Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

শ্রীনু খুনে দিলীপ-যোগ ওড়াল ধৃত

শ্রীনু হত্যা মামলায় এ বার নয়া মোড়। আদালতে এসেও গোপন জবানবন্দি দিতে বেঁকে বসল এক অভিযুক্ত। নন্দ দাস নামে ওই অভিযুক্ত সোমবার মেদিনীপুর আদালতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ-ও দাবি করেছে যে, শ্রীনু খুনে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জড়িত নন।

মেদিনীপুর আদালত চত্বরে শ্রীনু-খুনে ধৃত নন্দ দাস।নিজস্ব চিত্র

মেদিনীপুর আদালত চত্বরে শ্রীনু-খুনে ধৃত নন্দ দাস।নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:৪৫
Share: Save:

শ্রীনু হত্যা মামলায় এ বার নয়া মোড়। আদালতে এসেও গোপন জবানবন্দি দিতে বেঁকে বসল এক অভিযুক্ত। নন্দ দাস নামে ওই অভিযুক্ত সোমবার মেদিনীপুর আদালতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ-ও দাবি করেছে যে, শ্রীনু খুনে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জড়িত নন।

খড়্গপুরের রেলমাফিয়া শ্রীনু নায়ডু খুনে ধৃত ৮ জনের অন্যতম এই নন্দ। ‘অপারেশন শ্রীনু’-র জন্য গাড়ির বন্দোবস্ত সে-ই করেছিল বলে পুলিশের দাবি। নন্দ গোপন জবানবন্দি দিতে চায় বলে পুলিশ আদালতে আবেদন জানিয়েছিল। সেই মতো এ দিন দুপুরে মেদিনীপুর জেল থেকে মেদিনীপুর আদালতে আনা হয় নন্দকে। কিন্তু বিচারকের কাছে গিয়ে বেঁকে বসে নন্দ। সাফ জানিয়ে দেয়, সে এখন গোপন জবানবন্দি দেবে না।

শ্রীনু খুনে ‘বড় মাথা’ জড়িত বলে দাবি করেছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। সেই ‘বড় মাথা’ কে, তা নিয়ে চুপ পুলিশ। তবে তৃণমূল আঙুল তুলেছে খড়্গপুরের বিজেপি বিধায়ক দিলীপ ঘোষের দিকে। এ দিন তাই আদালত চত্বরে সাংবাদিকরা নন্দকে প্রশ্ন ছুড়ে দেন— দিলীপ ঘোষ কি এই খুনে জড়িত? নন্দর জবাব ছিল, ‘‘না’’। তাহলে কি রামবাবু জড়িত? এ বার জবাব, ‘‘বলতে পারব না।’’

গোপন জবানবন্দি দিতে এসেও বেঁকে বসার ঘটনাটি এ দিন মেদিনীপুর আদালতে আলোড়ন ফেলে। একাংশ আইনজীবীর পর্যবেক্ষণ, এমন ঘটনা সচরাচর ঘটে না। কারণ, পুলিশ যাদের মামলায় সাক্ষী করতে চায়, তাদেরই গোপন জবানবন্দি নেওয়ার আবেদন জানায়। তবে কি জবানবন্দি দিতে জোর করা হয়েছিল নন্দকে? জেলার পুলিশ কর্তারা এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তবে কে হামিদুর রাও ওরফে ডান্ডা সিংহ নামে ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী এ দিন গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন।

এ দিকে, রবিবারের পরে এ দিনও ফের ফোনে হুমকি দেওয়া হয়েছে শ্রীনু মামলার সরকারি আইনজীবীকে। মেদিনীপুর আদালতের আইনজীবী সৈয়দ নাজিম হাবিবের অভিযোগ, রবিবার রাতের পরে সোমবার বিকেলে ফের তাঁর স্ত্রীর মোবাইলে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়। রবিবার রাতে ফোনে বলা হয়েছিল, ‘শ্রীনু খুনে ধৃতদের বিরুদ্ধে সওয়াল করলে ফল ভাল হবে না। আর এই ফোনের কথা পুলিশকে জানালে ফল আরও খারাপ হবে।’ এ কথা শুনে ফোন কেটে দেন আইনজীবীর স্ত্রী।

কেন তিনি ফোন কেটে দিয়েছিলেন, সোমবার বিকেলের ফোনে সেই কৈফিয়তই চাওয়া হয়। সরকারি ওই আইনজীবীর আরও দাবি, রবিবার রাতে এবং সোমবার দুপুরে ওই একই নম্বর থেকে তাঁর স্ত্রীর মোবাইলে মিসড্ কলও করা হয়েছে।

ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। ‘হুমকি ফোন’-এর কথা লিখিত ভাবে জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনাকেও জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী। তাঁর নিরাপত্তায় এক জন রক্ষী দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি তুলেছে ‘ডিস্ট্রিক্ট বার অ্যাসোসিয়েশন’। ঘটনার প্রতিবাদে আগামী সাত দিন শ্রীনু হত্যা মামলার অভিযুক্তদের হয়ে কোনও আইনজীবী সওয়াল করবে না বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে। বার অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক অরূপ বর্মা বলেন, “এই ঘটনা নিন্দনীয়। দ্রুত কিনারার দাবি জানাচ্ছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Srinu Naidu Nanda Das Dilip Ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE