প্রতিবাদ: সারদা থেকে নারদ কাণ্ড নিয়ে মিছিলে বাম নেতৃত্ব। বুধবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
মিছিলের মাথা পৌঁছে গিয়েছে অনেক ক্ষণ। শিয়ালদহ কোর্টের সামনে ম্যাটাডোর-মঞ্চে নেতাদের বক্তৃতাও সারা। মিছিলের ল্যাজ তখনও মৌলালি থেকে বাঁ দিকে ঘুরতে পারেনি! অগত্যা বিমান বসুর নির্দেশে মঞ্চ থেকে শুধু স্লোগান চালিয়ে যেতে হল মিছিলের শেষাংশ না এসে পৌঁছনো পর্যন্ত!
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হতেই নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও পদত্যাগের দাবিতে শহরে ফের পথে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বামফ্রন্ট। হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর থেকেই লাগাতার নারদ নিয়ে পথে আছে বামেরা। কিন্তু এ বারের ডাক ছিল মহামিছিলের। কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হাওড়া জেলা থেকে আসা কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ে ঠাসা মহামিছিল বুধবার সন্ধ্যায় একেবারে স্তব্ধ করে দিল মধ্য কলকাতাকে! নারদ-কাণ্ডে বিরোধীদের মোকাবিলায় আজ, বৃহস্পতিবারই কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মহিলা শাখার মিছিলের মধ্যে দিয়ে পাল্টা পথে নামছে শাসক দল। তার আগের সন্ধ্যায় ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত বাম মিছিলে ভি়ড়ের বহর ‘নবান্ন অভিযানে’র প্রস্তুতির মনোবল বাড়িয়ে দিল বিমানবাবুদের। বিধানসভা ভোটে হার ইস্তক এত বড় মিছিল তাঁরা করে দেখাতে পারেননি। সিপিএমের জেলা নেতাদের দাবি, সাংগঠনিক ভাবে যা লোক আনার ‘টার্গেট’ ছিল, স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তার বেশি মানুষ এসেছেন।
আরও পড়ুন: পাইলট, লালবাতি নিয়ে কড়া মুখ্যমন্ত্রী
ঘুষ-কাণ্ডে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পাশাপাশি তৃণমূল-বিজেপি’র মেরুকরণের রাজনীতির প্রতিবাদও হয়েছে মিছিল থেকে। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমানবাবু বলেছেন, ‘‘সামনে দু’টো বিপদ! রাজ্যে একটা দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার, কেন্দ্রে একটা সাম্প্রদায়িক সরকার। তারা বোঝাপড়া করে চলছে।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এই সূত্রেই প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর ৫৬ ইঞ্চি ছাতি কোথায় গেল? সংসদের এথিক্স কমিটি ১০ মাসেও সময় পেল না নারদ নিয়ে একটা বৈঠক ডাকার?’’ নারদ-কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীকেও সিবিআই তদন্তের আওতায় আনার দাবি ফের উঠেছে মিছিল থেকে।
সূর্যবাবু, ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়, সিপিআইয়ের স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, আরএসপি-র সুকুমার ঘোষেরা এ দিন বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, নারদের ফুটেজ ছড়িয়ে পড়া এবং সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হওয়া সত্ত্বেও তৃণমূলের মন্ত্রী-সাংসদেরা ইস্তফা দিতে নারাজ। তাই তাঁদের পদ ছা়ড়তে বাধ্য করতে হবে। লাগাতার রাস্তায় নেমে আওয়াজ তুলতে হবে। সূর্যবাবুর হুঁশিয়ারি, ‘‘কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগঠনগুলি আগামী ২২ মে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে। বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক সব সংগঠন সর্বতো ভাবে ওই অভিযান সমর্থন করবে। আরও বেশি সংখ্যায় সে দিন আমরা রাস্তায় থাকব। মুখ্যমন্ত্রীকে বলছি, সে দিন যেন পালাবেন না! জবাব আপনাকে দিতেই হবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy