আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির যাত্রাভঙ্গ করতে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধী দলগুলি অবশ্য তৃণমূল নেত্রীর এই তৎপরতার পিছনে তাঁর নিজস্ব উচ্চাকাঙ্খা খুঁজে পাচ্ছে।
দেশের রাজনীতিতে কংগ্রেসকে বাইরে রেখে কোনও ফ্রন্টের পক্ষেই বিজেপি-কে ক্ষমতাচ্যুত করে সরকার গড়া সম্ভব নয় বলে মনে করে বাকি দলগুলি। এমনকী, এই প্রশ্নে বিজেপিও ভিন্নমত নয়। তার পরেও মমতা যে ভাবে একের পর এক দলের সঙ্গে বৈঠক করে যাচ্ছেন, তা দেখে বিরোধী নেতাদের প্রশ্ন— তা হলে কি নিজে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্যই তৃণমূল নেত্রীর এমন দৌ়ড়ঝাঁপ? দিল্লির রাজনীতিতে নিজে থিতু হয়ে মমতা কি তা হলে রাজ্যের মসনদে ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে চান?
বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের কটাক্ষ, ‘‘মমতাজি’র উপদেষ্টারা তাঁকে স্বপ্নের স্বর্গে চড়িয়ে দিচ্ছেন! ওঁকে প্রধানমন্ত্রী আর ভাইপো অভিষেককে মুখ্যমন্ত্রী করার স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে!’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘কংগ্রেসই দেশের প্রধান বিরোধী দল। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৪২টা লোকসভা আসন পেলেও মমতা প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না! তবু স্বপ্ন দেখছেন!’’ একই দিনে দিল্লিতে বসে বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেছেন, ‘‘বাংলায় অশান্তি চলছে। মুখ্যমন্ত্রী তখন দিল্লিতে তৃতীয় ফ্রন্ট নামক মরীচিকার পিছনে ছুটে বেড়াচ্ছেন!’’
বিরোধী নেতাদের অভিমত, তৃণমূলের কাজকর্মে বিজেপিরই সুবিধা হচ্ছে। এই কৌশল নিতে গিয়েই ঘোলা জলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর আসন পেয়ে গেলে ভাইপোকে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া যায় কি না, এই ভাবনাও রয়েছে তৃণমূল নেত্রীর মাথায়। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কথায়, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর বিকল্প রাহুল গাঁধী ও কংগ্রেস— এ কথা বোঝার জন্য রকেট সায়েন্স পড়তে লাগে না! বাংলার দিদি ফেডারাল ফ্রন্ট করে এনডিএ সরকার রক্ষা করতে চাইছেন।’’ সঙ্গে অধীর-ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তীর সংযোজন, ‘‘ঘোলা জলে মাছ ধরে তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলে হয়তো তাঁর কোনও গ্রহ-উপগ্রহকে বাংলায় বসিয়ে দেবেন! তখন মোদী যেমন বলেছিলেন, সেই রকম দু’হাতে লাড্ডু হয়ে যাবে!’’
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য পাল্টা বলছেন, ‘‘রাজ্যের পাশাপাশি দেশের মানুষের যন্ত্রণাও মুখ্যমন্ত্রী বুঝতে পারছেন। দেশের মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য পরিশ্রম করছেন। নিজে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য নয়!’’
সিপিএমের প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রী ইদানীং মোদী বা অমিত শাহকে সরাসরি আক্রমণ করছেন না এবং সিবিআই সারদা-নারদের তদন্তে ঢিলে দিচ্ছে— এটা কি দু’পক্ষের সমঝোতা নয়? বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘সিপিএম বা অন্য বিরোধীরা নেতাজি ইন্ডোর পায় না। অথচ অমিত শাহের জন্য সৌজন্য?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy