দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া না-বাড়ানোয় অনেক বাসই বসে গিয়েছে। শহর কলকাতায় যাত্রীর তুলনায় বাসের সংখ্যা যে কম, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও তা মেনে নিচ্ছেন। কিন্তু এখনই বাস-ভাড়া বাড়ানোর ব্যাপারে সরকারের যে কোনও পরিকল্পনা নেই, সোমবার একই সঙ্গে সেটাও পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। “আমাদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে,” বলেছেন মমতা।
জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশন বা জেএনএনইউআরএম-এর আওতায় ৩০টি এসি বা বাতানুকূল বাস সোমবার থেকে পথে নামল। এ দিন নবান্নে তার সূচনা অনুষ্ঠানে বাস-মালিকদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ডিজেল-পেট্রোলের দাম আমরা বাড়াই না। দাম বাড়লে আপনাদের সমস্যায় পড়তে হয়। কিন্তু আমাদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।” এর পরেই কেন্দ্রের নতুন সরকার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, “নতুন সরকার এসেছে। দেখা যাক, তারা কী করে।”
গত দু’বছরে ডিজেলের দাম বহু গুণ বাড়লেও রাজ্য সরকার বাসের ভাড়া বাড়াতে রাজি নয়। এর ফলে সরকারি-বেসরকারি বাসের সংখ্যা প্রায় অর্ধেক কমে গিয়েছে। বাস-মালিকদের দাবি, ভাড়া না-বাড়ালে বাস চালানো কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এই নিয়ে সরকারের সঙ্গে বাস-মালিকদের একাধিক বৈঠক হয়েছে। তাতেও বরফ গলেনি।
রাস্তায় বেরিয়ে বাস না-পেয়ে নিত্যযাত্রীদের কী অবস্থা হয়, ভুক্তভোগীরা সেটা ভালই জানেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, “আমি দেখেছি, প্রচুর মানুষ বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকেন। এই শহরে জনসংখ্যা যে-ভাবে বেড়েছে, সেই অনুযায়ী বাস বাড়েনি। সেটা না-বাড়লে বাসের চাহিদা পূরণ করতে পারব না।” তিনি জানান, সরকার আরও বাসের পারমিট দেবে। ট্যাক্সিরও পারমিট দেওয়া হবে। বেকার ছেলেমেয়েরা চাইলে তাঁদের ব্যাঙ্কঋণের ব্যবস্থা করে সাহায্য করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সংযোজন, রাজ্যের জলপথ পরিবহণও ঢেলে সাজা হবে। শহরে আরও ১০ হাজার ট্যাক্সি নামানোরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
জেএনএনইউআরএম প্রকল্পে কেন্দ্রের সঙ্গে যৌথ ভাবে রাজ্যে ৮৭৪টি নতুন বাস নামানোর প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। তার মধ্যে কলকাতা রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (সিএসটিসি)-এর আওতায় ৬৩২টি বাস নামানো হচ্ছে, যার ২৩৪টি বাতানুকূল। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (এসবিএসটিসি) এবং উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (এনবিএসটিসি)-এ যথাক্রমে ১০২টি এবং ১৪০টি নতুন বাস নামানো হচ্ছে। তারই প্রথম ধাপ হিসেবে এ দিন ৩০টি এসি বাসের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy