকেল ৪টে নাগাদ যখন হেলিকপ্টারে চড়ে মুকুল ও মিঠুন সভাস্থলে পৌঁছন, সেখানে তখন হাজার সাতেক লোক। এখানে ভিড় নিয়ে আর কোনও তুলনা টানেননি মুকুলবাবু।

মঞ্চে উঠেই মাইক হাতে হিন্দি-বাংলা-ভোজপুরি সিনেমার নানা সংলাপ আউড়ে কিছু হাততালি কুড়োন মিঠুন। কিন্তু মিনিট আটেক পরেই তিনি বলেন, “আমাকে এখনই চলে যেতে হবে। না হলে অন্ধকারে হেলিকপ্টার আর উড়তে পারবে না।” যেটুকু ভিড় ছিল, মিঠুন মঞ্চ ছাড়তেই তা পাতলা হতে শুরু করে। এমনকী, মঞ্চের সামনে অনেক চেয়ারেও আর লোক ছিল না। কার্যত ফাঁকা মাঠেই নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তোপ দাগতে থাকেন মুকুলবাবু। সভার শেষ পর্বে মঞ্চে হাজির হন তৃণমূল প্রার্থী দোলা সেন। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা জনতার মাঝে তিনি অবশ্য কোনও বক্তব্য রাখেননি।

গত ৩০ এপ্রিল আসানসোলের এই ময়দানে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাও পুরোপুরি ভরেনি। কিন্তু রবিবার মোদীর সভায় মাঠ তো বটেই, আশপাশের সব রাস্তা, আবাসন, শপিং মলের ছাদেও তিলধারণের জায়গা ছিল না। এ দিন তৃণমূলের ডাকা পাল্টা সভায় ফের লোক হল না কেন? তৃণমূল নেতারা এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। তবে দলের একটি সূত্রের দাবি, মোদী জমজমাট সমাবেশ সেরে যাওয়ার পরে তড়িঘড়ি এই সভার আয়োজন হয়। এত কম সময়ের প্রস্তুতিতে এর চেয়ে বেশি লোক জোটানো যায়নি।

ফাঁকা মাঠে মুকল-মিঠুনের সভা নিয়ে বিজেপি-র আসানসোল জেলা সভাপতি নির্মল কর্মকারের প্রতিক্রিয়া, “মোদীর সভায় কেমন সাড়া ছিল, সকলে দেখেছেন। এ দিন তৃণমূলের সভাও দেখলেন। যা বোঝার, মানুষ বুঝছেন।” বাঁকুড়ার বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, রবিবার সভা সেরে যাওয়ার সময়ে মোদী বলে গিয়েছেন, “আচ্ছা মাহল (পরিবেশ) হ্যায়।” এ দিন সেখানে তৃণমূলও ভাল সমাবেশ করার পরে বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের দাবি, “মোদীজির সভায় ভিড় ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। আজ তো সিনেমার হিরো দেখাতে লোক ধরে এনে মাঠ ভরিয়েছে ওরা।” যদিও বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল নেতা তথা জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “নির্বাচন কমিশন অনেক বাস না নিয়ে নিলে আরও লোক হত।”

রাজ্যে চতুর্থ দফায় যে সব কেন্দ্রে ভোট হবে, সেখানে এ দিনই ছিল শেষ প্রচার। সভা সেরে বাড়ির পথ ধরার সময়ে বাঁকুড়ার যুবক দেবদাস পাল, সুমন চৌধুরীরা বলে গেলেন, “ভোটের জন্য এই ক’দিনে বিনা পয়সায় বেশ কিছু সেলিব্রিটি দেখতে পেলাম। এটাই বা কম কী!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE