বাড়ছে বিজেপি, তাই সিপিএমে চোখ মমতার!
ত্রিপুরায় হেরে সিপিএমের এখন বিপর্যস্ত অবস্থা। প্রতিবেশী রাজ্যের গেরুয়া ঝড় এ রাজ্যে কতটা পদ্মের ভোট বাড়াবে, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু এখানে সিপিএম কর্মীদের মনোবল যে মানিক সরকারের হারে তলানিতে চলে গিয়েছে, তা নিয়ে সংশয়ে নেই রাজনৈতিক মহলে। অনেকে মনে করছেন, এমন বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে সিপিএমের ভোটের বড় অংশ ঢলে পড়তে পারে বিজেপির দিকে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই সিপিএম বাঁচানোর অভিযানে নেমেছেন। বিপদের সময়ে সিপিএম কিছু বলার আগেই তাদের করণীয় সম্পর্কে গত কয়েক দিন ধরে বার বার বলে চলেছেন মমতা। তার জেরে বেজায় বিপাকে পড়েছেন সিপিএম নেতৃত্বও।
বৃহস্পতিবার গাঁধীমূর্তির পাদদেশে তৃণমূল মহিলা সংগঠনের সমাবেশে মমতা বলেন, ‘‘সিপিএমের পাঁচটা লোক গ্রেফতার হলে হত! কিন্তু কেন আত্মসমর্পণ করলেন? যত আত্মসমর্পণ করবেন, তত বিলীন হয়ে যাবেন আপনারা।’’
যা শুনে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির মন্তব্য, ‘‘মুখে উনি যাই বলুন, তৃণমূলের কথায় আর কাজের মধ্যে বিস্তর ফারাক। বরং পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল যা করছে, তাতে বিজেপি বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে।’’ তৃণমূলের বিরুদ্ধে সিপিএমের পাল্টা অভিযোগ, ক্ষমতায় আসার পর থেকে সিপিএমের ঘর ভাঙিয়েছে তৃণমূল। মিথ্যে মামলা দিয়েছে। আক্রমণ করেছে।
যদিও মমতা মনে করেন সে সব অতীতের ঘটনা। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সিপিএম তাঁদের ভূমিকা ঠিক মতো পালন করতে পারছে না। সেই কারণে ত্রিপুরার ফল প্রকাশের আগেই মমতা বিধানসভায় সিপিএমের উদ্দেশে মন্তব্য করেছিলেন,‘‘আপনারা জিতলে খুশি হতাম।’’ তৃণমূল সূত্র জানাচ্ছে, পরের পর ভোটে দেখা যাচ্ছে সিপিএমের ভোট বিজেপির বাক্সে চলে যাচ্ছে। ত্রিপুরার ফলের পর সেই প্রবণতা আরএও তীব্র হবে। ফলে এখনই তৃণমূল কাস্তেতে শান না দিলে তা তাদেরই ঘাড়ে চেপে বসতে পারে বলে মনে করছেন জোড়াফুলের একাংশ। সেই কারণেই সিপিএম কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে চান মুখ্যমন্ত্রী।
সিপিএম অবশ্য এর মধ্যে রাজনৈতিক চাল দেখছে। দলের অনেকের মতে, ভোটে হারের পর দলীয় নেতাদের যে কথা বলা উচিৎ ছিল, তা মুখ্যমন্ত্রী বলে দিচ্ছেন। ফলে ভবিষ্যতে বাম ভোটারদের একাংশ জোড়াফুলপন্থী হয়ে যেতে পারেন। সেই কারণেই মমতার কৌশল নিয়ে ইতিমধ্যেই কর্মীদের বোঝানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে সিপিএম সূত্রের খবর। আর এই অবস্থা দেখে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য,‘‘ এ তো দেখছি ঘোর কলি। কাস্তে-হাতুড়ি, জোড়াফুলেও এখন কোলাকুলি!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy