পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিবহণ চুক্তি বাতিল করে দেওয়ায় চাপে পড়েছিল সিকিম। দিল্লিতে নানা স্তরে দরবার করেও বিশেষ সাড়া মেলেনি। বরং রাজধানী থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়, পড়শির সঙ্গে সমস্যা মেটাতে আলোচনায় বসুন। খোদ সিকিমের শাসকদল সিকিম ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট বা এসডিএফ সূত্রেই এ কথা বলা হচ্ছে। সেই সূত্র আরও জানিয়েছে, দিল্লির এক শীর্ষ স্তর থেকে এই বার্তা পাওয়ার পরেই পশ্চিমবঙ্গকে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানায় সিকিম।
এসডিএফের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা জানান, দার্জিলিঙে নানা সময়ে আন্দোলনের জেরে দুই রাজ্যেরই ক্ষতি হচ্ছে। তা নিয়ে দু’রাজ্যের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝিও তৈরি হয়েছে বলে তিনি একান্তে স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, দুই প্রতিবেশী রাজ্যে ভিন্ন মতাদর্শের শাসক থাকলেও সুসম্পর্ক রাখতে বৈঠক হতে কোনও বাধা নেই। তিনি এটাও জানান, দুই প্রতিবেশী রাজ্যের মধ্যে দূরত্ব থাকলে তা আলোচনার মাধ্যমে আপসে মেটানো উচিত বলে মনে করেন দিল্লির শীর্ষ স্তরের অনেকেই।
এর আগে বাম আমলে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছিল সিকিমের শাসকদল। এ বার সরকারি ভাবে এই প্রস্তাব পাশ করানোর পরে তার সংবিধানগত যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে পশ্চিমবঙ্গ। তার পরে অভিযোগ ওঠে, বিমল গুরুঙ্গকে বাঁচাতে, তাঁকে আশ্রয় দিতে অগ্রণী সিকিম। বাণিজ্যিক গাড়ি যাতায়াত নিয়ে দু’রাজ্যের মধ্যে সমস্যা তো ছিলই। পুরনো পরিবহণ চুক্তি অনুযায়ী, সিকিমের বাণিজ্যিক গাড়ি পশ্চিমবঙ্গের যে কোনও জায়গায় অবাধে যাতায়াত করতে পারবে। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গের বাণিজ্যিক গাড়িগুলিকে সিকিমে ঢুকে যাত্রীদের নির্ধারিত স্ট্যান্ডে নামিয়ে চলে আসতে হবে।
সম্প্রতি সেই পরিবহণ চুক্তি বাতিল করে পশ্চিমবঙ্গ। ফলে এখন থেকে সিকিমের বাণিজ্যিক গাড়িগুলিকে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে যাত্রী ওঠানামা করাতে গেলে এ রাজ্যের পারমিট নিতে হবে। যা সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ। এতেই পর্যটন নির্ভর সিকিম আসন্ন মরসুমে ক্ষতির আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন। সে রাজ্যের পর্যটন ব্যবসায়ীদের সংগঠনের এক কর্তা জানান, দিল্লিকে জানালে তাঁরা পড়শির সঙ্গে আলোচনা করে সব মিটিয়ে নিতে বলেন।
সিকিমের অবস্থানগত গুরুত্বের কথা বিচার করে দিল্লি এই ধরনের ঝামেলা দ্রুত মিটিয়ে ফেলার পক্ষপাতী। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় তারা দুই রাজ্যের বিষয়ে নাক গলাতে পারে না। তাই পবন চামলিং প্রশাসনকে বলা হয়, নিজেরাই কথা বলে গোলমাল মিটিয়ে নিন। এর পরেই গ্যাংটক থেকে নবান্নে আসে শান্তি আলোচনার বার্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy