মুকুল রায়। মঙ্গলবার বেলুড় মঠে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
তৃণমূল ছেড়ে নতুন উদ্যোগে কতটা সফল হবেন মুকুল রায়? তাঁর দল ছাড়ার ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা পরেও রাজ্য রাজনীতিতে এটিই মূল চর্চার বিষয়।
মুকুল শিবিরের দাবি, তৃণমূলের বুথ স্তরের কর্মীদের বড় অংশকে তিনি চেনেন, জানেন। অনেক দলীয় বিধায়ক, সাংসদের এলাকার সংগঠন তৈরিতেও মুকুল এত দিন মূল কারিগর ছিলেন। সেই সৌজন্যেই তাঁদের অনেকেই এখনও মুকুলের সঙ্গে তলে তলে যোগাযোগ রাখছেন।
তবে মুকুল সেই লক্ষ্যে খুব একটা সফল হবেন না বলে তৃণমূল নেতৃত্ব অনেকটাই নিশ্চিত। তাঁরা মনে করেন, তৃণমূলের কোনও নেতা-কর্মীই মুকুলের হাত ধরে এই মুহূর্তে সেই ‘অনিশ্চিত’ রাজনৈতিক জীবনের ঝুঁকি নিতে চাইবেন না। তা ছাড়া, এখনই মুকুল বিজেপিতে যোগ দেবেন কি না, বা বিজেপি তাঁকে দলে নেবে কি না, কোনওটাই স্পষ্ট নয়। তার উপর এ রাজ্যে বিজেপির অবস্থান এখনও যেখানে, তাতে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের কাছে বিকল্প হিসেবে ‘মুকুল-পন্থী’ হয়ে বিজেপির পাশে যাওয়ার সম্ভাবনাও তৃণমূল নেতৃত্বের মতে ক্ষীণ।
আরও পড়ুন:আজ মহাসপ্তমী, উৎসবকে জায়গা ছেড়ে বর্ষা ব্যাকফুটে
মুকুল অবশ্য মঙ্গলবার দাবি করেন, ‘‘সোমবার রাত দেড়টা পর্যন্ত শুধু ফোন আর ফোন। পাগল হয়ে যাচ্ছি। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের সঙ্গে এত বছর সম্পর্ক রেখে চলেছি। এই সম্পর্ককে অস্বীকার করা যায় না।’’ এ দিন সকালে বেলুড় মঠে পুজো দিতে গিয়েছিলেন তিনি। দীক্ষা নেওয়ার আবেদনপত্রও জমা দিয়ে আসেন তিনি। তিনি বিজেপির ঘনিষ্ঠ হতে চাইছেন এমন সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার ফলেই কি তাঁর এই পদক্ষেপ? মুকুলের ব্যাখ্যা, ‘‘যে কোনও বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মানুষ এখানে আশীর্বাদ নিতে আসে। আমিও তাই এসেছি। এখানে এলে মনের জোর পাওয়া যায়।’’
এ দিকে সোমবার রাতে রোম রওনা হওয়ার আগে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলে যান, ‘‘বিশ্বাসঘাতকদের নিয়ে কখনও রাজনীতি চলে না। আর তৃণমূলে বিশ্বাসঘাতকদের কোনও স্থান নেই।’’ এই বক্তব্য থেকে অনেকে নিশ্চিত, সোমবার ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করার পরে তৃণমূল থেকে মুকুলের বহিষ্কার এখন সময়ের অপেক্ষা।
মুকুল অবশ্য সোমবারই জানিয়ে দিয়েছেন যে, পুজোর পরেই রাজ্যসভার সাংসদ পদে ইস্তফা দেবেন তিনি। তাতে অন্তত বহিষ্কারটা এড়ানো সম্ভব হবে। কিন্তু পার্থর এ দিনের মন্তব্যকে বৃহত্তর প্রেক্ষিতেই দেখছেন অনেকে। তাঁদের মতে, মুকুল-পর্বের পরেও বিশ্বাসঘাতকদের জন্য দলের বিধি ‘বহিষ্কার’ই বহাল থাকবে— এই বার্তা দিয়ে রাখলেন তৃণমূল নেত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy