Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

গুরুঙ্গদের ধরতে চিঠি

গত সপ্তাহে সিকিম-বাংলা সীমানার মাঝিটাঁড়ে বিমল গুরুঙ্গের নেতৃত্বে মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালায় সিআইডি। সিকিম পুলিশকে আগাম চিঠি দিয়ে তা জানানো হলেও, পরে তারা দাবি করে, তাদের না জানিয়েই অভিযান চালানো হয়েছে।

বিধিভঙ্গের অভিযোগে ধৃত মোর্চা কর্মীরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

বিধিভঙ্গের অভিযোগে ধৃত মোর্চা কর্মীরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

কিশোর সাহা ও কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:০৮
Share: Save:

পাহাড়কে ছন্দে ফেরাতে ফের সিকিমের উপর চাপ বাড়াল নবান্ন। তবে এ বার পশ্চিমবঙ্গ পুলিশকে সব রকম সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছে সিকিম পুলিশ।

সিআইডির দাবি, একাধিক বিস্ফোরণ-সহ নানা মামলায় অভিযুক্ত মোর্চা নেতারা আছেন সিকিমেই। তাঁদের ধরা ও আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার কথা সিকিম পুলিশকে জানানো হয়েছে। সিআইডি-র স্পেশাল সুপার (নর্থ) অজয় প্রসাদ দক্ষিণ সিকিমের পুলিশ সুপারকে বৃহস্পতিবার একটি চিঠি দিয়েছেন। ওই চিঠিতে অভিযুক্তদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে তাঁদের গ্রেফতার করতে বলা হয়েছে।

গত সপ্তাহে সিকিম-বাংলা সীমানার মাঝিটাঁড়ে বিমল গুরুঙ্গের নেতৃত্বে মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালায় সিআইডি। সিকিম পুলিশকে আগাম চিঠি দিয়ে তা জানানো হলেও, পরে তারা দাবি করে, তাদের না জানিয়েই অভিযান চালানো হয়েছে। গ্রেফতারির কোনও নথিও সিআইডি দেখাতে পারেনি বলে দাবি করা হয়। সিআইডির এক কর্তা বলেন, ‘‘সিকিম পুলিশ নানা নথির কথা বলেছিল। তাই এ বার সমস্ত তথ্য পাঠিয়েই অভিযুক্তকে ধরতে বলা হয়েছে। যাঁরা অভিযুক্তদের আশ্রয় দিচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আরও পড়ুন: ব্যাঙ্ক খুলল পাহাড়ে, চলল বাসও

গত ৮ জুন দার্জিলিং রাজভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠক চলাকালীন গোলমাল শুরু হয়। একাধিক গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, পুলিশকে লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা ছোড়া হয়। পরের দিন, সদর থানায় মোর্চা নেতা বিমল গুরুঙ্গ, রোশন গিরি, আশা গুরুঙ্গ, ডিকে প্রধান-সহ ৮ জনের নামে মামলা করে পুলিশ। এর পরে সিংমারি ও পাতলেবাসেও পুলিশ-মোর্চা সংঘর্ষ হয়। গুলিতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। তার পর থেকেই কয়েক জন নেতাকে নিয়ে গুরুঙ্গ গা ঢাকা দেন। সিআইডির আধিকারিকদের দাবি, জো়ড়থাং দিয়ে গুরুঙ্গরা সিকিমে ঢুকেছেন। জোড়থাং, নামচি ও মেল্লি এলাকায় তাঁরা বৈঠক করছেন। পাহাড়বাসীর হাতে অডিও ও ভিডিও টেপ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। সিকিমের অনেকেই এতে সাহায্য করছে। তাঁদের ধরতেই সমস্ত মামলার তালিকা, অভিযুক্তদের প্রত্যেকের ছবি ও গ্রেফতারির পরোয়ানার কপি সিকিমের হাতে দিয়েছে সিআইডি।

সিআইডি কর্তারা জানান, এখনও যৌথ অভিযানের কথা বলা হয়নি। সিকিমকেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে বলা হয়েছে। তারা কী জানায়, তা দেখেই পদক্ষেপ করা হবে। সিকিম পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) এ সুধাকরের অবশ্য দাবি, পাহাড়ের ফেরাররা সিকিমে নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশকে সব সহায়তা করা হবে।

পরিস্থিতি বুঝে মোর্চার কট্টরপন্থীরাও মেপে পা ফেলতে শুরু করেছেন। তাঁরাও যে আলোচনার পথেই, সেটা বোঝাতে পুলিশের সঙ্গে আপাতত কোনও সংঘর্ষে না যাওয়ারই নির্দেশ দিয়েছেন গুরুঙ্গ। ততটাই আক্রমণাত্মক আলোচনাপন্থী বিনয় তামাঙ্গ। তিনি বলেছেন, ‘‘গণতান্ত্রিক পথেই দাবি আদায় করতে হবে।’’ তবে বিনয়ের দাবি, আসন্ন সর্বদলের পরেই তিনি পাহাড়ে আলাদা রাজ্যের দাবিতে আমরণ অনশনে বসবেন।

সহ প্রতিবেদন: প্রতিভা গিরি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE