Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
State News

চাকরি থেকেই ইস্তফা দিলেন ভারতী ঘোষ

গত সোমবার রাতে নবান্ন পাঁচ আইপিএস অফিসারের বদলির নির্দেশ জারি করে। সেখানে ভারতীর নাম ছিল।

ভারতী ঘোষ। ফাইল চিত্র।

ভারতী ঘোষ। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ১০:৫৮
Share: Save:

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপারের পদ থেকে তাঁকে বদলি করা হয়েছিল ব্যারাকপুরে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের তৃতীয় ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ডিং অফিসারের পদে। কিন্তু নয়া পদে যোগ দিলেন না আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষ। বরং নিজের ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিত্ কর পুরকায়স্থকে, রাজ্য পুলিশ সূত্রে তেমনটাই খবর।

গত সোমবার রাতে নবান্ন পাঁচ আইপিএস অফিসারের বদলির নির্দেশ জারি করে। সেখানে ভারতীর নাম ছিল। তাঁর জায়গায় পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার পদে পাঠানো হয় অলোক রাজোরিয়াকে। তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের এসপি ছিলেন।

বদলির নির্দেশ পাওয়ার পর ভারতীর সঙ্গে কোনও ভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি। শোনা যায়, মঙ্গলবার রাতেই তিনি মেদিনীপুর শহর ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। তার পর থেকেই জল্পনা চলছিল কেন সরানো হল ভারতীকে? এর মধ্যেই জানা যায়, তিনি ইস্তফাপত্র দিয়েছেন। তিনি যে নতুন জায়গায় কাজে যোগ দেবেন না তা নিশ্চিত করতে ইস্তফাপত্রের পাশাপাশি ৯০ দিনের ছুটিও চেয়েছেন বলে সূত্রের খবর।

আরও পড়ুন: মিটমাটের সম্ভাবনা নেই, ভারতীর ইস্তফা গ্রহণ করছে নবান্ন

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক কি তলানিতে? ভারতীর বদলিতে জোর গুঞ্জন​

দীর্ঘ দিন ধরেই ভারতী রাজ্যরাজনীতির পাশাপাশি প্রশাসনের অন্দরমহলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত ছিলেন। প্রকাশ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘মা’ বলতেও শোনা গিয়েছিল তাঁকে। এমনকী ভারতী নাকি পশ্চিম মেদিনীপুরে ‘বকলমে’ তৃণমূল দলটাই চালাতেন। বিরোধীদের পাশাপাশি শাসক দলের অন্দরেও এই অভিযোগ বড়ই স্পষ্ট ছিল। নিজের দলের কর্মীদের কাছ থেকে তৃণমূল নেত্রী বহু বারই এমন অভিযোগ পেয়েছেন বলে সূত্রের খবর। কিন্তু সেই অভিযোগ পাওয়ার পরেও ভারতীর প্রতিপত্তি বেড়েছে তরতর করে। গত ছ’বছর ধরে তিনি ওই জেলার পুলিশ সুপারের দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার দায়িত্বও সামলেছেন।

বড়দিনে সান্তার সাজে ভারতী ঘোষ। মেদিনীপুর ক্যাথলিক গির্জার সামনে। ফাইল চিত্র।

তিনি এতটাই ‘প্রভাবশালী’ ছিলেন যে গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের সময় তাঁকে পুলিশ সুপারের দায়িত্ব থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়
নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ভোট মিটতেই ফের নিজ পদে বহাল হন ভারতী। এহেন ভারতীর বদলির নির্দেশ আসামাত্রই রাজ্যরাজনীতি তো বটেই, প্রশাসনের অন্দরেও প্রশ্ন উঠতে থাকে কেন সরানো হল ভারতীকে? কারও কারও দাবি, বিজেপি তথা মুকুল রায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বেড়ে যাওয়ার কারণেই ওই ‘শাস্তি’। আবার অন্য একটা অংশ জানাচ্ছিলেন, রাজ্যের এক ‘প্রভাবশালী’ মন্ত্রীই নাকি ভারতীকে বদলি করার পিছনে রয়েছেন। তবে সে সব নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি তৃণমূলের তরফে। প্রশাসনও রুটিন বদলি বলে জানিয়েছিল।

এর মধ্যেই বুধবার দুপুরে পুলিশ সুপার হিসাবে পশ্চিম মেদিনীপুরের দায়িত্ব নেন অলোক রাজোরিয়া। যদিও তিনি যখন দায়িত্ব নেন তখন ভারতী এসপি অফিসে ছিলেন না। তিনি তাঁর আগেই পশ্চিম মেদিনীপুর শহর ছেড়েছেন বলেই সূত্রের খবর।

তবে, ভারতী আদৌ ইস্তফাপত্র দিয়েছেন কি না তা নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE