পায়ে-পায়ে: সুষ্ঠু পঞ্চায়েত ভোটের দাবিতে বামফ্রন্টের মিছিল। সোমবার বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়াম থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত। ছবি: রণজিৎ নন্দী
মনোনয়ন জমা দিতে বাধা পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বিরোধীরা। একই সঙ্গে রাস্তায় নেমে সুষ্ঠু পঞ্চায়েত নির্বাচনের দাবিতে চাপ বজায় রাখছে তারা।
সুষ্ঠু ও অবাধ ভোটের দাবিতে সোমবার বিড়লা তারামণ্ডলের কাছে জওহরলাল নেহরুর মূর্তি থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করেছে বামেরা। মোট ১৭টি বাম দলের ডাকে ওই মিছিলে ভিড় হয়েছিল ভালই। একই দিনে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে অনশন-অবস্থানে বসেছিল কংগ্রেস। সেই মঞ্চ থেকে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব দাবি করেছেন, বাংলার যা পরিস্থিতি, তাতে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ ছাড়া উপায় নেই। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল আসুক রাজ্যে। একই ভাবে ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’র তরফে অশোক গঙ্গোপাধ্যায়, অমল মুখোপাধ্যায়, পবিত্র সরকার, চঞ্চল চক্রবর্তীরা এ দিন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে গিয়ে দাবি করেছেন, এই সরকারে ক্ষমতায় রেখে কোনও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। মনোনয়ন থেকে গণনা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলে তবেই পঞ্চায়েতে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে বেরোনোর সাহস পেতে পারেন।
বামেদের মিছিল শেষে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ফের বলেছেন, তৃণমূলের হামলার মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রতিরোধ চাই। অবস্থান-মঞ্চ থেকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেস সব আসনে প্রার্থী দিতে পারছে না, তাই আমরা অনশন বা অবস্থান করছি— বিষয়টা এই রকম নয়। বাংলার গণতান্ত্রিক পরিবেশই ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন ঘিরে যে হিংসার তাণ্ডব চলেছে, তার জন্য অপরাধী কাউকে করতে হলে তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রীই!’’ বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী, আখরুজ্জামান, ফিরোজা বেগম, মিল্টন রশিদ, কমলেশ চট্টোপাধ্যায়, আইনজীবী-নেতা ঋজু ঘোষালেরা ছিলেন অবস্থানে।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্রই নেই, দাবি পথে-ধর্নায়-রাজভবনে
রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অশোকবাবু বলেন, ‘‘এই সরকার থাকলে কোনও স্থানীয় নির্বাচনই সুষ্ঠু ভাবে হয় না, গত কয়েক বছরে বার বার তা প্রমাণিত। মনোনয়ন থেকে গণনা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী রেখে ভোট করার দাবি জানিয়েছি আমরা।’’ রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে ভোট নয়, এই যুক্তি দিয়ে তাঁরা কি ৩৫৬ ধারা চাইছেন? ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’র চঞ্চলবাবুর বক্তব্য, ‘‘না। কিন্তু ৩৫৫ ধারা প্রয়োগে কোনও বাধা নেই।’’ সংবিধান মোতাবেক কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা সমান বলেও দাবি করেছেন অশোকবাবুরা।
বিজেপি ঠিক করেছে, আদালতের রায়ে সুরাহা না মিললে সন্ত্রাসের জেরে যে সব প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি এবং নিগৃহীত হয়েছেন, তাঁদের কয়েক জনকে নিয়ে দিল্লিতে ধর্না হবে। সেখানে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ তাঁদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে দরবার করতে যাবেন। বিজেপি-র সর্বভারতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশের সঙ্গে দলের রাজ্য নেতৃত্বের এ দিনের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy