অভিযুক্ত আকাশ। ছবি: দীপঙ্কর দে
চুরি-ডাকাতি তার বাঁ হাতের খেল। এ বার যোগ হল ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধাকে ধর্ষণের অভিযোগও।
পুলিশের নাগাল এড়াতে বছর কয়েক আগে গুসকরায় ট্রেন দুর্ঘটনায় কনুইয়ের কাছ থেকে ডান হাত কাটা যায় কোন্নগর-কাণ্ডে ধৃত বছর ত্রিশের আকাশ দাসের। তবু অপরাধমূলক কাজকর্মে ছেদ পড়েনি। গুসকরা থেকে পালিয়ে ঘাঁটি গেড়েছিল হুগলিতে। তবে শেষরক্ষা হল না। শনিবার কোন্নগরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে বৃদ্ধার বাড়িতে ডাকাতি এবং তাঁকে ধর্ষণ-মারধরে যুক্ত থাকার অভিযোগে ধরা পড়েল আকাশ। ইতিমধ্যেই সে ডাকাতিতে যুক্ত থাকার কথা কবুল করেছে। কিন্তু ধর্ষণের কথা মানেনি। সঙ্গীদের আড়াল করতে সে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করে চলেছে। ওই রাতে ডাকাতির সময়ে বৃদ্ধাকে কে ধর্ষণ করেছিল, কেন তাঁকে মারধর করা হল, ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত কিনা, বাকিদের সঙ্গে তার কোথায় আলাপ— এ সব প্রশ্নের উত্তরে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না তদন্তকারীরা।
সোমবার বিকেল পর্যন্ত কোন্নগর ধর্ষণ-কাণ্ডে আর কেউ ধরা পড়েনি। তবে, পুলিশ নিশ্চিত, ওই রাতে ডাকাতির সময়ে আকাশ ছাড়া আরও তিন জন ছিল। হুগলির পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘ধৃতের সব কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়। ওই রাতে বৃদ্ধার বাড়িতে লুটপাটে কারা ছিল, তা জানতে চেষ্টা চলছে। পুলিশের একাধিক দল তল্লাশি চালাচ্ছে।’’
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বৃদ্ধার শরীর থেকে সংগৃহীত নমুনা সোমবার ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠায় পুলিশ। এ দিন ধৃতকে শ্রীরামপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাকে ৭ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। বৃদ্ধার বড় ছেলে বলেন, ‘‘মায়ের সব পরীক্ষা হয়েছে। মুখের ফোলা ভাব কমেছে। পুলিশের উপর আমাদের আস্থা আছে। পুলিশ বাকিদের ধরার আশ্বাসও দিয়েছে।’’ তবে, এক দিন পেরিয়ে গেলেও কোন্নগরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের আতঙ্ক কাটেনি। এলাকায় পুলিশের ভ্যান ঘুরছে। রবিবার কোন্নগরেই পুলিশ আকাশকে ধরে। পুলিশের দাবি, আকাশ জানিয়েছে, বাকি দুষ্কৃতীদের সঙ্গে তার আগে পরিচয় ছিল না। শনিবার রাত ১০টা নাগাদ রিষড়া স্টেশনে সে ঘোরাঘুরি করছিল। তখনই তিন জনের সঙ্গে আলাপ। সেখানে ৪ জন মদ খায়। তার পরে ট্রেনে কোন্নগরে আসে।
তদন্তকারীদের দাবি, ওই রাতেই আলাপ এবং ওই বাড়িতে হামলা— এই তথ্য বিশ্বাসযোগ্য নয়। পুলিশ বলছে, আকাশ মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। গুসকরায় রেলের ওয়াগন ভাঙা দিয়ে অপরাধে হাতেখড়ি। তার পর চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই— বহু অভিযোগ উঠেছে। কিছু বছর কয়েক আগেও গুসকরাতেই তার দৌরাত্ম্য ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy