Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শান্তি পাকা হলেই উন্নয়ন

আপনারা শান্তি দিন, আমরা উন্নয়ন দেব— পাহাড়ের প্রথম বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে এই বার্তাই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

পাশে: দার্জিলিঙের বাণিজ্য সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিনয় তামাঙ্গ। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

পাশে: দার্জিলিঙের বাণিজ্য সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিনয় তামাঙ্গ। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

কিশোর সাহা
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৮ ০৪:২৪
Share: Save:

আপনারা শান্তি দিন, আমরা উন্নয়ন দেব— পাহাড়ের প্রথম বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে এই বার্তাই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিমল গুরুঙ্গের নেতৃত্বে টানা ১০৪ দিনের বন্‌ধ আর রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পরে শান্তি ফিরেছে। সেই আন্দোলনে ক্ষতি হয়েছে হাজার কোটি টাকা। আন্দোলন শেষ হয়ে পাহাড় স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে, তা-ও অনেক দিন হয়ে গেল। তবু, এখনও ভরসা করে পর্যটকেরা বেড়াতে যেতে পারছেন না। শিল্পোদ্যোগীরা নামতে পারছেন না বড় বিনিয়োগে। এ দিন বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে প্রায় সকলেই এ কথা জানিয়েছেন। স্থায়ী শান্তির জন্য বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও। এর কিছুক্ষণ আগেই অবশ্য জিটিএ-র চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গ আশ্বাস দিয়েছেন, ‘‘দার্জিলিং-কালিম্পং এখন থেকে ‘নো বন্‌ধ জোন’। পাহাড়ে আর কোনও বন্‌ধ হবে না।’’ জিএনএলএফ সভাপতি মন ঘিসিঙ্গের কথায়, ‘‘দার্জিলিং এখন থেকে শান্তই থাকবে।’’ দার্জিলিঙের বিধায়ক অমর সিংহ রাই বলেন, ‘‘তিক্ত অতীতের কথা মাথা থেকে সরিয়ে এ বার সামনের দিকে তাকানোর সময়।’’

পাহাড়ি নেতৃত্বের এমন কথা বলার কারণ রয়েছে। তার আগে ওই মঞ্চ থেকে একের পর এক ব্যবসায়ী এবং শিল্পোদ্যোগী জানিয়ে গিয়েছেন, কেন তাঁরা দার্জিলিঙে ব্যবসা করতে আসতে ‘সাহস’ পান না। হর্ষ নেওটিয়া, মায়াঙ্ক জালান থেকে চা শিল্প সংস্থার কর্ণধার রুদ্র চট্টোপাধ্যায় বা সিআইআইয়ের ডিজি চন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়— সকলেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে অশান্তির বাতাবরণকে টেনেছেন। মায়াঙ্ক জালান জানান, চার দশক আগে যে দার্জিলিং থেকে তাঁদের সংস্থার চলা শুরু, এখন সেখানে বিনিয়োগ করতে ‘ভরসা’ পান না তাঁরা। হর্ষ জানান, ঘুম ও মকাইবাড়িতে দু’টি প্রকল্পে দেড়শো কোটি টাকা লগ্নি করেছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: রাজ্য-ভারতী সন্ধি? পুলিশে জল্পনা তুঙ্গে

এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলে পাহাড়ের শিল্প পরিবেশ তৈরি করতে হবে। রক্ত ঝরানোর প্রতিযোগিতা নয়, উন্নয়ন নিয়ে লড়াই হোক। আপনারা শান্তি দিন, আমি উন্নয়ন দেব।’’ বলেছেন, ‘‘আপনাদের যা বলার আমাকে বড়দি মনে করে বলুন। অশান্তি করবেন না।’’ একসঙ্গে ব্যবসায়িক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে রাজ্যের তরফে একশো কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

এই বিপুল আয়োজন, সকলের এই বার্তা-পাল্টা বার্তার মাঝে দাঁড়িয়ে দার্জিলিঙের ব্যবসায়ীদের একটাই প্রশ্ন— এত সব কিছুর পরেও কাটবে তো আশঙ্কার মেঘ?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE