Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

দুই মাস্টার প্ল্যানে বন্যা ঠেকানোর চেষ্টা উত্তরে

একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি হবে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহ জেলাকে নিয়ে। অভিজ্ঞ একটি কেন্দ্রীয় পরামর্শদাতা সংস্থাকে দিয়ে তার রূপরেখা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৪১
Share: Save:

উত্তরবঙ্গ হোক বা দক্ষিণ, কোথাও বন্যা মোকাবিলায় কেন্দ্রের সাহায্য মিলছে না বলে অভিযোগ করলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তিনি বিধানসভায় জানান, এই অবস্থায় বন্যা থেকে উত্তরবঙ্গকে বাঁচাতে দু’টি ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।

একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি হবে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহ জেলাকে নিয়ে। অভিজ্ঞ একটি কেন্দ্রীয় পরামর্শদাতা সংস্থাকে দিয়ে তার রূপরেখা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। অন্য মাস্টার প্ল্যানটি তৈরি হবে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিং জেলাকে নিয়ে। এর নকশা তৈরির জন্য শীঘ্র পরামর্শদাতা সংস্থা নিয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছেন সেচমন্ত্রী।

এ দিন প্রশ্নোত্তর পর্বে রাজ্যের সাম্প্রতিক বন্যায় বিভিন্ন জেলার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং বন্যা প্রতিরোধে সরকার কী কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, সেই প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস, সিপিএম-সহ বিরোধী দলের বিধায়কেরা। তারই উত্তর দিতে গিয়ে রাজীববাবু এ কথা বলেন। তিনি জানান, এ বছর দুই বঙ্গেই বন্যা হয়েছে। এবং সরকার সব জেলাতেই বন্যা মোকাবিলায় উদ্যোগী হয়েছে।

দক্ষিণবঙ্গে বন্যার জন্য ডিভিসি-র জল ছাড়া এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকাকে দায়ী করেছেন সেচমন্ত্রী। তাঁর দাবি, ডিভিসি বন্যা নিয়ন্ত্রণের থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বেশি ব্যস্ত থাকে। জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে কেন্দ্র-রাজ্যের যে-যৌথ কমিটি রয়েছে, তাতে যথাসময়ে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের কথা শোনা হয়নি। তাঁর বক্তব্য, ডিভিসি-র জলাধারগুলিতে পলি জমে জলধারণ ক্ষমতা কমেছে। অথচ তার কোনও সংস্কার করা হচ্ছে না। ফলে ভুগতে হচ্ছে রাজ্যকে। ওদের জলধারণের ক্ষমতা ১৫ লক্ষ একর ফুট থেকে কমে সাত লক্ষ একর ফুটের কিছু বেশিতে দাঁড়িয়েছে। জলাধার সংস্কারের কথা বলা হয়েছে কেন্দ্রকে। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।

কেন্দ্র উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রেও রাজ্যের দাবি মানছে না বলে অভিযোগ করেন সেচমন্ত্রী। দক্ষিণবঙ্গের নিম্ন দামোদর উপত্যকা অঞ্চলে বন্যা প্রতিরোধে বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় নদীনালা ও খাল সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে রাজ্য।

কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতা আব্দুল মান্নান প্রশ্নোত্তর পর্বে সেচমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, বন্যার পরে কেন্দ্র থেকে কোনও সাহায্য পাওয়া গিয়েছে কি?

রাজীববাবু জানান, ওরা এখনও রাজ্যকে কোনও রকম সাহায্যই করেনি। মন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রের উপরে চাপ তৈরির জন্য স্পিকারের কাছে সর্বদলীয় কমিটি গঠন করার প্রস্তাব দেন মান্নান।

পরে বিধানসভার বাইরে রাজীববাবু জানান, এ বছর বন্যায় ১৯টি জেলায় নদীবাঁধ, সেচখাল, নিকাশি ব্যবস্থা মিলিয়ে ১৪১১টি জায়গায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪১৩ কোটি টাকার কিছু বেশি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Flood North Bengal Master Plans
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE