প্রতীকী ছবি।
গ্রামবাংলার দখল এখন তৃণমূলের হাতে। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন-পর্বে এ বার তা আরও স্পষ্ট। সেই পর্বের আগেই করে ফেলা জনমত সমীক্ষাও তৃণমূলের সাফল্য অব্যাহত থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে একই সঙ্গে বিজেপির উত্থানের সুস্পষ্ট আভাস মিলছে সমীক্ষায়।
এবিপি আনন্দ-সি ভোটার জনমত সমীক্ষা বলছে, পাঁচ বছর আগে জেলা পরিষদে তৃণমূলের জেতা ৫৩১ আসন এ বার বেড়ে হতে পারে ৫৩২। আর বিজেপি সেখানে শূন্য থেকে পৌঁছতে পারে ১৪৪-এ! তবে ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে তৃণমূলের লোকসান এবং বিজেপির লাভ দেখাচ্ছে সমীক্ষা। তৃণমূলের গত বার পাওয়া ৪৪% ভোট এ বার কমে হতে পারে ৩৫%। সেখানে বিজেপি গত বারের ৩% থেকে এ বার পৌঁছতে পারে ২৪%-এ। অর্থাৎ বিজেপির বৃদ্ধির ইঙ্গিত ২১%!
তবে লক্ষ্যণীয় ভাবে জনমত সমীক্ষায় আভাস রয়েছে ‘অন্যান্য’দের প্রাপ্ত ভোট গত বারের ১% থেকে বেড়ে ২০% হয়ে যেতে পারে! যার অর্থ, স্বীকৃত প্রতীক ছাড়া নির্দল প্রার্থীদের ভোট বাড়তে পারে বিরাট পরিমাণে। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, ওই ‘অন্যান্য’ আসলে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল। প্রায় প্রতি জেলাতেই এ বার অন্তর্দ্বন্দ্বের কাঁটায় বিদ্ধ শাসক দল। বহু জেলাতেই পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরে মোট আসনের চেয়ে বেশি সংখ্যায় তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন জমা পড়েছে। যাঁরা শেষ পর্যন্ত সরে দাঁড়াবেন না, সেই বিক্ষুব্ধ প্রার্থীরাই অনেকটা ভোট কেটে নেবেন— জনমত সমীক্ষায় এমনই ইঙ্গিত রয়েছে বলে রাজনৈতিক শিবিরের অনুমান।
এই ধরনের জনমত সমীক্ষা অবশ্য সব সময় বাস্তবে অবিকল মেলে না। তবে সার্বিক ভাবে ভোটারদের মনের হদিশ দিতে জনমত সমীক্ষার গ্রহণযোগ্যতা আছে। এবিপি আনন্দ-সি ভোটারের সমীক্ষার ক্ষেত্রে শাসক ও বিরোধী শিবির, দু’পক্ষই অবশ্য একমত নয়। শাসক দলের দাবি, রাজ্য সরকারের উন্নয়নের কাজের সুবাদে তারা আরও ভাল ফল করবে এবং বিজেপির এত বাড়বাড়ন্ত বাস্তবে হবে না। আর বিরোধীদের দাবি, গ্রামবাংলায় ভোটের নামে প্রহসন হবে! মনোনয়নেই তার ইঙ্গিত স্পষ্ট। এর পরে পঞ্চায়েতে তৃণমূল মাত্র ৩৫% ভোট পাবে— এই পূর্বাভাস বাস্তবসম্মত নয় বলে বিরোধীদের দাবি। প্রসঙ্গত, রাজ্যে সাম্প্রতিক সব উপনির্বাচনের প্রবণতা মেনেই পঞ্চায়েত ভোটেও বামেরা ৩৯% থেকে কমে ১৪% এবং কংগ্রেস ১৩% থেকে কমে ৮% হয়ে যেতে পারে বলে সমীক্ষায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: নৈরাজ্যের রাজ্য, সমস্বর বিরোধীদের
সমীক্ষায় প্রশ্নের জবাবে ৬৪% উত্তরদাতা জানিয়েছেন, কন্যাশ্রী, সবুজসাথীর মতো সরকারি প্রকল্পের সুবিধা দলমত নির্বিশেষে সবাই পাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল সরকারের ভাবমূর্তি দেখেই পঞ্চায়েতে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছেন ২৯% মানুষ। আবার দলবদল করিয়ে জেলা পরিষদ বা পঞ্চায়েত দখল করা সমর্থন করছেন না ৬৬%। বিজেপির উত্থান পরোক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাহায্য করছে বলে মনে করছেন ৪৩% উত্তরদাতা, সাহায্য করছে না বলছেন ৪৬%। তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণের অভিযোগ সমর্থন করছেন ৫৯% উত্তরদাতাই। আর রামনবমী-হনুমান জয়ন্তীর মিছিলে বিজেপি লাভবান হবে বলে মনে করছেন ৪৫%।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy