Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

যুবক খুনে ধৃত স্ত্রী-প্রেমিক, ফের মনুয়া কাণ্ড!

প্রেমিককে নিয়ে স্বামীকে খুনের অভিযোগ উঠল বছর আঠাশের এক যুবতীর বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত: টুম্পা পোড়েল।

অভিযুক্ত: টুম্পা পোড়েল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:১১
Share: Save:

মাস সাতেকের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক। তার জেরেই প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে খুনের অভিযোগ উঠল বছর আঠাশের এক যুবতীর বিরুদ্ধে। মনুয়া-কাণ্ডের ছায়া এ বার দেখা গেল পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায়।

বাবলু পোড়েল (৩৫) নামে ওই যুবককে খুনের অভিযোগে তাঁর স্ত্রী টুম্পা পোড়েল এবং টুম্পার প্রেমিক সোমনাথ ঘোষ-সহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে বাকি তিনজন হল সোমনাথের পরিচিত আত্মানন্দ গোপ, আত্মানন্দের স্ত্রী শিলা গোপ এবং গাড়ির চালক কমল মুনান। কমলের গাড়িতেই বাবলুকে অপহরণ করা হয়েছিল। শনিবার মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করা হলে ধৃতদের চার দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “নিহতের স্ত্রী-ই খুনের মূল ষড়যন্ত্রী। তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” জেলা পুলিশের আর এক কর্তার কথায়, “বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে খুনের কথা টুম্পা স্বীকার করেছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’’

২০১৭ সালের মে মাসে নিজের বাড়িতে খুন হন বারাসতের অনুপম মজুমদার। সেই ঘটনায় অনুপমের স্ত্রী মনুয়া ও তার প্রেমিক অজিত রায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, অজিতকে সঙ্গে নিয়েই স্বামীকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েছে মনুয়া। অজিত ও মনুয়া দু’জনেই এখন জেলে।

চন্দ্রকোনার ঘটনাতেও সেই এক ছায়া। ৩ জানুয়ারি সকালে চন্দ্রকোনা শহরের বাসিন্দা বাবলুর মৃতদেহ উদ্ধার হয় কেশপুরের মুগবসানের ধান খেতে। গোড়ায় অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবেই দেহ মিলেছিল। পরে নাম-পরিচয় জানা যায়। গলার কাছে ধারাল অস্ত্রের আঘাত থাকায় প্রাথমিক তদন্তেই পুলিশ নিশ্চিত ছিল, ওই যুবককে খুন করে দেহ ফেলে গিয়েছে কেউ। পুলিশের আরও মনে হয়েছিল, ঘটনায় একাধিক লোক জড়িত। পরে টুম্পাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তার মোবাইলের কললিস্ট খতিয়ে দেখে সামনে আসে মনুয়া-কাণ্ডের ছায়া।

আরও পড়ুন: অনুব্রতর ‘দুর্নীতি’, ফাঁস মুকুলের

পুলিশ সূত্রে খবর, টুম্পা ও বাবলুর বিয়ে হয়েছিল বছর ছয়েক আগে। এই দম্পতির পাঁচ বছরের ছেলেও রয়েছে। মাস সাতেক আগে সোমনাথের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় টুম্পার। পেশায় টোটোচালক সোমনাথের বাড়ি মেদিনীপুরে। বছর পঁয়ত্রিশের সোমনাথও বিবাহিত, এক মেয়ের বাবা। নানা কাজে মাঝেমধ্যেই মেদিনীপুরে আসত টুম্পা। টোটোয় যাতায়াতের সূত্রে সোমনাথের সঙ্গে আলাপ হয়। ক্রমে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। সেই সম্পর্কের কথা জেনে ফেলাতেই বাবলুকে খুনের ছক কষা হয়।

এক তদন্তকারী বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদের সময় টুম্পার কথায় অসঙ্গতি ধরা পড়ে। তাতেই বোঝা যায়, খুনের ঘটনায় এই যুবতীও জড়িত।’’ প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাবলুকে অপহরণ করে সোমনাথ ও তার দলবল। মোবাইলে ক্রমাগত বাবলুর গতিবিধি জানিয়ে সাহায্য করে টুম্পা। খুনের পরে গাড়িতে দেহ এনে মুগবসানের ধানখেতে ফেলে দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE