এক জন বলছেন, ‘‘দু’মিনিটে শিকার উৎসব বন্ধ করতে পারতেন মুখ্যমন্ত্রী। ভোটের কথা ভেবে তা করা হয়নি।’’
অন্য জনের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘উনি কি টেলিস্কোপ দিয়ে দেখেছেন, ওখানে শিকার উৎসব হয়েছে?’’
এক জনের মন্তব্য, ‘‘প্রতি বছর লালগড়ের আশেপাশে তথাকথিত আদিবাসীরা হাজারো পশুহত্যা করেন। নিজেদের জন্য করেন না। করেন চোরাচালানকারীদের জন্য।’’
অন্য জনের দাবি, ‘‘উনি কী করে জানলেন, আদিবাসীরা এটাকে মেরেছে? আদিবাসীদের অপমান করার ওঁর কোনও অধিকার নেই।’’
প্রথম জন, পশুপ্রেমী তথা কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী মেনকা গাঁধী। দ্বিতীয় জন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলে বাঘের মৃত্যু নিয়ে বুধবার এমনই তরজায় জড়ালেন দু’জনে।
তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে শালবনিতে আদিবাসীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দলের স্থানীয় নেতৃত্ব। বাঘ খুনের তদন্ত ও শিকার উৎসব নিয়ে কার্যত অভয় দেওয়া হয়েছে তাঁদের। অনেকেই এই বৈঠকের আড়ালে পঞ্চায়েত ভোটের অঙ্ক দেখেছেন। মেনকার দাবি, ‘‘বন দফতর সব জেনেও পদক্ষেপ করেনি। পশ্চিমবঙ্গই একমাত্র রাজ্য, যেখানে এ ধরনের অনৈতিক কাজকর্মকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়। আমি নিজে মুখ্য বন সংরক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছি।’’
এর পরেই মমতার দীর্ঘ বিবৃতি প্রকাশ করে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘শিকার উৎসব তো ওখানে হয়নি। একটা বাঘ মারা গিয়েছে, দেখতে এসেছে অনেক লোক— একটা মানুষ মারা গেলেও তো পরিবার-পরিজন ভিড় করে!’’ পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়ার আদিবাসীদের একটি সংগঠনের প্রতিনিধিরা এ দিন নবান্নে মমতার সঙ্গে দেখা করেন। অন্যান্য কথার ফাঁকে বাঘ হত্যায় তাঁদের দিকে অভিযোগের আঙুল ওঠা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্বেগ জানান তাঁরা। মমতা তাঁদের আশ্বস্ত করেন।
আরও পড়ুন: ‘একটি ভোটের চেয়ে জীবনের মূল্য বেশি’, স্ত্রীকে হারিয়ে শান্তির প্রচারে সাদিক
মঙ্গলবার শালবনির লালগেড়িয়ার কেন্দাশোল গ্রামে আদিবাসীদের সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি, বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নেপাল সিংহ। অজিতবাবু বলেন, ‘‘বিজেপি প্রচার করছে, বাঘ খুনে ধরপাকড় শুরু হবে। শিকার উত্সবেও নাকি রাজ্য বাধা দিচ্ছে। বৈঠকে বলেছি, এফআইআরে নির্দিষ্ট কারও নাম নেই। ভয়ের কিছু নেই!’’
মমতার যদিও শুধু বাঘে আটকে থাকেননি। বলেছেন, ‘‘ঝাড়খণ্ড থেকে আদিবাসীদের নিয়ে, তির-ধনুক নিয়ে মহম্মদবাজারে মনোনয়ন দিতে গিয়েছিল বিজেপি। তখন আদিবাসীরা শিকারি নন? সারা ভারতে দলিতদের উপরে অত্যাচার হচ্ছে। ওঁদের কথা থেকেই প্রমাণ হয়, ওঁরা তফসিলি, আদিবাসীদের পক্ষে নন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy