Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জেলায় আজ কিছু দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জন

জেলাগুলিতে অবশ্য অনলাইন অনুমতি এবং আগাম বিসর্জনের দিন জানিয়ে দেওয়ার রীতি নেই। প্রশাসন সূত্রের খবর, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ইত্যাদি জেলার বেশ কিছু পুজো কমিটি প্রথমে একাদশীর দিন বিসর্জনের কথা ভাবলেও শেষমেশ ওই পরিকল্পনা বাতিল করেছে।

আমার দুর্গা: প্রতিমা বিসর্জনের সময়ে। শনিবার আহিরীটোলা ঘাটে। ছবি: সুমন বল্লভ।

আমার দুর্গা: প্রতিমা বিসর্জনের সময়ে। শনিবার আহিরীটোলা ঘাটে। ছবি: সুমন বল্লভ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৩৭
Share: Save:

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল, প্রশাসন অনুমতি দিলে মহরম তথা একাদশীর দিন দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জন দেওয়া যাবে। কিন্তু কলকাতা ও তার লাগোয়া ৪-৫টি জেলার কোনও পুজো কমিটিই আজ, রবিবার বিসর্জন দেওয়ার জন্য অনুমতি চায়নি। মোটের উপরে সারা রাজ্যের চিত্রও অনেকটা সেই রকমই। শুধু পুরুলিয়া, বর্ধমান, মালদহ, মুর্শিদাবাদ এবং উত্তর দিনাজপুর জেলার কিছু পুজো কমিটি অনুমতি চাওয়ায় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন তাদের ছাড়পত্র দিয়েছে। আবার বাতিলও হয়েছে কিছু পুজো কমিটির আবেদন।

হাইকোর্টের রায়ের পরেই কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার জানান, কলকাতায় একাদশীর দিন বিসর্জন হবে না। কারণ, অনলাইনে পুজোর অনুমতি চাওয়ার সময়েই বিসর্জনের দিন জানিয়ে দিতে হয়। কলকাতার কোনও বারোয়ারিই রবিবার বিসর্জন দেবে বলে জানায়নি।

জেলাগুলিতে অবশ্য অনলাইন অনুমতি এবং আগাম বিসর্জনের দিন জানিয়ে দেওয়ার রীতি নেই। প্রশাসন সূত্রের খবর, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ইত্যাদি জেলার বেশ কিছু পুজো কমিটি প্রথমে একাদশীর দিন বিসর্জনের কথা ভাবলেও শেষমেশ ওই পরিকল্পনা বাতিল করেছে। যেমন, ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ১৫টি পুজো কমিটি একাদশীর দিন বিসর্জনের পরিকল্পনা করলেও কেউই লিখিত আবেদন জানায়নি। নবদ্বীপে একটি মহিলা পরিচালিত পুজো রবিবার বিসর্জন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও শনিবার শেষ মুহূর্তে তারা পরিকল্পনা বাতিল করে।

আরও পড়ুন: মেলার জন্য পিছোন হল মহরমের লাঠিখেলা

পুরুলিয়ায় শনিবার পর্যন্ত কোনও পুজো কমিটি লিখিত ভাবে বিসর্জনের অনুমতি চায়নি। তবে সূত্রে খবর, রবিবার প্রায় ১২টি পুজো কমিটি বিসর্জন দিতে পারে। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে পরামর্শ করে তারা পদক্ষেপ করবে। বর্ধমান ও মালদহে যে সব পুজো কমিটি অনুমতি চেয়েছে, তাদের দিনের আলোর মধ্যে বিসর্জন সেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) জে মার্সি বলেন, ‘‘কিছু ক্লাব রবিবার বিসর্জন দেবে। তাদের দিনের আলোয় বিসর্জন সেরে ফেলতে বলা হয়েছে।’’

একসঙ্গে: সিঁদুর খেলায় মেতেছেন মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য। শনিবার বাগবাজারে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

মালদহেও আজ, রবিবার সূর্যাস্তের মধ্যেই বিসর্জন সেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। অনুমতি পেয়েছে আটটি পুজো কমিটি। দুপুর তিনটের মধ্যেই হয়ে যাবে বিসর্জন-পর্ব। কারণ, বিকেল থেকে ইংরেজবাজারের মীরচক মাঠে লাঠিখেলা শুরু হয়ে যাবে। ওই লাঠিখেলায় শহরের ২২টি কমিটি অংশগ্রহণ করে। সেখান থেকে সন্ধে ছ’টার পর তাজিয়া নিয়ে বের হয় শোভাযাত্রা। ওই সময়ে বিসর্জন প্রক্রিয়া চললে শহরের সমস্ত পথ অবরুদ্ধ হয়ে যাবে বলে দাবি জেলা প্রশাসনের কর্তাদের।

লালগোলায় ১১টি পুজো কমিটি একাদশীর দিন বিসর্জনের অনুমতি চেয়েছিল। পুলিশ বিকেল ৩টের মধ্যে অথবা রাত ৮টার পরে বিসর্জন দিতে বলেছে। বহরমপুরে দেড়শোটি পুজো কমিটির কেউ একাদশীতে বিসর্জনের আবেদন করেনি। তবে শহর লাগোয়া দু’টি পুজো কমিটি আজ বিসর্জন দেবে বলে খবর। এ ছাড়া মুর্শিদাবাদের লালবাগ, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জে একাদশীতে বিসর্জনের অনুমতি চেয়ে কোনও কমিটি আবেদন জানায়নি। উত্তর দিনাজপুরে রায়গঞ্জ, করণদিঘি ও ইসলামপুর, হেমতাবাদ, কালিয়াগঞ্জের আট-দশটি পুজোকে রবিবার বিসর্জনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে জেলার কিছু এলাকার ১৬-১৭টি পুজোকে ওই দিন বিসর্জনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘পরিস্থিতি বিচার করে কয়েকটি এলাকায় পুজোকে সোমবার বিসর্জন দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। তাঁরা সহযোগিতাও করেছেন।’’

এ ছাড়া, উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি শহর-সহ কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দক্ষিণ দিনাজপুর সর্বত্রই একাদশীর দিন প্রায় কোনও পুজো কমিটিই বিসর্জনের অনুমতি চায়নি বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। ওই সব শহরের বেশির ভাগ পুজোরই সোমবার বা মঙ্গলবার বিসর্জন হবে। ফালাকাটায় আবার বেশিরভাগ পুজো কমিটি তাদের রীতি মেনে একাদশীতে বিসর্জন দেবে না। তাদের বিসর্জন হবে সোমবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja Immersion High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE