তিনি ঠোঁটকাটা। মনে যা আসে, বলে দেন নির্দ্বিধায়। তিনি মহেশ ভট্ট।
নিজের জীবন নিয়ে সিনেমা করেছেন। টিভি সিরিয়ালও বানিয়েছেন। কিন্তু সব সত্যি কথা কি বলতে পেরেছেন সেখানে?
‘‘সত্যি কথা বলাটা সহজ নয়। সূর্যের দিকে কি খালি চোখে তাকিয়ে থাকা যায়? তেমনই...’’ এবার একটু সময় নিলেন।
যোগ করলেন, ‘‘তবে বলতে তো হবেই। না হলে, লোকজন রোলার চালিয়ে দেবে।’’
নিজের লোকেদের বাড়তি সুযোগ পাইয়ে দেওয়া নিয়ে, এখন সরগরম বলিউড।
তিনি অবশ্য মনে করেন, এ সব শুধু বিতর্কের জন্য বিতর্ক। তাঁর নিজের প্রোডাকশনেই তো মেয়ে আলিয়া ভট্ট কখনও কাজ করেননি। বলিউডে এখন কারও অভিনয়ই নাকি তাঁর ভাল লাগে না। ‘‘এখনকার বলিউডি ছবি তেমন দেখিও না। তার চেয়ে রিজিওনাল ছবি ভাল হচ্ছে,’’ বললেন তিনি।
আলিয়ার ছবিও তা হলে দেখেন না? শুনে চট করে রেগে গেলেন। ফোনের ওপাশ থেকে তেড়েফুঁড়ে ধমক, ‘‘উফ, সব সময় বিতর্ক চান কেন বলুন তো! ওর ছবি দেখি। এই তো ‘উড়তা পঞ্জাব’ দেখলাম। তবে আলিয়া ছাড়া অন্য কারও ছবি দেখি না।’’
নিজে পরিচালনা করা ছেড়ে দিলেন কেন? প্রযোজনায় থাকলেও অনেক দিন কিন্তু কোনও ছবি পরিচালনা করেননি?
মেজাজটা এখনও বিগড়েই আছে, গলার স্বরে সেটা স্পষ্ট, ‘‘পরিচালনা করা ছেড়েছি ঠিকই, কিন্তু সিনেমা তৈরি করা তো ছাড়িনি।’’
তা বলে ‘সারাংশ’, ‘জখম’, ‘তমন্না’র পরিচালক ‘জিসম’, ‘রাজ’, ‘মার্ডার’ প্রযোজনা করবেন?
থামিয়ে দিলেন, ‘‘ ‘সিটি লাইটস’ বললেন না তো, ‘আশিকী টু’ বললেন না। যাক গে, বলতে হবে না। আর ভাই, আমি কী বানাব, আর কী বানাব না, সেটা তো আমি ঠিক করব। অন্য কেউ ঠিক করে দেবে নাকি?
সেই স্বাধীনতা তো আমার থাকবে। আর আমি তো শুধু সমাজকল্যাণ করার জন্য সিনেমা বানাতে আসিনি। টাকাও তো রোজগার করতে হবে।’’
কিন্তু তিনি তো সমালোচনাকে বন্ধ করতে পারেন না। এই যে, সানি লিওনিকে বলিউডে নিয়ে এলেন। অনেকে বলেন, পর্নস্টারকে সিনেমায় আনলেন যৌন সুড়সুড়ি দিয়ে বক্সঅফিস জিততে।
‘‘এই হিপোক্রেসিটা আমার সহ্য হয় না। আরে, লোকজন যখন পর্ন দেখছে, তখন তো কেউ কোনও প্রশ্ন তুলছে না! এখন তো অনেকের স্মার্টফোনেও পর্ন থাকে। কেউ অস্বীকার করতে পারবে, পর্ন দেখে ফোনের ডেটা প্যাকের অনেকটা যায় না! এমন কাউকে দেখান তো, যে ‘জিসম টু’য়ের আগে সানি লিওনিকে জানত না। আরে, ও তো কোনও ক্রিমিনাল অফেন্স করেনি। ওর জনপ্রিয়তাকে আমার সিনেমায় ব্যবহার করেছি। এতে কার কী অসুবিধা,’’ বলেন তিনি।
এ সময়ের বলিউড নিয়ে তিনি যতটা বিরক্ত, ততটাই বিরক্ত সেন্সর বোর্ডের কাজকর্ম নিয়ে। ইউটিউবে ‘সেন্সর কাটাপ্পা’ বলে একটা শর্ট ফিল্ম করেছেন সেন্সর বোর্ডকে নিয়ে ঠাট্টা করে।
তাঁর মতে, ‘‘সেন্সর বোর্ড ছবি সার্টিফাই করবে। ছবির বিষয়বস্তু দেখে সেন্সর সার্টিফিকেট দেবে। ব্যস। ছবি কাটাকাটির অধিকার তো নেই ওদের। বেনেগল কমিটির রিপোর্টও কিন্তু সে কথাই বলেছে। আমাদের ইউটিউব শর্ট ফিল্মে সেটাই বলতে চেয়েছিলাম। নতুন আসা পরিচালককে কী-কী অসুবিধের মুখোমুখি হতে হয়।’’
কিন্তু টিভি তো সেন্সরের বাইরে। তা হলে ‘ব্রেকিং ব্যাড’, ‘হোমল্যান্ড’, ‘হাউজ অব কার্ডস’-এর মতো জনপ্রিয় টিভি সিরিজ ভারতে হয় না কেন?
‘‘আমার মতে ইন্ডিয়ান টেলিভিশন এখনও শৈশবে রয়েছে। ভারতে ট্যালেন্টের কোনও অভাব নেই, কিন্তু ওই প্ল্যাটফর্মটা এখনও কেউ পাচ্ছে না। না হলে দেখুন না, ইউটিউব, ভিমো-তে কত ভাল-ভাল সিরিজ আছে,’’ বলেন তিনি।
সোশ্যাল মিডিয়ার এই দাপাদাপিতে বিয়ে, ডিভোর্স, চিটিং... এই কথাগুলোর সংজ্ঞা কি বদলে যাচ্ছে? অনেকে যে বলেন, আপনার প্রথম বিয়ে (কিরণ ভট্ট) ভাঙার কারণ আপনি নিজে?
‘‘এক মিনিট, এক মিনিট। আপনি কী বলতে চাইছেন, বুঝতে পেরেছি। কিন্তু
শুনে রাখুন, আমার প্রথম বিয়ে ভেঙেছে আমার জন্য নয়। ওটা আপনি ভুল জানেন। উফ, এটা নিয়ে এত জায়গায় এত কথা হয়েছে, আমি না ভাই এ সব নিয়ে আর কিছু বলতে চাই না,’’ বেশ বিরক্ত হয়ে ফোন ছাড়লেন মহেশ ভট্ট।
অরিজিৎ চক্রবর্তী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy