Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
নতুন পুরপ্রধান কে, জল্পনা ভদ্রেশ্বরে

মনোজের খুনি ধরতে অভিযান ভিন্‌ রাজ্যে

দু’দিন পার। কিন্তু ভদ্রেশ্বরের পুরপ্রধান মনোজ উপাধ্যায় খুনের নেপথ্যের কারণ খুঁজতে এখনও কার্যত অন্ধকারে হাতরাচ্ছে পুলিশ।

নিহত: মনোজ উপাধ্যায়।

নিহত: মনোজ উপাধ্যায়।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
ভদ্রেশ্বর শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১৯
Share: Save:

দু’দিন পার। কিন্তু ভদ্রেশ্বরের পুরপ্রধান মনোজ উপাধ্যায় খুনের নেপথ্যের কারণ খুঁজতে এখনও কার্যত অন্ধকারে হাতরাচ্ছে পুলিশ।

গত মঙ্গলবার রাতে মনোজ খুনের পরের দিনই পুলিশ মুন্না রায় নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল। তার পরে আর নতুন করে আর কেউ ধরা না-পড়ায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। তার উপরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশকে দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। এর জেরে তারা যে যথেষ্ট চাপে রয়েছেন, তা মানছেন চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তাদের একাংশ।

তদন্তকারীদের অবশ্য অনুমান, দুষ্কৃতীরা ভিন্ রাজ্যে গা-ঢাকা দিয়েছে। কমিশনারেটের একাধিক দল ইতিমধ্যেই বিহার ও ঝাড়খণ্ডে পৌঁছে গিয়েছে। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ওই দুষ্কৃতীদের নাগাল পাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

কিন্তু কেন বিহার-ঝাড়খণ্ড?

খুনের পরে, মঙ্গলবার রাত থেকেই পুলিশের একাধিক দল দুষ্কৃতীদের সম্ভাব্য ডেরায় হানা দিয়েছিল। কিন্তু তাদের টিকি ছুঁতে পারেনি। আর তাতেই পুলিশের সন্দেহ, এলাকা না ছাড়লে দুষ্কৃতীরা জালে পড়ত। তদন্তকারীদের অনুমান, পুরপ্রধান খুনে স্থানীয়দের সঙ্গেই ভাড়া করা দুষ্কৃতীদেরও আনা হয়েছিল। তারা উত্তর ২৪ পরগনা থেকে এসেছিল বলেও দাবি করছেন তদন্তকারীদের কেউ কেউ। কিন্তু পুলিশ তাদের ধরতে পারেনি। তবে, তদন্তে পুলিশ জেনেছে, এলাকার যে সব দুষ্কৃতী ওই রাতে ছিল, ভদ্রেশ্বরের বিভিন্ন জুটমিলের কুলি লাইনে তাদের আস্তানা রয়েছে। তাদের অনেকেই আদতে বিহার-ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। তাই পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে সেখানে গিয়েই গা-ঢাকা দিয়েছে তারা। কারণ, সেখানে তাদের চেনাশোনার পরিধি বেশি।

মনোজ-খুনের নেপথ্যে পুলিশ স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতীর নাম পেলেও ‘বড় মাথা’টি কে, সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত নয়। তবে, তদন্তকারীরা এটা মানছেন, পুরপ্রধানের মতো বিশিষ্ট মানুষকে খুন করলে তার যে একটা বড় ধাক্কা প্রশাসনের দিক থেকে পাল্টা আসবে, তা দুষ্কৃতীদের জানা ছিলই। তাই সে সব সামাল দেওয়ার নিশ্চয়তা অবধারিত ভাবেই কোনও ‘বড় মাথা’র কাছ থেকে পেয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তবে কেন পুরপ্রধানকে ওই ভাবে মারা হল? তার স্পষ্ট কোনও দিশা শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ দিতে পারেনি।

এ দিকে, ভদ্রেশ্বর তো বটেই, জেলা তৃণমূলের অন্দরেও মনোজের চেয়ারে কে বসবেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে, এই সময় শক্ত হাতে পুরসভার হাল ধরতে পারবেন, এমনই কাউকে চাইছে তৃণমূল। কিন্তু তিনি কে, সেটা খুঁজে বের করাই কঠিন বলে মনে করছে দলের একাংশ। কারণ, মনোজ খুনে দলের স্থানীয় সংগঠন দুর্বল হয়েছে। পাশাপাশি, যে দক্ষতায় মনোজ দ্রুত পুরসভার ভোল বদলাতে সক্ষম হয়েছিলেন, তেমন দক্ষ কাউকে এই মুহূর্তে পাওয়া কঠিন বলেই মানছেন তৃণমূল নেতাদের অনেকে।

দলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত অবশ্য বলেন, ‘‘এখন মনোজের খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার চাইছি আমরা। পরবর্তী পুরপ্রধান কে হবেন, সে ব্যাপারে এখনও কথা হয়নি। মনোজের মৃত্যুতে আমাদের বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Manoj Upadhyay Murder TMC Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE