Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

কুয়াশায় স্তব্ধ ট্রেন, পেটে টান যাত্রীদের

টান পড়ছে পেটেও। বিভিন্ন ট্রেনে খাবার পেতে সমস্যা হচ্ছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ। কুয়াশায় হাওড়া ও শিয়ালদহ এবং উত্তর ভারতের মধ্যে বেশির ভাগ ট্রেনই ১০

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:৩১
Share: Save:

দিল্লি-সহ উত্তর ভারতে কুয়াশা-রাজের শেষ দেখা যাচ্ছে না। তার দাপটে ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত। এবং সেই সব ট্রেনের দীর্ঘ ক্ষণ আটকে থাকার ঝক্কিতেই যাত্রীদের যন্ত্রণা শেষ হচ্ছে না। টান পড়ছে পেটেও। বিভিন্ন ট্রেনে খাবার পেতে সমস্যা হচ্ছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ।

কুয়াশায় হাওড়া ও শিয়ালদহ এবং উত্তর ভারতের মধ্যে বেশির ভাগ ট্রেনই ১০-১২ ঘণ্টা দেরিতে চলাচল করছে। কয়েক দিন ধরে দেরির তালিকায় রাজধানী, দুরন্ত, শতাব্দী এক্সপ্রেস ছাড়াও রয়েছে দূরপাল্লার অন্য অনেক মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন।

কয়েক বছর ধরে শীতকালে প্রচণ্ড কুয়াশা হওয়ায় ট্রেন লেটের মাত্রা কমাতে আগে থেকেই অনেক ট্রেন বাতিল করে দিত রেল বোর্ড। কিন্তু আয় কমে যাওয়ায় এ বছর কম ট্রেন বাতিল করা হচ্ছে। তাতেই বিপত্তি ঘটছে বলে রেলের একাংশের অভিমত। কুয়াশায় একই লাইনে পরপর দাঁড়িয়ে যাচ্ছে ট্রেন। কুয়াশা কাটিয়ে জট ছাড়তে ছাড়তেই আটকে পড়া বিভিন্ন ট্রেনের দেরির মেয়াদ বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা।

সব থেকে অসুবিধায় পড়ছেন দিল্লি থেকে হাওড়া ও শিয়ালদহমুখী যাত্রীরা। তাঁদের বক্তব্য, নয়াদিল্লি স্টেশনেই ৬-৭ ঘণ্টা দেরিতে ট্রেন ছাড়ছে। তার পরে ট্রেনে উঠে ঠিকমতো খাবার মিলছে না। নয়াদিল্লি থেকে হাওড়া রাজধানী এক্সপ্রেস ছাড়ার কথা বিকেল ৪টে ৫০ মিনিটে। সেই রাজধানী দিল্লি থেকেই ছেড়েছে রায় ১১টার পরে। রাজধানী, শতাব্দীর মতো ট্রেনে যে-সংস্থা খাবার সরবরাহ করে, সেই রেলওয়ে কেটারিং ও ট্যুরিজম কর্পোরেশনও স্বীকার করছে, খাবারের অভাবে যাত্রীদের কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে। ওই সংস্থার কর্তারা জানান, এখন ট্রেনে রান্নার কোনও ব্যবস্থা নেই। ওই রুটে কয়েকটি নির্দিষ্ট স্টেশন থেকে রান্না করা খাবার নিয়ে যাত্রীদের দেওয়া হয়। কিন্তু গাঢ় কুয়াশায় কোন ট্রেন কখন কোথায় পৌঁছবে, সেটা আগাম জানতে না-পারায় সময়মতো যথেষ্ট খাবার তোলা যাচ্ছে না। ফলে খানিকটা ভুগতে হচ্ছে যাত্রীদের। তবে শুকনো খাবার দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।

শীতকালে কুয়াশা তো হতেই পারে। তার মোকাবিলায় রেল এ ভাবে লেজেগোবরে হবে কেন?

রেল সূত্রের খবর, গত ৬০-৭০ বছরে যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে ৫২৪ শতাংশ। কিন্তু রেললাইনের বৃদ্ধি মাত্র ২৩ শতাংশ। ফলে কুয়াশায় একের পর এক ট্রেন লাইনের উপরে দাঁড়িয়ে পড়লে ‘ট্রেনের জট পাকিয়ে যাচ্ছে। কুয়াশা কেটে গেলেও পরিকাঠামোর অভাবে দ্রুত ট্রেন গতিতে চালিয়ে সময়ের ঘাটতি পূরণ করা যাচ্ছে না।

গত কয়েক বছরে কুয়াশার চরিত্র বদলেছে বলে আবহবিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদদের একাংশের অভিমত। তাঁরা জানাচ্ছেন, দিল্লি-সহ উত্তর ভারতের বিভিন্ন শহরে লাগামছাড়া দূষণই কুয়াশার দোসর হয়ে উঠেছে। যে-আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে কুয়াশার মধ্যেও বিমান নামতে পারে, এখনও তা রেলের হাতের বাইরে। তাই কুয়াশা প্রবল হলে ট্রেন থামিয়ে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকছে না বলে জানাচ্ছেন রেলের অনেক কর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE