দেনাপাওনার বিয়েতে যেমন হয়!
‘যৌতুক’ হিসেবে নগদ টাকা, সোনার গয়না, আসবাবপত্র সবই দিতে হয়েছিল ফরাক্কার রীতা সরকারের পরিবারকে। অভিযোগ, তার পরেও দু’লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন রীতার স্বামী বিশ্বজিৎ সরকার। সেই টাকা দিতে না পারায় তাঁর কিডনি স্বামী বিক্রি করে দিয়েছেন বলে শুক্রবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন স্ত্রী।
ফরাক্কার আইসি উদয়শঙ্কর ঘোষ বলছেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, কলকাতার একটি নার্সিংহোমে ওই মহিলার অ্যাপেনডিক্স অস্ত্রোপচারের নামে কিডনি কেটে পাচার হয়েছে। বিশ্বজিতের খোঁজে তল্লাশি চলছে। কলকাতার কোন নার্সিংহোমে এ কাজ হয়েছে, কারা এতে জড়িত, তা-ও দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ বিশ্বজিতের খোঁজ না পেলেও ফোনে তাঁকে পাওয়া গেল অনায়াসেই। তিনি অবশ্য এমন অভিযোগ মানতে চাননি। বরং তাঁর দাবি, ‘‘শ্বশুর ষড়যন্ত্র করে মিথ্যে মামলায় ফাঁসাচ্ছেন। তিনি আমার সম্পত্তিই হাতানোর জন্য এ কাজ করেছেন।’’ তা হলে রীতার কিডনি? বিশ্বজিৎ বলছেন, ‘‘আমার স্ত্রী তো স্বেচ্ছায় কিডনি দান করে দিয়েছে।’’
২০০৫ সালে লালগোলার কৃষ্ণপুরের বাসিন্দা ,পেশায় ব্যবসায়ী বিশ্বজিতের সঙ্গে বিয়ে হয় ফরাক্কার বিন্দুগ্রামের রীতার। তাঁদের ১১ বছরের এক ছেলেও রয়েছে। রীতার অভিযোগ, গত ১৩ বছর ধরে পণের জন্য শ্বশুরবাড়িতে তাঁকে অত্যাচার সহ্য করতে হচ্ছে। বছর আড়াই আগে পেটের যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় বিশ্বজিৎ কলকাতার একটি নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করান।
রীতার কথায়, ‘‘আমাকে বলা হয়, অ্যাপেনডিক্স বাদ দিতে হয়েছে। তবে বিশ্বজিৎ বলেছিল, আমি যেন এই অপারেশনের কথা কাউকে না জানাই। কিন্তু তার পর থেকে আমি কাহিল হয়ে পড়ি। মাথা ঘুরত। কিন্তু ডাক্তারের কাছেও নিয়ে যেত না স্বামী।’’ রীতার বাবা মহাদেব হালদার বলছেন, ‘‘মাস তিনেক আগে মেয়ে শিলিগুড়িতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকের পরামর্শে আলট্রাসোনোগ্রাফি করানোর পরে জানা যায়, রীতার ডান দিকের কিডনি নেই।’’ মহাদেবের কথায়, ‘‘প্রথমে সেই রিপোর্টে বিশ্বাস হয়নি। ফের মালদহের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করানো হয়। সেখানেও একই রিপোর্ট মিলেছে। পণের আরও দু’লক্ষ টাকা দিতে পারিনি বলে জামাই যে মেয়ের এত বড় সর্বনাশ করে দেবে, তা ভাবতেই পারছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy