জয়ী সাংসদদের সঙ্গে নিজের বাড়িতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র
দলের সদ্য নির্বাচিত সাংসদদের শৃঙ্খলাবদ্ধ ও রাজ্যের আর্থিক উন্নয়নের ব্যাপারে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভোটের ফল বেরোনোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শনিবার বিকালে তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে দলের সাংসদদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন মমতা। মিনিট কুড়ির বৈঠকে রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিষয়ে দলীয় সাংসদদের সজাগ থাকা এবং অধিবেশন চলাকালীন সংসদে নিয়মিত হাজির থাকার ব্যাপারে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। হাজিরার ক্ষেত্রে এক মাত্র ছাড় পাবেন ঘাটালের সাংসদ-অভিনেতা দেব (দীপক অধিকারী) এবং রাজ্যসভার সাংসদ-অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী।
এ বার তৃণমূলের ৩৪ জন সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে ১৭ জনই নতুন। মূলত নতুন সাংসদদের জন্যেই বৈঠকে দলনেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, সংসদের বাইরেও দলীয় নিয়ম-নীতি ও শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে সকলকে। দলীয় সূত্রের খবর, না দেখেশুনে চিঠিপত্রে সই করার ক্ষেত্রে সাংসদের সাবধান করা হয়েছে। আবার কোনও নিমন্ত্রণে যাওয়ার ব্যাপারে সমস্ত দিক যাচাই করে নিতে বলা হয়েছে। এমনকী, দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ ছাড়া সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলা যাবে না বলেও মমতা নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি যে সাংসদ যেখান থেকে নির্বাচিত হয়েছেন, সেই এলাকার সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখার কথাও বলেছেন তিনি।
ত্রয়ী। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার আগে মিঠুন, দেব এবং অভিষেক। ছবি: প্রদীপ আদক
ভোটের আগে মমতা-সহ তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি ছিল, তাঁরা কেন্দ্রের নতুন সরকারে ‘নির্ণায়ক ভূমিকায়’ থাকবেন। কিন্তু বিজেপি তথা এনডিএ একক শক্তিতেই নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েছে। ফলে তৃণমূলের গুরুত্ব জাতীয় রাজনীতিতে তেমন নেই। কার্যত সেই কারণে বৈঠকের পরে মমতা বলেন, “বাংলায় আমাদের জয়ের ভিত্তি খুবই বড়। আমরা এ বার ৪২ আসনে লড়াই করে ৩৪টায় জয় পেয়েছি। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।” সংসদেও বাংলার গুরুত্ব তুলে ধরার জন্য তিনি সাংসদের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে বাংলার বাইরে যে ৬০টি আসনে তৃণমূল প্রার্থী দিয়েছিল, তার কোনওটাতেই তারা জিততে পারেনি।
বৈঠকে ৩৪ জন সাংসদের মধ্যে এক মাত্র তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী ছিলেন না। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় জানিয়েছেন, অসুস্থ থাকায় শুভেন্দু আসতে পারেননি। তবে সদ্য নির্বাচিত সুগত বসু, মুনমুন সেন, সন্ধ্যা রায়, দেব, উমা সোরেন, সৌমিত্র খান, ইদ্রিস আলি প্রমুখ বৈঠকে যোগ দেন। এ দিন বৈঠকে লোকসভায় দলনেতা, সহকারী নেতা, মুখ্যসচেতক ঠিক করা হয়। গত বারের মতো এ বারও লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা হয়েছেন কলকাতা-উত্তরের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভায় দলের সহনেতা হয়েছেন রত্না দে নাগ ও সদ্য যাদবপুর থেকে নির্বাচিত সুগত বসু। গত বারের মতো এ বারও লোকসভায় দলের মুখ্যসচেতক হয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যসভায় দলের মুখ্যসচেতক রয়েছেন ডেরেক ও’ব্রায়েনই। দলের সংসদীয় কমিটির নেতার পদে রয়েছেন মুকুল রায়ই। মমতা জানান, মুকুলবাবুকে সহযোগিতা করবেন কলকাতা দক্ষিণের সাংসদ সুব্রত বক্সী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy