সমস্ত সংসদীয় কমিটি থেকে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সহ-সভাপতির পদ থেকেও। তৃণমূলে এখন কার্যত অপাংক্তেয় মুকুল রায়। তবুও তাঁর সাম্প্রতিক দিল্লি সফর ঘিরে তৃণমূলের অন্দরে জল্পনা ও কৌতূহলের শেষ নেই। দলের অনেকেরই প্রশ্ন— মুকুল রায় কি বিজেপিতেই যাচ্ছেন? না কি নিজেই কোনও দল গড়ছেন?
জল্পনার অবসানে শেষ পর্যন্ত বিবৃতি দিতে হয়েছে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। দল মুকুলের ব্যাপারে আরও কড়া পদক্ষেপ করতে পারে সেই ইঙ্গিত দিয়ে তৃণমূলের মহাসচিব শুক্রবার বলেন, ‘‘উনি কোন এক্তিয়ারে বিজেপির নেতাদের সঙ্গে দেখা করছেন? হয়তো ব্যক্তিগত ভাবে দেখা করছেন। সব কিছু দল নজরে রাখছে। সীমা ছাড়ালে দল নিশ্চয়ই ওঁর সঙ্গে কথা বলবে।’’
তবে বিজেপির সঙ্গে মুকুলের ‘যোগাযোগ’ যে দল বরদাস্ত করবে না, তা দিন কয়েক আগে কোর কমিটির বৈঠকেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুকুল যে এখনও তৃণমূলের কার্যকরী কমিটির সদস্য, সে কথা উল্লেখ করেছেন পার্থবাবু। তবে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখলে তিনি আমাদের দোসর হতে পারেন না। উনি বিচক্ষণ। ব্যক্তিস্বার্থের থেকেও দলের স্বার্থ যে অনেক বড়, আশা করি উনি সেটা খেয়াল রাখবেন।’’
আরও পড়ুন: বিনয়ের বোর্ডকে বিপুল বরাদ্দ
ক্রমাগত দলকে এড়িয়ে, দলের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে বিজেপি-সঙ্গ চালিয়ে গেলে দল যে ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না, সেই হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন পার্থবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘দলের স্বার্থ খেয়াল না রাখলে ফল ভোগ করতেই হবে ওঁকে।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, সরকারি নিরাপত্তা ছেড়ে দেওয়ার পরে দেড় দিনের ঝটিকা সফরে মুকুল দিল্লি গিয়েছিলেন। শুক্রবারই তিনি ফিরে এসেছেন। দিল্লিতে কার কার সঙ্গে দেখা করেছেন তা নিয়ে দলে জল্পনা তুঙ্গে। দলের অনেকে মনে করছেন, ‘বড় সিদ্ধান্ত’ নেওয়ার আগে এটাই ছিল তাঁর চূড়ান্ত রাজধানী সফর। এ নিয়ে তাঁকে জি়জ্ঞাসা করা হলে তিনি শুধু বলেন, ‘‘আমার দেহ এখনও তৃণমূলে। এর বাইরে কিছুই বলার নেই!’’ তবে মুকুলের কয়েক জন ছায়াসঙ্গীর কথায়, ‘‘দিল্লি সফর ফলপ্রসূ হয়েছে। দাদা বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন। কিন্তু কী করবেন, কেউ জানে না।’’
তৃণমূলেরই একাংশের অবশ্য বক্তব্য, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মুকুলকে সরাসরি নিজেদের দলে নিতে চান না। সে কথা তাঁরা মুকুলকে জানিয়েও দিয়েছেন। তবে মুকুল আলাদা দল গড়ে এনডিএ-র শরিক হতে চাইলে তাঁরা বিবেচনা করতে পারেন বলে তৃণমূল জেনেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy