Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

আপনি ‘নক্ষত্র’, আপনি ‘আমার ক্যাপ্টেন’: পিঠ চাপড়াচাপড়ি বিজেপিতে

কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বিজেপি-র রাজ্য দফতর পর্যন্ত সেই সফরে ছিল বিপুল ভিড়। অমিতের বেঁধে দেওয়া সুরেই দফতরে ঢুকেই মুকুল জানিয়ে দিলেন, ‘‘জাতীয় ক্ষেত্রে আমার ক্যাপ্টেন অমিত শাহ। আর বাংলায় আমার ক্যাপ্টেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর নেতৃত্বেই আমি বাংলায় কাজ করব।’’

উন্মাদনা: সমর্থকদের ভিড় ঠেলে দিল্লি-ফেরত মুকুল রায়কে নিয়ে যাচ্ছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। সোমবার কলকাতা বিমানবন্দরে। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

উন্মাদনা: সমর্থকদের ভিড় ঠেলে দিল্লি-ফেরত মুকুল রায়কে নিয়ে যাচ্ছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। সোমবার কলকাতা বিমানবন্দরে। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৫২
Share: Save:

দিল্লিতে যোগদান, বাংলায় শ্রম দান। তৃণমূলত্যাগী মুকুল রায়ের জন্য এমনই ভূমিকা নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। যোগদান হয়েছে, এবার বাংলায় এসে বিজেপির হয়ে কাজ শুরু করলেন মুকুল। সোমবার কলকাতায় নেমেই সোজা চলে আসেন তিনি বিজেপির রাজ্য দফতরে।

কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বিজেপি-র রাজ্য দফতর পর্যন্ত সেই সফরে ছিল বিপুল ভিড়। অমিতের বেঁধে দেওয়া সুরেই দফতরে ঢুকেই মুকুল জানিয়ে দিলেন, ‘‘জাতীয় ক্ষেত্রে আমার ক্যাপ্টেন অমিত শাহ। আর বাংলায় আমার ক্যাপ্টেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর নেতৃত্বেই আমি বাংলায় কাজ করব।’’

আরও পড়ুন: ভিড়ের বৃত্তে বিজেপির মুকুল, বাবাকে ‘চ্যালেঞ্জ’ শুভ্রাংশুর

সৌজন্য দেখান বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষও। দলীয় দফতরে মুকুলবাবুকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বাংলার রাজনীতিতে একটা ভূমিকম্প হয়েছে, তার হালকা কম্পন টের পাওয়া যাচ্ছিল। আজ বড় কম্পন টের পাওয়া যাচ্ছে। ওঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নিয়ে সন্দেহ নেই। এঁদো পুকুর ছেড়ে সমুদ্রে আসার জন্য ওঁকে অভিনন্দন।’’

কিন্তু এই অভিনন্দনের ফাঁকে কিঞ্চিত কম্পন বিজেপির অন্দরেও। এ দিন যে ভাবে লোকজন নিয়ে মুকুল সদরে প্রবেশ করেছেন তাতে এর শেষ কোথায় ভেবে অনেকেই শঙ্কিত। অচিরেই মুকুল রায়ের হাতে যে দলের নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে তা আগাম আশঙ্কা করেই দিলীপবাবু বলে রেখেছেন, মুকুলবাবু আসলে পঞ্চায়েত ভোটের খিচুড়িতে ঘি। ভাত,ডাল, তরকারির পাতে চাটনি-পায়েস বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। যার মোদ্দা অর্থ হল, নবাগত নেতা আসলে বিজেপির দলে মূল নয় অতিরিক্ত খেলোয়াড় হিসাবেই খেলবেন। এ দিন পাল্টা চাল হিসাবে প্রথমেই দিলীপবাবুর নেতৃত্ব স্বীকার করে নিয়েছেন মুকুলও।

তবে এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে একগুচ্ছ কাগজ দেখিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘ আমি কী বলি, তা জানার জন্য বহু মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। এ দিনই সব বলে দিলে তাঁরা আগামী শুক্রবার, ১০ নভেম্বর সভায় এসে নিরাশ হবেন। হাতে কাগজ আছে, সব বলব ধীরে ধীরে।’’ একদা দলের দু’নম্বরের হাতে কাগজের গোছা দেখে তৃণমূলের অন্দরেও নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। অপেক্ষা নতুন কিছু ফাঁস হওয়ার।

যদিও মুকুলের নারদ-সারদা যোগ আদৌ আর ফাঁস হবে কি না সেই প্রশ্নও তুলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। মুকুলের অবশ্য ব্যাখ্যা, নারদে যদি দেখা যায় আমি হাত পেতে টাকা নিয়েছি, তা হলে রাজনীতি ছেড়ে দেব। আর সারদা তদন্তে সিবিআইকে সহযোগিতা করেছি। একটা চার্জশিটেও আমার নাম নেই। তবে আইন আইনে পথে চলবে। দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তি মাথা পেতে নেব। সারাদিন মুকুল-যোগ নিয়ে বিজেপি হইচই করলেও রা কাড়েননি তৃণমূল নেতারা। সন্ধ্যায় নবান্ন থেকে বেরনোর সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুকুলের বিজেপি-তে যোগদান নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমার কিছু বলার থাকলে আমি নিজেই বলব। আপনারা আমাকে প্রশ্ন করবেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE