প্রতীকী ছবি।
মাঝে ক’টা দিন প্রকোপ একটু কমেছিল। ফের ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। গত চারদিনে নতুন করে ৩৭ জন মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে শুধুমাত্র গত বৃহস্পতিবারই জেলায় নতুন করে ৬ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর। গত কয়েকদিনে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা যে বেড়েছে তা মানছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা। তিনি বলেন, “নতুন করে কয়েকজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এতে উদ্বেগের কিছু নেই। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে।” জেলার অন্য এক স্বাস্থ্যকর্তার সংযোজন, “নতুন করে কেউ ডেঙ্গিতে মারা যাননি।”
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, গত সোমবার পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৬২। আর শনিবার সেই সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ৩৯৯। গত বৃহস্পতিবার যে ৬ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে, তার মধ্যে ৩ জনই খড়্গপুর শহরের বাসিন্দা। বাকি তিনজন যথাক্রমে কেশিয়াড়ি, শালবনি ও খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দা। তা ছাড়া, বিভিন্ন এলাকায় জ্বর আক্রান্তেরও হদিস মিলছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, দাসপুর-১ ব্লকের সিমুলিয়া, বলরামপুর, দাসপুর ২-এর রানিচক, মেদিনীপুর গ্রামীণের রামনগর, কেশিয়াড়ির ধলবেলুন, সবংয়ের মকরামচক, খড়্গপুর-১ ব্লকের হরিয়াতাড়া, খড়্গপুর ২-এর উত্তর সিমলার মতো এলাকায় বেশ কয়েকজন জ্বরে ভুগছেন। খড়্গপুর শহরের সুভাষপল্লি, ভবানীপুর, পাঁচবেড়িয়া, ইন্দা, নিমপুরা, খরিদা এলাকাতেও অনেকে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। জ্বরের কথা মানছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরও। পশ্চিম মেদিনীপুরের উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা জেলায় পতঙ্গবাহিত রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধানের কথায়, “যে সব এলাকা থেকে জ্বরের খবর আসছে, সেখানে মেডিক্যাল টিম যাচ্ছে। জ্বরে আক্রান্তদের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে পদক্ষেপ করা হবে।”
জেলায় এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯৯। খড়্গপুরেই রোগের প্রকোপ সব থেকে বেশি। কিন্তু নতুন করে কেন ছড়াচ্ছে ডেঙ্গি? জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার জবাব, “সপ্তাহ কয়েক আগে টানা কয়েকদিন বৃষ্টি হয়েছে। সেই জল বিভিন্ন এলাকায় জমে রয়েছে। আর জমা জলেই বিপদ বাড়ছে। বংশবৃদ্ধি করছে ডেঙ্গির মশা।” পরিস্থিতি দেখে জমে থাকা জল ও আবর্জনা দ্রুত পরিষ্কারের জন্য সব পঞ্চায়েত এবং পুরসভার কাছে আর্জি জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “ডেঙ্গির মশা ছোট প্লাস্টিকের কাপেই জন্মাতে পারে, শহর এবং গ্রামে জঞ্জালের যা ভুরি ভুরি দেখা যায়। ডেঙ্গি থেকে বাঁচতে জঞ্জাল আর জমা জল তাই দ্রুত পরিষ্কার করতে হবে।” পাশাপাশি তাঁর আশ্বাস, মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কর্মসূচির উপরও জোর দেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy