রামনবমীর পর এ বার স্বামী বিবেকানন্দের শিকাগো বক্তৃতার ১২৫ তম বছর উপলক্ষে শক্তি প্রদর্শন করবে সঙ্ঘ পরিবার। ১৮৯৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর শিকাগো ধর্ম মহাসম্মেলনে হিন্দু ধর্মের প্রতিনিধি হিসাবে বক্তৃতা করেছিলেন বিবেকানন্দ। সেই বক্তৃতার ১২৫ তম বছর উপলক্ষে এ বার রাজ্য জুড়ে বিবেকানন্দের আদর্শ প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। তার জন্যই আজ, রবিবার এবং কাল, সোমবার রাজ্যের সব ব্লকে শোভাযাত্রা করা হবে। তাতে আরএসএস, বিজেপি-সহ সঙ্ঘ পরিবারের সকলেরই থাকার কথা। তবে আরএসএস-এর নামে কোনও কর্মসূচির আয়োজন করা হচ্ছে না। অনুষ্ঠানের জন্য গঠন করা হয়েছে ‘স্বামী বিবেকানন্দের শিকাগো বক্তৃতার ১২৫ বর্ষ উদ্যাপন সমিতি’।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আজ বিবেকানন্দের শিকাগো বক্তৃতার স্মারক বাইক মিছিলে যোগ দেবেন দুর্গাপুরে। উলুবেড়িয়াতেও আজ বাইক মিছিল হবে। সোমবার বাইক মিছিল হবে কলকাতায় কালীঘাট মেট্রো স্টেশন থেকে গোলপার্ক পর্যন্ত। আজ রাতে কলকাতায় পৌঁছে কাল বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহও স্বামী বিবেকানন্দের বাড়িতে গিয়ে তাঁর মূর্তিতে মালা দেবেন।
বিজেপির ব্যাখ্যা, বামপন্থী এবং ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তিরা বিবেকানন্দের আদর্শ সম্পর্কে এমন প্রচার করেছেন, যাতে তাঁর ‘হিন্দু নেতা’ ভাবমূর্তি আড়ালে চলে গিয়েছে। সামনে এসেছে তাঁর বস্তুবাদী দিকটা। তাই পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ধর্মীয় মেরুকরণের জন্য ‘হিন্দু নেতা’ বিবেকানন্দকে তুলে ধরার পরিকল্পনা হয়েছে। শিকাগো বক্তৃতায় বিবেকানন্দ হিন্দু ধর্মকেই শ্রেষ্ঠ বলে ঘোষণা করেছিলেন। তাঁর ওই বক্তব্য বিজেপির মতাদর্শের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় বেছে বেছে সেটাকেই এ বছর স্মরণ করছে গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন:সবাই এলে তৃণমূলই উঠে যাবে: দিলীপ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, বিজেপি স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গে দীনদয়াল উপাধ্যায়কেও একাসনে বসাতে চাইছে। যে কারণে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কাল ওই দু’জনকে নিয়ে বক্তৃতা করবেন এবং তা উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে প্রচার করার নির্দেশ দিয়েছে ইউজিসি। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বিবেকানন্দ এবং জনসঙ্ঘের নেতা দীনদয়ালকে একাসনে বসানোর চেষ্টা মানবেন না। বিবেকানন্দের স্থান অনেক উপরে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও জানান, ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের চিঠি দিয়েছে। তাই তাঁরা কী করবেন, সে বিষয়ে সরকার নির্দেশ দিতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘‘গোটা বিশ্ব বিবেকানন্দকে শ্রদ্ধা করে। কিন্তু বিবেকানন্দের সঙ্গে দীনদায়লকে একাসনে বসানো ঠিক নয়।’’
রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানের ফাঁকে বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার সব কিছুরই রাজনীতিকরণ করছে। এটা দুঃখজনক। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী। দেশের মানুষ মোদীকে জিতিয়েছেন। সুতরাং, এ ধরনের মন্তব্য করে রাজ্য সরকার এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের অখণ্ডতা নষ্ট করছেন।’’ বিবেকানন্দ এবং দীনদয়ালের পাশাপাশি অন্যান্য ভারতীয় মনীষীদেরও দলের প্রচারে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে সব ভারতীয় মীনীষীর মূর্তি এবং দলীয় কার্যালয় পরিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলের স্বচ্ছতা সেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy