Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

সারদার চাবি চেয়ে ইডি পথে দাঁড়িয়ে চার ঘণ্টা

আরও এক দফা নালিশের মুখে পুলিশ। তথ্য সরবরাহে অসহযোগিতার অভিযোগ করা হচ্ছিল বারে বারেই। সল্টলেকের ব্যাঙ্কে সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের স্ত্রীর লকারের দখল আগেভাগেই নিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। এ বার উঠল সারদা গোষ্ঠীর অফিসের চাবি দেওয়া নিয়ে দীর্ঘ টালবাহানার অভিযোগ। রাজ্য সরকারের স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট) বা বিশেষ তদন্তকারী দলের কাছে চাবি চেয়ে মঙ্গলবার বেহালার ডায়মন্ড হারবার রোডে চার ঘণ্টা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র তদন্তকারী কর্মী-অফিসারদের।

ডায়মন্ড হারবার রোডে সারদা গোষ্ঠীর অফিস থেকে বেরিয়ে আসছেন তদন্তকারীরা। মঙ্গলবার অরুণ লোধের তোলা ছবি।

ডায়মন্ড হারবার রোডে সারদা গোষ্ঠীর অফিস থেকে বেরিয়ে আসছেন তদন্তকারীরা। মঙ্গলবার অরুণ লোধের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৪ ০৩:১৭
Share: Save:

আরও এক দফা নালিশের মুখে পুলিশ।

তথ্য সরবরাহে অসহযোগিতার অভিযোগ করা হচ্ছিল বারে বারেই।

সল্টলেকের ব্যাঙ্কে সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের স্ত্রীর লকারের দখল আগেভাগেই নিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে।

এ বার উঠল সারদা গোষ্ঠীর অফিসের চাবি দেওয়া নিয়ে দীর্ঘ টালবাহানার অভিযোগ। রাজ্য সরকারের স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট) বা বিশেষ তদন্তকারী দলের কাছে চাবি চেয়ে মঙ্গলবার বেহালার ডায়মন্ড হারবার রোডে চার ঘণ্টা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র তদন্তকারী কর্মী-অফিসারদের।

চাবি এমন একটি অফিসের, যেখানে অর্থ লগ্নি সংস্থা সারদার প্রায় সব শাখার কাজ হতো। এ-হেন গুরুত্বপূর্ণ অফিসে তল্লাশি চালাতে গিয়ে সকাল থেকে প্রায় চার ঘণ্টা ঢুকতেই পারলেন না ইডি-র তদন্তকারী কর্মী-অফিসারেরা। এই অফিস নিয়েই অভিযোগ তুলে ইডি-র দ্বারস্থ হয়েছিলেন কলকাতা পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, কংগ্রেসের প্রকাশ উপাধ্যায়। এ দিনও এই অফিস নিয়ে পুরসভার মাসিক অধিবেশনে হইচই করেন প্রকাশবাবু।

ইডি-র তদন্তকারীদের অভিযোগ, চার ঘণ্টা বাদে যে-চাবি মিলেছে, তা দিয়ে সব ঘর খোলা যায়নি। বাধ্য হয়ে সারদার ওই অফিসের ম্যানেজার বিশ্বজিৎ রায়ের কাছ থেকে বিকল্প চাবি আনা হয়। সেই চাবি দিয়ে গোটা পাঁচেক ঘরে ঢোকা গেলেও এখনও সব ঘরের দরজা খোলা যায়নি।

ঠিক কী ঘটেছিল মঙ্গলবার?

পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে সকাল সাড়ে ৯টায় ওই অফিসের সামনে হাজির হন ইডি-র তদন্তকারীরা। অফিসের চাবির খোঁজে ইডি-র দল যায় বেহালা থানায়। কিন্তু ওই অফিসের চাবির কোনও হদিস দিতে পারেনি বেহালা থানার পুলিশ। চাবির খোঁজে ইডি-র সদর দফতর থেকে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কলকাতা পুলিশ জানায়, ওই অফিস সিল করেছিল বিশেষ তদন্তকারী দল ‘সিট’। চাবির খোঁজ দিতে পারবেন সিটের অফিসারেরাই।

অগত্যা চাবির খোঁজে ফের অপেক্ষা। তবে লকার কাণ্ডের অভিজ্ঞতা থাকায় এ দিন ওই অফিসে যে-কোনও ভাবে তল্লাশি চালাতে বন্ধপরিকর ছিল। কিন্তু চার ঘণ্টা অপেক্ষার পরে যে-চাবি এল, তা-ও কাজে লাগল না। ফলে এ বার খোঁজ করা হল ওই অফিসের ম্যানেজার সরশুনার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ রায়ের। তাঁর কাছে মিলল বিকল্প চাবি। চাবি খুলে দেখা গেল, ছোট ছোট ঘুপচি কয়েকটি ঘর খোলা পড়ে রয়েছে। সেখানে কোথাও খোলা প্লাস্টিকের বস্তায় রাখা আছে কাগজপত্র। কোথাও মেঝের ধুলোতেই পড়ে রয়েছে বিভিন্ন নথি। অফিসের ভিতরে রয়েছে পাঁচটি শাটার-বন্ধ ছোট ছোট ঘর। তার মধ্যে চারটি অনেক চেষ্টার পরে খোলা সম্ভব হলেও একটির শাটার কোনও মতেই খোলা যায়নি বলে ইডি-র তদন্তকারীরা জানান। তাঁরা জানান, গ্যাস-কাটার দিয়ে ওই শাটার কাটতে হবে। কিন্তু বিদ্যুতের লাইন না-থাকায় এ দিন সেই কাজটা করা যায়নি। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ তদন্তকারীরা ওই অফিস থেকে বেরিয়ে যান।

৪৫৫ ডায়মন্ড হারবার রোডের ওই অফিসে এর আগে তদন্ত চালিয়েছিলেন সিটের তদন্তকারীরা। তাঁরা সেখান থেকে কিছু তথ্যও সংগ্রহ করেন। তার পরে ওই অফিস সিল করে দেওয়া হয়। কিন্তু অফিসের মূল ফটকেও কোনও তালার ব্যবস্থা নেই। রাখা হয়নি কোনও নিরাপত্তাকর্মীও। ইডি-র তদন্তকারীদের অভিযোগ, মূল চাবিটা সিটের অফিসারেরা নিজেদের কাছে রাখলেও বিকল্প চাবি অফিসের ম্যানেজারের কাছ থেকে কেন নিয়ে নেওয়া হল না, তার ব্যাখ্যা মেলেনি।

চাবির জন্য ইডি-র তদন্তকারীদের চার ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হল কেন? মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সল্টলেক কমিশনারেটে এই প্রশ্ন করা হলে সিটের অন্যতম সদস্য তথা সল্টলেকের গোয়েন্দা-প্রধান অর্ণব ঘোষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ed saradha case
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE