Advertisement
১১ মে ২০২৪

সন্ত্রস্ত এ বার জুতো কারখানা, অভিযুক্ত তৃণমূল

প্রতাপপুরের কাগজকলের পরে এ বার ভাঙড়ের জুতো কারখানা। ফের সিন্ডিকেটের দাপটে সঙ্কট এ রাজ্যের আরও এক শিল্পে। তাঁর অনুগামীদের কাজের বরাত দেওয়া না হলে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং মারধর করা হবে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা রাজ্জাক আলি মোল্লার কাছ থেকে এমনই হুমকি পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন মালঞ্চ-পদ্মপুকুর এলাকার এক জুতো কারখানার মালিক জাফর আলম ওরফে পাপ্পু। তিনি বলেন, “এ রকম চললে এবং পুলিশ নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করলে কারখানা তুলে নিয়ে চলে যেতে হবে।”

কারখানার মালিক জাফর আলম।

কারখানার মালিক জাফর আলম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৪ ০২:২৪
Share: Save:

প্রতাপপুরের কাগজকলের পরে এ বার ভাঙড়ের জুতো কারখানা। ফের সিন্ডিকেটের দাপটে সঙ্কট এ রাজ্যের আরও এক শিল্পে।

তাঁর অনুগামীদের কাজের বরাত দেওয়া না হলে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং মারধর করা হবে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা রাজ্জাক আলি মোল্লার কাছ থেকে এমনই হুমকি পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন মালঞ্চ-পদ্মপুকুর এলাকার এক জুতো কারখানার মালিক জাফর আলম ওরফে পাপ্পু। তিনি বলেন, “এ রকম চললে এবং পুলিশ নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করলে কারখানা তুলে নিয়ে চলে যেতে হবে।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে দলের শীর্ষনেতারা সিন্ডিকেট ব্যবসায় না জড়ানোর জন্য দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীদের বারেবারে সতর্ক করছেন। কিন্তু কখনও রাজারহাট-নিউটাউন, কখনও দুর্গাপুরের প্রতাপপুর, কখনও বা দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় শাসক দলের মদতে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ ওঠা বন্ধ হচ্ছে না। শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের হস্তক্ষেপে কাগজকলের সমস্যা মেটার পথে। আজ, রবিবার থেকে ওই কাগজকলে কাজ শুরু হওয়ার কথা। আর ঠিক তার আগেই সঙ্কট ঘনাল ভাঙড়ের জুতো কারখানায়।

অভিযুক্ত রাজ্জাক আলি।

তপসিয়ার বাসিন্দা জাফর আলম ভাঙড়ের মালঞ্চ-পদ্মপুকুর এলাকায় ৫ কোটি টাকায় জুতো কারখানাটি চালু করেন বছর সাতেক আগে। সেখানে ২৫-৩০ জন কাজ করেন। সম্প্রতি জাফর কারখানাটি সম্প্রসারণের জন্য পাশেই ৩০ লক্ষ টাকায় আর একটি ইউনিট তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। সে কথা জানতে পেরে গত ২২ অগস্ট তাঁকে ফোন করেন ভাঙড়-১ ব্লকের মালঞ্চ-পদ্মপুকুর এলাকার তৃণমূলের বুথ সভাপতি রাজ্জাক। ফোনে রাজ্জাক তাঁর লোকজনকে নির্মাণ কাজের বরাত দেওয়ার দাবি তুলে হুমকি দেন বলে অভিযোগ জাফরের। জাফর জানান, রাজ্জাকের দাবি তিনি মানবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।

ঘটনাচক্রে, যে দিন রাজ্জাক জাফরকে ফোন করেছিলেন, সে দিনই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে লোক নিয়োগের জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগ তুলে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন প্রতাপপুরের কাগজকল কর্তৃপক্ষ। কিছু দিন কাজ বন্ধও থাকে। জাফর অবশ্য এখনও সে পথে হাঁটেননি। তিনি পুলিশ প্রশাসনের উপরে ভরসা রাখছেন। শুক্রবারই তিনি ওই অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই কারখানার নিরাপত্তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

অভিযুক্ত রাজ্জাক আলি স্বীকার করে নিয়েছেন, তিনি ওই জুতো কারখানার মালিককে ‘কড়া’ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, “এলাকার অনেক বেকার ছেলে বাইরে কাজে যায়। ওদের অনুরোধেই এলাকায় কাজের জন্য ওই জুতো কারখানার মালিককে বলেছিলাম। উনি কথা না শুনে খারাপ ব্যবহার করেন। কথা কাটাকাটিতে রাগের মাথায় হয়তো কড়া কথা বলেছি।” ভাঙড়ে তাঁর দলের নেতার বিরুদ্ধে অবশ্য সিন্ডিকেট চালানোর অভিযোগ মানতে চাননি জেলা তৃণমূলের ভাইস-চেয়ারম্যান শক্তি মণ্ডল। তাঁর দাবি, “ওখানে সিন্ডিকেটের ব্যাপার নেই। জমি নিয়ে সমস্যা ছিল। তা মিটে গিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bhangar shoes factory tmc razzak ali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE