সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যসভায় সীতারাম ইয়েচুরিকে ফের প্রার্থী করা নিয়ে সদ্যই তুলকালাম হয়েছে সিপিএমে। তার রেশ কাটার আগেই এ বার ইয়েচুরির উপস্থিতিতেই রাজ্য সিপিএমে বিতণ্ডা বাধল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে শাস্তি দেওয়া নিয়ে! শেষ পর্যন্ত তরুণ সাংসদকে রাজ্য কমিটি থেকে অপসারণের সুপারিশ কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হল অনুমোদনের জন্য। তার আগে কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হল না।
ব্যক্তিগত জীবন, আর্থিক বিষয় ও সংবাদমাধ্যমে খবর ফাঁস সংক্রান্ত কিছু অভিযোগে ঋতব্রতের বিরুদ্ধে তিন সদস্যের তদন্ত কমিশন গড়ে তাঁকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করেছিল আলিমুদ্দিন। কমিশন চার্জশিট দেওয়ার পরে অভিযুক্ত সাংসদ তার লিখিত জবাবও দিয়েছেন। এর পরে দল কী সিদ্ধান্ত নেবে, তা-ই ছিল এ বারের রাজ্য কমিটির অন্যতম বিবেচ্য। কিন্তু দলীয় সূত্রের খবর, ঋতব্রতকে সরাসরি বহিষ্কার করা হবে নাকি তাঁর অল্প বয়সের দৌলতে তাঁকে আরও সুযোগ দেওয়া হবে, এই প্রশ্নে তীব্র বিরোধ বাধে রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যেই। সোমবার রাতে এবং মঙ্গলবার রাজ্য কমিটির শেষ দিনে দু’দফার বৈঠকে আড়াআড়ি ভাগ হয়ে যায় রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী। শেষমেশ ঠিক হয়, ঋতব্রতকে রাজ্য কমিটি থেকে সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করা হবে। তবে তিনি সাংসদ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হিসাবে কাজ করে যাবেন।
আরও পড়ুূন: পাহাড়: ফের ডাক কথায়
কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে দলীয় সুপারিশের কথা এ দিন দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র রাজ্য কমিটিতে পেশ করতেই শুরু হয় হইচই। সিপিএম সূত্রের খবর, তড়িৎ তোপদার, পলাশ দাস, নেপালদেব ভট্টাচার্য, রাহুল ঘোষের মতো দুই ২৪ পরগনার নেতারা বলতে থাকেন, একপেশে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আগেই সাসপেন্ড করে আবার কেন শাস্তি? সব চেয়ে মুখর ছিলেন এসএফআইয়ের রাজ্য সভানেত্রী মধুজা সেনরায়। কমিউনিস্ট পার্টিতে যে বিশৃঙ্খলার জায়গা নেই, এই বলে তাঁদের নিরস্ত করেন বিমান বসুরা।
বৈঠকের পরে সূর্যবাবু বলেন, ‘‘ঋতব্রত বয়সে তরুণ, দলে অবদানও আছে। সংসদে তিনি ভূমিকা পালন করছেন। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি তাঁকে দেওয়া যায় না। কিন্তু কমিশন যা রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে শাস্তি পেতেই হবে। কী শাস্তি হবে, ত্রুটি সংশোধনে তাঁর কী করণীয়, সে সব কেন্দ্রীয় কমিটি চূড়ান্ত হবে।’’ তাঁরা কি রাজ্য কমিটি থেকে অপসারণের সুপারিশ করেছেন? সূর্যবাবুর জবাব, ‘‘এই নিয়ে কিছু বলার এক্তিয়ার আমার নেই। সুপারিশ দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়, সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় কমিটি।’’ আর কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের মতে, ‘‘ঋতব্রত আরও দু’মাস ঝুলে থাকলেন! কেন্দ্রীয় কমিটির পরের বৈঠক তো এখনই হচ্ছে না!’’ এই অবস্থায় বাইরে মুখ খোলেননি কাঠগড়ায় থাকা সাংসদও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy