Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দামোদর থেকে দেহ উদ্ধারে ঠেলাঠেলি তিন থানার

পুলিশে ছুঁলে নাকি আঠারো ঘা! আর না ছুঁলে যে কী হয়, মঙ্গলবার দিনভর দামোদরের ঘাটে আত্মঘাতী মেয়ের মৃতদেহের পিছনে ছুটতে ছুটতে মালুম হল তাঁর।

প্রিয়া বিশ্বাস

প্রিয়া বিশ্বাস

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৬ ০৩:০৯
Share: Save:

পুলিশে ছুঁলে নাকি আঠারো ঘা! আর না ছুঁলে যে কী হয়, মঙ্গলবার দিনভর দামোদরের ঘাটে আত্মঘাতী মেয়ের মৃতদেহের পিছনে ছুটতে ছুটতে মালুম হল তাঁর।

দেহ উদ্ধার করবে কে? চলল থানায় থানায় চাপান-উতোর। কোনও থানার পুলিশই এল না। মেয়ের দেহ উদ্ধার করলেন তরুণবাবু নিজেই। কিন্তু ময়না-তদন্তে হবে কী করে? সেখানেও বিস্তর হ্যাপা। সব শেষে বুধবার ময়না-তদন্তের পরে ক্লান্ত তরুণবাবু বলেই ফেললেন, ‘‘শ্বশুরবাড়ির অত্যাচারে মেয়েটা নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিল। আর পুলিশের জন্য মেয়েটা মরেও শান্তি পেল না।’’

বছর দেড়েক আগে উলুবেড়িয়ার খলিসানির বাসিন্দা তরুণবাবু আমতার খড়িয়পের বাসিন্দা রাজেশ বিশ্বাসের সঙ্গে মেয়ে প্রিয়ার বিয়ে দেন। তরুণবাবুর অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই বাড়তি পণের দাবিতে শ্বশুরবাড়িতে প্রিয়ার উপরে অত্যাচার শুরু হয়। গত রবিবার বছর কুড়ির প্রিয়া আমতার বেতাইয়ে গিয়ে ভারতচন্দ্র সেতু থেকে দামোদরে ঝাঁপ দেন। তরুণবাবু মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ রাজেশ ও তার বাবা-মাকে গ্রেফতার করে।

তবু শান্তি পাননি তরুণবাবু। কারণ, মেয়ের দেহ মেলেনি। আমতা থানার ভরসায় না থেকে তরুণবাবু নিজেই লোকজন জুটিয়ে নৌকা নিয়ে দামোদরে তল্লাশি শুরু করেন। মঙ্গলবার সকালে বাগনানের খাদিনান ঘাটে প্রিয়ার দেহ মেলে। খবর পেয়ে তরুণবাবুরা আমতা থানায় জানান। খবর যায় বাগনান থানায়। কিন্তু বাগনান থানার পুলিশ যখন ঘাটে পৌঁছয়, তখন দেহটি স্রোতে ভেসে গিয়েছে। তরুণবাবুরাও নৌকায় সেখানে পৌঁছে দেহ দেখতে পাননি।

এর পরে উলুবেড়িয়ার বাঁশবেড়িয়া ঘাটের কাছে দেহটির সন্ধান মেলে। কিন্তু জায়গাটি বাগনান থানার অধীন, এই দাবি করে উলুবেড়িয়া থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে চায়নি বলে তরুণবাবুদের অভিযোগ। আমতা থানার সঙ্গে কথা বলে তরুণবাবুরাই দেহটি তুলে ময়না-তদন্তের জন্য উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেও হ্যাপা।

কিন্তু কেন পুলিশ দেহ উদ্ধার করল না? তিনটি থানাই দায়িত্ব নিতে রাজি হয়নি বলে অভিযোগ। আমতা থানার দাবি, খবর পাওয়া মাত্র বাগনান থানাকে জানানো হয়েছিল। বাগনান থানার দাবি, খাদিনানে দেহ মেলেনি। উলুবেড়িয়া থানার দাবি, বাঁশবেড়িয়া ঘাট বাগনান থানা এলাকায়। বাগনান থানা সে কথা অস্বীকার করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Damodar river
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE