Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মোর্চা নেতাদের নির্দেশেই পাহাড় জুড়ে হামলা

কিছু ক্ষেত্রে দলের শীর্ষ স্তর থেকে ফোনে নির্দেশও আসত বলে দাবি। পাহাড় জুড়ে জুন থেকে একের পর এক হামলা, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগেই মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

হাজিরা: পাহাড়ে আন্দোলন চলাকালীন অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শনিবার গ্রেফতার করা হয় কার্শিয়াং পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণ লিম্বুকে। শিলিগুড়ি আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে। ছবি: স্বরূপ সরকার।

হাজিরা: পাহাড়ে আন্দোলন চলাকালীন অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শনিবার গ্রেফতার করা হয় কার্শিয়াং পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণ লিম্বুকে। শিলিগুড়ি আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে। ছবি: স্বরূপ সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:১৩
Share: Save:

কবে কোন সরকারি অফিস বা বাংলোয় আগুন দেওয়া হবে, কোথায় পেট্রোল বোমা ছোড়া হবে, তা মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারাই স্থির করতেন বলে আদালতে দাবি করল পুলিশ। কিছু ক্ষেত্রে দলের শীর্ষ স্তর থেকে ফোনে নির্দেশও আসত বলে দাবি। পাহাড় জুড়ে জুন থেকে একের পর এক হামলা, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগেই মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। তিন জনকেই এ দিন শিলিগুড়ি আদালতে তোলার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: মোর্চার রাশ নিতে যুদ্ধ বিমল, বিনয়ের

পুলিশের দাবি, এই তিন জন এবং এর আগে যাদের পাহাড়ে নাশকতার নানা অভিযোগে ধরা হয়েছে, তাদের জেরা করে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারাই রাজ্য প্রশাসনের উপরে আক্রমণের ছক তৈরি করেছেন। ইউএপিএ ধারায় অভিযুক্ত বিমল গুরুঙ্গ কোথায় রয়েছেন, কার মাধ্যমে বার্তা পাঠাচ্ছেন তার হদিশ পেতেই ঘনিষ্ঠ তিন নেতাকে আদালতে হেফাজতে চেয়েছিল পুলিশ। হেমন্ত গৌতম, দাওয়া লামা এবং শঙ্কর অধিকারী এই তিন জনকে সেবক লাগোয়া এলাকা থেকে শুক্রবার ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শনিবার কার্শিয়াং পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণা লিম্বুকেও ধরেছে পুলিশ। তাঁকেও শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হয়। আদালত তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।

ধৃত: শিলিগুড়ি কোর্টে মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দাওয়া লামা এবং হেমন্ত গৌতম। শনিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

শুক্রবার থেকে পাহাড়ের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুলিশ মোর্চার ১৬ জন নেতা-কর্মীকে ধরেছে। ধৃতদের মধ্যে ৬ জনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়ে বাকিদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে শিলিগুড়ির অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত।

ওই দিন সিকিমের নামচিতে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক চলছিল বলে মোর্চা সূত্রের খবর। সেই বৈঠকে হানা দেয় রাজ্য পুলিশের দল। বৈঠক ভেস্তে যায়। গুরুঙ্গ পালিয়ে গেলেও কেন্দ্রীয় কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্যকে ধরে ফেলে পুলিশ। যদিও তাঁদের সবাইকে এ রাজ্যে নিয়ে আসতে পারেনি অভিযানকারী দলটি। কয়েকজনকে আটকে দেয় সিকিম পুলিশ। তাঁদের এ দিন নামচি আদালতে পেশ করলে সকলেই জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ধৃত কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সহ অন্য মোর্চা নেতা-কর্মীদের এ দিন শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হয়। আদালতে অবশ্য পুলিশ জানিয়েছে, সকলকেই সেবক লাগোয়া এলাকা থেকে ধরা হয়েছে।

শঙ্কর অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।

ধৃতদের দাবি, তাঁদের সিকিম থেকেই ধরে আনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হেমন্ত গৌতমের দাবি, ‘‘আমরা বৈঠকে যোগ দিতে নামচি গিয়েছিলাম। সেখান থেকেই ধরা হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে সব অভিযোগই মিথ্যা।’’ কমিটির আর এক সদস্য শঙ্করবাবুর দাবি, ‘‘গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও পুলিশের হাতে ধরা পড়তে হল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE