Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বিজেপি ভাবাচ্ছে, স্পষ্টই হয়ে গেল তৃণমূলের বৈঠকে

স্বাধীনতার পর থেকে কস্মিন কালেও কোনও দল একক ভাবে এ রাজ্যে ৩৪টি লোকসভা আসন পায়নি! এমন বিপুল সাফল্যের পরেও তৃণমূলকে যে উদ্বেগে রেখেছে বাংলায় বিজেপি-র উত্থান, তা স্পষ্ট হয়ে গেল শুক্রবার দলের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৪ ০৩:৪১
Share: Save:

স্বাধীনতার পর থেকে কস্মিন কালেও কোনও দল একক ভাবে এ রাজ্যে ৩৪টি লোকসভা আসন পায়নি! এমন বিপুল সাফল্যের পরেও তৃণমূলকে যে উদ্বেগে রেখেছে বাংলায় বিজেপি-র উত্থান, তা স্পষ্ট হয়ে গেল শুক্রবার দলের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে।

লোকসভা ভোটের পরে দলের সর্ব স্তরের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে এ দিনের সাংগঠনিক বৈঠকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিজেপি এগিয়ে আছে, এমন সব এলাকা পুনরুদ্ধার করাই এখন তাঁদের প্রথম লক্ষ্য। দু’বছর পরে বিধানসভা ভোট। সেই নির্বাচনে লক্ষ্যভেদের জন্য বিজেপি-র মোকাবিলা করেই এগোতে হবে। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী বিজেপি-র নাম না করেও রাজ্যে এই ‘নতুন শক্তি’ সম্পর্কে দলকে সতর্ক করে দিয়েছেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। শৃঙ্খলা এবং ভাবমূর্তিতে নজর রেখে ঐক্যবদ্ধ ভাবে বিধানসভা ও পুরভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়ার কথা বলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

নেতাজি ইন্ডোরের বৈঠকে এ দিন মমতা বলেছেন, লোকসভা ভোটের ফল অনুযায়ী ১৮টি বিধানসভা এলাকায় (যদিও আদতে সংখ্যাটা ২৪) বিজেপি এগিয়ে আছে। সেগুলি পুনরুদ্ধার করতেই হবে অদূর ভবিষ্যতে। তৃণমূলকে এগোতেই হবে এবং তার জন্য কাউকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়া চলবে না বলে মন্তব্য করেছেন তৃণমূল নেত্রী। বিজেপি-র বিপদের কথা বলেছেন সুব্রতবাবুও। দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ এ দিনের বৈঠকে বলেন, একটা নতুন শক্তি তাঁদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলকে তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। আত্মতুষ্টির কোনও সময় নেই। আগামী দিনের জন্য দলকে প্রস্তুত থাকতে বলেন তিনি।

শুধু বিজেপি-র মোকাবিলাই নয়, সামগ্রিক ভাবেই দলের ভবিষ্যতের চলার পথের জন্য পাঁচটি ‘ডি’-র সূত্র বাতলেছেন তৃণমূল নেত্রী। ডিটারমিনেশন, ডেডিকেশন, ডিভোশন, ডেভেলপমেন্ট এবং ডিরেকশন এই পাঁচ ‘ডি’র উপরে ভরসা রাখতে বলেছেন। দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তির স্বার্থে তোলা আদায়ের মতো কাজকর্ম বরদাস্ত না করার কথাও এ দিন ফের দলনেত্রীর মুখে শুনেছেন বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। সততার সঙ্গে দলের কাজ করাই কর্মীদের মন্ত্র হওয়া উচিত বলে তৃণমূল নেত্রী জানিয়েছেন।

চতুর্মুখী লড়াইয়ে এ বারের লোকসভা ভোট ছিল তাঁদের কাছে খুবই কঠিন নির্বাচন। সেই কঠিন যুদ্ধে সফল হওয়ার জন্য দলের সর্ব স্তরের নেতা-কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন মমতা। সেই সঙ্গেই মনে করিয়ে দিয়েছেন, একটা ভোট মিটতে না মিটতে পরবর্তী লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। সামনে পাখির চোখ বিধানসভা ভোটই।

তবে তার মাঝেই পুরভোট আছে। কলকাতা পুরসভার নির্বাচনের জন্য মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বর্ষীয়ান মন্ত্রী তথা প্রাক্তন মেয়র সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের সমন্বয় রেখে এখন থেকেই কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। দলের সাংসদ ও জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েনের কথায়, “আস্তে আস্তে বিশ্বাস হচ্ছে যে, এখন দুই কক্ষ মিলিয়ে আমরা ৪৬ জন সাংসদ! রুপোর চামচ মুখে দিয়ে কেউ এখানে আসেননি। দলনেত্রীর সাহসই এই লড়াইয়ে আমাদের জন্য গৌরব এনে দিয়েছে।” সাফল্যের এই আবহেই ভবিষ্যতের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতির বার্তা এ দিন দিয়ে রেখেছেন তৃণমূল নেত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bjp in west bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE