Advertisement
০২ মে ২০২৪

আনন্দপ্লাবনে ভেসে গেল বৃষ্টির ফন্দি

আমজনতা যদি উৎসব কাপের চ্যাম্পিয়ন হয়, রানার্স আপ অবশ্যই কলকাতা পুলিশ। শুক্রবার বেলা দে়ড়টা। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি মাথায় করে স্ত্রীকে নিয়ে রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে গাড়ি থেকে নামলেন অমিত দাস। বিনা বাধায় দশ মিনিটের মধ্যে চেতলা অগ্রণীর মেহগনি কাঠের প্রতিমা ও মণ্ডপ দেখে সুরুচির পথ ধরলেন তাঁরা।

নবমীতে: বৃষ্টি মাথায় করেই শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজোয় ভিড়। ছবি: সুমন বল্লভ।

নবমীতে: বৃষ্টি মাথায় করেই শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজোয় ভিড়। ছবি: সুমন বল্লভ।

শিবাজী দে সরকার ও কাজল গুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৪৮
Share: Save:

সকালে মনে হচ্ছিল, মহানবমী বুঝি ভেসে গেল। মনে হচ্ছিল, কয়েক দিন ধরে বৃষ্টির হানায় উৎসবপ্রেমীদের মন খুবখানিকটা মিইয়ে গিয়েছে।

কিন্তু সূর্য পশ্চিমে ঢলতেই মণ্ডপে মণ্ডপে আলো জ্বলতে শুরু করা মাত্র বোঝা গেল, দু’টি ধারণাই ভুল ছিল। বোঝা গেল, মানুষের ইচ্ছাশক্তির কাছে পিছু হটেছে বৃষ্টি। মহামবমীর রাত যত বেড়েছে, কালো মাথায় ঢেকেছে কলকাতার পথ। বর্ষণের জলস্রোতের বদলে শুধুই জনস্রোত।

আমজনতা যদি উৎসব কাপের চ্যাম্পিয়ন হয়, রানার্স আপ অবশ্যই কলকাতা পুলিশ। শুক্রবার বেলা দে়ড়টা। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি মাথায় করে স্ত্রীকে নিয়ে রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে গাড়ি থেকে নামলেন অমিত দাস। বিনা বাধায় দশ মিনিটের মধ্যে চেতলা অগ্রণীর মেহগনি কাঠের প্রতিমা ও মণ্ডপ দেখে সুরুচির পথ ধরলেন তাঁরা। সৌজন্য পুলিশ। সন্ধ্যা ৬টা। এক অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার পরিবারের অন্যদের নিয়ে রাসবিহারী মোড়ের কাছে নেমে হেঁটে দেশপ্রিয় পার্কের ঠাকুর দেখার লাইনে দাঁড়ালেন। ঠাকুরের সামনে পৌঁছলেন ৪০ মিনিটে। পথের শৃঙ্খলা অটুট।

মহাষ্টমীর খলনায়ক বৃষ্টি নবমীর সকালেও হানা দিয়েছিল। দক্ষিণ কলকাতা জুড়ে প্রবল বৃষ্টি যেন পুজোর আনন্দ ধুয়ে দেওয়ারই ফন্দি এঁটেছিল। কিন্তু জনতাকে দমানো যায়নি। বৃষ্টির দাপট যখনই একটু কমেছে, উৎসবপ্রেমীরা হাজির হয়েছেন মণ্ডপে। বিকেলে বৃষ্টি ক্ষান্তি দিতেই ফের মহানগরীর রাস্তা আর মণ্ডপের দখল নিতে শুরু করে ভিড়।

আরও পড়ুন: বোষ্টুমি, শাপলা, উপুড় নীল গামলা আকাশ

পুলিশ জানায়, দুপুরে মহরমের তাজিয়ার জন্য মধ্য কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। তবে বৃষ্টির জন্য তখন রাস্তায় লোক কম থাকায় সমস্যা হয়নি। সন্ধ্যায় শুরু হয় জনজোয়ার। বন্ধ করে দিতে হয় বিধান সরণি ও অরবিন্দ সরণির যান চলাচল। অষ্টমী থেকেই শ্রীভূমির লাগোয়া ভিআইপি রোডে যান-শাসনের ভার নিয়েছিল পুলিশ। বাইপাস ও সংলগ্ন রাস্তায় লম্বা গাড়ির সারি। গোলাঘাটা থেকে দমদম পার্ক পর্যন্ত ভিআইপি রোডে যান সামলাতে হিমশিম খেয়ে যায় পুলিশ।

লালবাজার জানিয়েছে, ভিআইপি রোড বিধাননগর পুলিশের অধীনে থাকলেও পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করতে হয়।

আজ, শনিবার বিজয়া দশমী। পুজোর শেষ দিন। মানুষের প্রার্থনা, শেষের দিনটায় অন্তত রেহাই দিক বৃষ্টি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE