দিলীপ ঘোষ
দার্জিলিঙে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং তাঁর দলীয় সহকর্মীদের উপর আক্রমণের তীব্র নিন্দা করল বিরোধী দলগুলি। তার জেরে অস্বস্তিতে শাসক দল তথা রাজ্য সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করছিলেন, পাহাড় স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে। নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলাও। বৃহস্পতিবারের ঘটনার পরে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে, পাহাড় স্বাভাবিক হল কোথায়? প্রশ্ন উঠেছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও।
বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জঙ্গলরাজ চলছে। দিলীপ ঘোষের উপর আক্রমণের পিছনে আসলে রয়েছে তৃণমূল। শাসক দল এবং তার নেত্রীকে আমরা এই হামলার প্রতিক্রিয়া বুঝিয়ে দেব।’’ হামলার খবর পেয়েই দিলীপবাবুকে ফোন করেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদে নামার নির্দেশও দেন। এর পরেই বিজেপির রাজ্য দফতর থেকে একটি মিছিল বেরিয়ে যোগাযোগ ভবন পর্যন্ত যায়। পরে রাজ্য দফতর লাগোয়া চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ানো হয়। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, জয় বন্দ্যোপাধ্যায়, যুব মোর্চা সভাপতি দেবজিৎ সরকার প্রমুখ তাতে যোগ দেন। ব্যারাকপুরে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে, বারাসতের ডাকবাংলো মোড়, বালুরঘাটের হিলি মোড়ে পথ অবরোধ করেন বিজেপি কর্মীরা। আজ, শুক্রবার রাজ্যের সর্বত্র বিক্ষোভ-অবরোধ করবে বিজেপির ওবিসি মোর্চা।
আরও পড়ুন: পাহাড়ে আক্রান্ত দিলীপ, মার খেলেন সঙ্গীরাও
কংগ্রেস এবং সিপিএমও দিলীপবাবুদের উপর হামলার নিন্দা করে তৃণমূলের দিকেই আঙুল তুলেছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর মন্তব্য, ‘‘আমরা বিজেপির রাজনীতির বিরুদ্ধে। কিন্তু কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা কোথাও গেলে তাঁর উপর হামলা করতে হবে, এটা কোনও রাজনীতি নয়। আমার মনে হয়, এই হামলার নেপথ্যে তৃণমূল আছে।’’ সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিজেপির সঙ্গে রাজনৈতিক লড়াই আমাদেরও হচ্ছে। কিন্তু হামলা সমর্থন করি না। তৃণমূল গোটা পরিস্থিতি ঘোরালো করে তুলতে চাইছে।’’
তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এ দিনের ঘটনার দায় দিলীপবাবুদের উপরেই চাপানোর চেষ্টা করছেন। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন সহিষ্ণুতার সঙ্গে পাহাড়ে শান্তি ফেরাচ্ছেন। পাহাড়ের মানুষ বুঝতে পারছেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের কতটা ভালবাসেন। এই সময়ে কেন্দ্রীয় বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে রাজ্যের বিজেপি নেতারা পাহাড়ে গিয়ে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘মন্ত্রিসভার বৈঠক বিমল গুরুঙ্গের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পরেও কিন্তু আমরা দায়িত্বশীলতার কথা মাথায় রেখেছিলাম। কিন্তু গোলমাল পাকানোর জন্যই দিলীপবাবুরা পাহাড়ে গিয়েছিলেন।’’
পুলিশ না-থাকা নিয়ে দিলীপবাবুর অভিযোগের জবাবে পার্থবাবু বলেন, ‘‘উনি কেন নিরাপত্তা না নিয়ে পাহাড়ে গেলেন? দিলীপবাবু কেন তাঁর সঙ্গে সমাজবিরোধীদের নিয়ে গেলেন?’’ যা শুনে দিলীপবাবু পাল্টা বলেন, ‘‘নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব তো রাজ্য সরকারের। আর আমার সঙ্গে সমাজবিরোধী থাকলে পুলিশ কেন তাদের গ্রেফতার করছে না?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy