Advertisement
E-Paper

কলকাতার কড়চা

তিনি বিলেতের ডাক্তার, আবার বিলেত ফেরতও বটে! এটা একটা সহজ মানুষের সাধারণ জীবনের অসাধারণ লড়াইয়ের কাহিনি। ব্রিটিশ চিকিৎসক জ্যাক প্রেগার।

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
ব্রিটিশ চিকিৎসক জ্যাক প্রেগার।

ব্রিটিশ চিকিৎসক জ্যাক প্রেগার।

ফুটপাথ ক্লিনিক থেকে শতঝুরি বট

তিনি বিলেতের ডাক্তার, আবার বিলেত ফেরতও বটে! এটা একটা সহজ মানুষের সাধারণ জীবনের অসাধারণ লড়াইয়ের কাহিনি। ব্রিটিশ চিকিৎসক জ্যাক প্রেগার। কলকাতায় আটত্রিশ বছর ধরে গরিবগুর্বো বস্তিবাসীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করে চলেছেন। শুরুটা ১৯৭৯ সালে, মিডলটন রো-এ খোলা আকাশের তলায় ‘ফুটপাথ ক্লিনিক’ নাম দিয়ে। চৌদ্দো বছর চলেছে সেই ফুটপাথ ক্লিনিক। অবশেষে, ১৯৯৩ সালে ‘ক্যালকাটা রেসকিউ’ নামে তাঁর হাতে গড়া সংগঠনটি আইনি স্বীকৃতি পায়। সংগঠনটি এখন একাধিক হেল্থ ক্লিনিক, স্কুল, হ্যান্ডিক্রাফ্‌ট এবং ভোকেশনাল ট্রেনিং কেন্দ্র নিয়ে সারা কলকাতায় ডালপালা ছড়িয়ে দিয়েছে। সেখানে হাজার হাজার নিরাশ্রয়, নিরন্ন, দরিদ্র মানুষ বিনামূল্যে কুষ্ঠ-যক্ষ্মা-এডস-এর চিকিৎসা পাচ্ছেন।

প্রেগারের জন্ম ১৯৩০-এর ২৫ জুলাই ম্যাঞ্চেস্টারে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করে কিছু দিন ওয়েলস-এর এক খামারে কৃষিকাজ করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হলেন ডাবলিনের রয়াল কলেজ অব সার্জেন্স-এ। বিয়াল্লিশ বছর বয়সে ইন্টার্নশিপ করে এমবিই ডিগ্রি নিয়ে বেরিয়েই এক দিন রেডিয়োয় শুনলেন বাংলাদেশে প্রচুর চিকিৎসাকর্মীর প্রয়োজন। ১৯৭২ সালে উদ্বাস্তু সংকট ও শিশুপাচারে বাংলাদেশ জর্জরিত, তিনি ছুটে গেলেন। শিশু ও মায়েদের চিকিৎসা সাহায্যের জন্য গড়ে তুললেন ‘ঢাকা ক্লিনিক’। কিন্তু রাষ্ট্রের পছন্দ হল না।

১৯৭৫-এ ক্লিনিক বন্ধ করে তাঁকে বাংলাদেশ থেকে বার করে দেওয়া হয়। ১৯৭৯-তে কলকাতায়। কয়েক বছর কাজ করেন মাদার টেরিজার সঙ্গে। তার পর... সমানে কাজ চালাচ্ছেন সাতাশি বছর বয়সেও। এ বার এই মানুষটির জীবনের গল্প নিয়েই ডেভিস রিস-এর প্রযোজনায় পরিচালক বেনোয়া লঞ্জ ‘ডক্টর জ্যাক’ নামে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছেন। এটি ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। ছবিটি দেখানো হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি, সকাল ১০টায়, প্রিয়া সিনেমায়। অন্য দিকে নন্দনে ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টেয় একগুচ্ছ ছোট ছবি দেখানোর আয়োজন: সেশন অন শর্টস। উদ্যোগে ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ, সঙ্গে নিফা। উদ্বোধনে রাজা সেন জগন্নাথ গুহ দেবরাজ রায়।

পটচিত্র

প্রথম দিকে ছিল বলিষ্ঠ রেখাচিত্র, পরে আসে রঙ। কালীঘাট অঞ্চলে আসা তীর্থযাত্রীরা স্মৃতি হিসেবে কিনে নিয়ে যেতেন পট। কালক্রমে অঞ্চলের নামেই এটি বিখ্যাত হয় কালীঘাট পট নামে। শিব কালী দুর্গা লক্ষ্মী বা রাধাকৃষ্ণ (সঙ্গের ছবি প্রদর্শনী থেকে) ইত্যাদির পুরাণভিত্তিক চিত্রণ প্রথম দিকে পাওয়া গেলেও জনপ্রিয় হওয়ার পর পটের বিষয় হিসেবে আসতে থাকে নানা সামাজিক কাহিনি বা অন্যান্য অলংকরণ। বিদেশে এই পটচিত্র জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও, বর্তমানে এই ধারার প্রকৃত শিল্পী খুঁজে পাওয়া অসম্ভব বললেই হয়! আশার কথা বিভিন্ন সংগ্রহে এই কাজের বেশ কিছু দুর্লভ নমুনা সংগৃহীত হয়েছে। কলকাতায় চিত্রকূট আর্ট গ্যালারিতে তাদের সংগ্রহের বেশ কিছু পট নিয়ে শুরু হয়েছে প্রদর্শনী ‘কালীঘাট আইকনস’, চলবে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, ২-৮ টা। অন্য দিকে, ৫৫তম প্রতিষ্ঠা দিবস এবং সিমা অ্যাওয়ার্ড শো উপলক্ষে জোকার গুরুসদয় সংগ্রহশালাতেও শুরু হয়েছে পট প্রদর্শনী। চলবে ৪ মার্চ (সোমবার ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া ১১-৫টা) পর্যন্ত।

নিজস্ব গদ্যে

রাজনীতি না সাহিত্য? সত্তর দশকে রাজনীতিকেই বেছে নিয়েছিলেন। নিজেকে প্রেসিডেন্সি জেলের ছাত্র বলতেন। বন্দি অবস্থায় খতমের রাজনীতির সীমাবদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। পার্টি এক্‌স্‌পেল করল। সেই প্রশ্নশীল রাজনৈতিক কর্মী রাঘব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তারপর সাহিত্যই হয়ে উঠল হাতিয়ার, সমাজবিজ্ঞানের প্রাথমিক শিক্ষা নিলেন সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেসের বন্ধুদের সাহচর্যে। দ্বিতীয় বই কমুনিস থেকেই রাঘব স্বতন্ত্র। সৃষ্টিশীল সাহিত্যিক হিসেবে গল্প-উপন্যাসে বিষয়-ফর্মের প্রচলিত ধারাকে অস্বীকার করেছেন। সটীক জাদুনগর, চোর চল্লিশা-র মতো লেখায় ঘটনাকে বুনেছেন নানা সমান্তরাল বয়ানে। লিখেছেন কমলকুমার, কলকাতা: পিছুটানের ইতিহাস। সাংবাদিকের চোখ আর সমাজবিজ্ঞানীর মন নিয়ে রচেছেন বাংলার মুখ, লোচন দাস নামে এক কারিগর। শেষ উপন্যাস রক্তজবা রহস্য। ‘চর্চাপদ’ নামে অন্য রকম প্রকাশনা সংস্থা গড়ে তুলেছিলেন। কর্কট রোগে চলে গেলেন, রেখে গেলেন নিজস্ব গদ্যে রাজনৈতিক ও সামাজিক অতীত সূত্রে বাংলার ভূত-ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা প্রশ্ন। জ্যোতিপ্রকাশ চট্টোপাধ্যায় পুরস্কার পেয়েছিলেন ঠোঁটকাটা, কৌতুকপরায়ণ এই চিন্তক। পুরস্কার নয়, নিজস্ব মেধাবী পাঠকই ছিল তাঁর একান্ত আশ্রয়।

ভারত-আবিষ্কার

জাতীয় নাট্যোৎসবে নতুন মোড়! মিনার্ভা নাট্যসংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র এই তৃতীয় বার এ-উৎসব করতে চলেছে, আগের দু’বারই ছিল আমন্ত্রিত নাট্যগোষ্ঠীদের অভিনয়। এ বার বিজ্ঞাপনে সাড়া দিয়ে যে যে গোষ্ঠী আবেদন করে, তাদের থেকেই নির্বাচিত ১৮টি গোষ্ঠীর নাট্যাভিনয় থাকছে উৎসবে। ‘ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের ১২টি আর এ রাজ্যের ৬টি নাট্যগোষ্ঠীকে যে নির্বাচন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণতই তাদের নাটকের সামগ্রিক শিল্পরূপের বিচারে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে এ ভাবেই ভারত আবিষ্কার করতে চাইছি।’ জানালেন মিনার্ভা নাট্যসংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র-র সভাপতি অর্পিতা ঘোষ। ১১ ফেব্রুয়ারি রবীন্দ্রসদনে উদ্বোধন হল, রবীন্দ্রসদন ও মিনার্ভায় ২১ ফেব্রুয়ারি অবধি চলবে এই জাতীয় নাট্যোৎসব।

ভালবাসার দিনে

সুর-কাব্যের মিলনে সেরার শিরোপা আদায় করে নিয়েছিলেন রামনিধি গুপ্ত বা নিধুবাবু (১৭৪১-১৮৩৯)। জীবনকালে বাবুমহলের অন্দর ছেড়ে বারপল্লিতেও সমাদর মিলেছিল তাঁর। এ বার সেই নিধুবাবুর ভালবাসার গান এবং তার সঙ্গে গল্প, কবিতা দিয়ে সাজানো হয়েছে ‘নিধুবাবু থেকে নোট বাতিল’ ঋক নিবেদিত ‘ভালবাসার দিনে’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি। ১৪ ফেব্রুয়ারি রোটারি সদনে সন্ধে সাড়ে ৬টায়। ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে থাকবে প্রেমবিরহের গান— আর নোট বাতিলের কবিতায় সুবোধ সরকার। বিষয় ভাবনা এবং পরিকল্পনা ঋদ্ধির।

মঙ্গলম

সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের এডুকেশন বিভাগ হাওড়া জেলার ‘আনন্দনগর’ ও ‘দক্ষিণপল্লি’ নামক দুটি গ্রামকে ‘অ্যাডপ্ট’ করেছে। এই দুই গ্রামের ছেলেমেয়েদের নানা ভাবে শিক্ষাদান এবং ভারতীয় সংস্কৃতিতে তাদের উদ্বুদ্ধ করতে বি এড পড়ুয়ারা সপ্তাহে এক দিন ওই দুই গ্রামে যান। ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে আসেন। সেই সমস্ত ছেলেমেয়েরাই এ বার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ক্যাম্পাসে। ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারি, ১০টা-৫টা, কম্পিউটার সায়েন্স, পলিটিকাল সায়েন্স এবং কেমিস্ট্রি বিভাগের সহায়তায় এডুকেশন বিভাগ আয়োজন করেছে ‘মঙ্গলম ক্যাম্প’। যেখানে ওই দুই গ্রামের প্রায় প়ঞ্চাশ-পঞ্চান্ন জন ছেলেমেয়ে ওয়ার্কশপে যোগ দেবে। তারা সবই খেলার ছলে নানা বিষয়ে পাঠ নেবে।

গবেষক

উনিশ শতকের বাংলার সামাজিক ইতিহাস চর্চায় যাঁরা ছিলেন শ্রমে অক্লান্ত ও নিষ্ঠ গবেষক, বিনয়ভূষণ রায় তাঁদের অন্যতম। মাখনলাল রায় আর লীলাবতী দেবীর পুত্র বিনয়ভূষণের জন্ম ফরিদপুরে, ১৯৩৬-এ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক ইতিহাসে স্নাতকোত্তর পাঠ ও গ্রন্থাগার-বিজ্ঞান শিক্ষা। গ্রন্থাগারিক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই নৃতত্ত্ব বিভাগে, কাজ করেছেন সাউথ অ্যান্ড সাউথ ইস্ট এশিয়ান স্টাডিজ-এর ডকুমেনটেশন অফিসার পদেও। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাস/ উনিশ শতকে বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাব-এর রচয়িতা হিসেবে রবীন্দ্র পুরস্কার পান। এ রকম বিবিধ বিষয়ের কাজে তন্নিষ্ঠ ছিলেন বরাবর... বাংলায় সতীদাহ: সামাজিক ও অর্থনৈতিক মূল্যায়ন, অন্তঃপুরের স্ত্রীশিক্ষা, শিক্ষা সংস্কারে বিদ্যাসাগর ও বর্ণপরিচয়, প্রসঙ্গ ডেভিড হেয়ার, জেমস লঙ ইত্যাদি তাঁর বই। চলে গেলেন হঠাৎই।

সুরজিৎ স্মরণ

ভাস্কর সুরজিৎ দাসের জন্ম ১৯৩৬-এ নীলফামারিতে। পরে কলকাতায় এসে সরকারি আর্ট কলেজ থেকে স্বর্ণপদক নিয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পর চাকরিসূত্রে ভারতীয় ভূতত্ত্ব সর্বেক্ষণে। ১৯৭০ সালে এ দেশে তিনিই প্রথম প্রমাণ আকারের ডাইনোসর তৈরি করেন হায়দরাবাদে এবং পরে দিল্লির ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে। ফাইবার তন্তু দিয়ে উন্মুক্ত ভাস্কর্য নির্মাণে এটি ছিল যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ‘ক্যালকাটা পেন্টার্স’ দলের সদস্য এই শিল্পীরই সৃষ্টি পার্ক স্ট্রিটের জওহরলাল নেহরু, সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, প্রেসিডেন্সির ডিরোজিয়ো প্রভৃতি। তিনি রাজ্য সরকারের রামকিঙ্কর সম্মান পেয়েছেন। ২৫ জানুয়ারি প্রয়াত হলেন শিল্পী। ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টায় শিল্পীর বাসভবনে (৩০ডি বৈষ্ণবঘাটা বাই লেন) স্মরণসভা।

দুই সংস্কৃতি

পাশ্চাত্য ও ভারতীয় সংস্কৃতির সংযোগ ঘটাল দুই আলোকচিত্রীর তোলা ছবি। ‘গ্যালারি গোল্ড’-এ আয়োজিত ‘বিটুইন হিয়ার অ্যান্ড দেয়ার’ শীর্ষকে সুদর্শন মণ্ডল ও রাজ সরকারের যৌথ প্রদর্শনীতে বাহান্নটি ছবি প্রদর্শিত হয়েছিল। সুদর্শন পেশায় সফ্‌টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তাঁর ‘রেজোন্যান্স’ সিরিজের সাদাকালো ছবিগুলি আমেরিকায় তোলা, ল্যান্ডস্কেপ ধরনের। পাশাপাশি রাজ সরকারও এয়ারপোর্ট অথরিটিতে চাকরি করেন। তাঁর বৈশিষ্ট্য স্ট্রিট ফটোগ্রাফি। সঙ্গে তাঁরই তোলা বৃন্দাবনের গোপীনাথ মন্দিরে বিধবাদের হোলির ছবি।

ফেরা

লইয়ার হতে চাননি কোনও দিন। তর্কাতর্কি করে যুদ্ধ জেতার ইচ্ছে ছিল না। বরাবর পারফর্মিং আর্টস-এ থাকতে চেয়েছেন। বাবা বলেছিলেন গায়ক হতে চাইলে একটা পয়সাও তাঁর কাছ থেকে পাওয়া যাবে না। এক বছর কোনও যোগাযোগ ছিল না। সেই বাবা অবশ্য এক দিন সিডি শুনতে শুনতে হঠাৎ রাতে ফোন করে কাছে ডেকে নেন। আজ মঞ্চে উঠলেই তাঁকে গাইতে হয় বাল্মীকির গান বা রক অ্যারেঞ্জমেন্টে ‘বাঁধ ভেঙে দাও’। কলেজ ফেস্ট থেকে কলকাতার নিশিঠেকে রবীন্দ্রনাথের গানকে পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। তবে বিষয় রবীন্দ্রনাথ হলে কী হবে, অ্যারেঞ্জমেন্ট থেকে পারফরম্যান্স সবেতেই ছিল উদাত্ত গলায় নতুন ছোঁয়া। অনিরুদ্ধ সাশা ঘোষাল, এখন অনিরুদ্ধ ছেঁটে সাশা। কিন্তু বেশ কিছু দিন এই শহরে তাঁকে দেখা যাচ্ছিল না। অনুরাগীদের বিস্মিত প্রশ্ন ছিল, কোথায় তিনি? চেনা কথা চেনা সুরের ছক ভেঙে এমন কিছু খুঁজছিলেন যেখান থেকে পারফরম্যান্সটাকে নতুন একটা রাস্তায় নিয়ে যাওয়া যায়। সেই সূত্রেই নাটক আর গান নিয়ে পড়াশোনার সিদ্ধান্ত নেন। লন্ডনের রয়্যাল সেন্ট্রাল স্কুলে মিউজিক থিয়েটারে মাস্টার্স করার জন্য কলকাতা-ছাড়া প্রায় দেড় বছর। রবীন্দ্রনাথের নাটককে কী ভাবে পাশ্চাত্য মাধ্যমে ফেলে ইংরেজি তর্জমায় নিয়ে আসা যায়, তাই নিয়েই তাঁর পড়াশোনা। দেড় বছর পর এ বার শহরে ফিরছেন রবীন্দ্রনাথের গান নিয়ে। বলতে চান আজকের সময়ের কথা। কখনও নাটক, কখনও নাচ, কখনও কবিতা উঠে আসবে তাঁর গানে। ১৮ ফেব্রুয়ারি নজরুল মঞ্চের সন্ধ্যায় সাশার লাইভ রেকর্ডিং-এর ডবল অ্যালবামও প্রকাশিত হবে।

শিল্প-ইতিহাসবিদ

নীহাররঞ্জন রায়, সরসীকুমার সরস্বতীর ধারায় ভারতীয় শিল্প-ইতিহাস চর্চার অন্যতম পুরোধা অশোক ভট্টাচার্য চলে গেলেন। বিরাশি পূর্ণ করেও গবেষণা ও গ্রন্থ রচনায় ছিলেন অক্লান্ত। প্রকাশোন্মুখ ভারতের ভাস্কর্য বইটির কাজে ব্যস্ত ছিলেন শেষ দিন পর্যন্ত। নিবারণচন্দ্র ও সুনীতি দেবীর পুত্র অশোকের জন্ম ফরিদপুর-কোটালিপাড়ার ঐতিহ্যবাহী পণ্ডিত পরিবারে, ১৯৩৪ সালের ১২ নভেম্বর। সুকান্ত ভট্টাচার্য ছিলেন তাঁর মেজদা। বামপন্থী অগ্রজদের সাহচর্যে ছোট বেলা থেকেই বাম রাজনীতির ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। নারকেলডাঙা হাইস্কুল সংস্কৃত কলেজ হয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতির পাঠ, পরে সেখানেই অধ্যাপনা। সরসীবাবুর কাছে পিএইচ ডি, তাঁর সঙ্গে তন্ত্রযান শিল্পের ইউনেস্কো প্রকল্পেও কাজ করেছেন। প্রাক-মধ্যযুগের ভারতীয় ভাস্কর্য চিত্রকলা স্থাপত্য ছিল তাঁর চর্চার বিষয়, লিখেছেন অনেকগুলি বই ও বহু প্রবন্ধ। আধুনিক চিত্রকলাতেও তাঁর আগ্রহ ছিল, পাবলো পিকাসো, গোপাল ঘোষ, কালচেতনার শিল্পী, বাংলার চিত্রকলা এ বিষয়ে তাঁর উল্লেখ্য বই। ‘সারস্বত’, ‘চারুকলা’ পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন, সেন্টার ফর আর্কিয়োলজি-র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, ভারতীয় সংগ্রহশালা ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অন্যতম অছি ছিলেন। পেয়েছেন বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের রাখালদাস সম্মান। চলে গেলেন ৬ ফেব্রুয়ারি। ছবি: গৌতম সরকার

প্রাপ্তি

পেশায় শিক্ষক, নেশায় নাট্যকার! তাঁর লেখা নাটক কলকাতার প্রায় সমস্ত অগ্রণী নাট্যদল অভিনয় করে চলেছে। তাঁর রচিত নাটক নির্মাণ করেছেন বিভাস চক্রবর্তী, ব্রাত্য বসু, কৌশিক সেন, সৌমিত্র মিত্র, মেঘনাদ ভট্টাচার্য, সুমন মুখোপাধ্যায়, ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশ ভট্টাচার্য, প্রয়াত অসিত মুখোপাধ্যায় এবং আরও অনেকে। এক সঙ্গে বাংলা নাট্যমঞ্চে পাঁচ-ছ’টি নাটক অভিনয় হয় এই নাট্যকারের— মৌলিক, রূপান্তর বা নাটক-রূপ। উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম হাওড়ার কদমতলায়, ১৯৬০ সালে। স্কটিশ চার্চ কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিতে এম এ, এম ফিল উজ্জ্বল প্রথম দিকে কবিতাই লিখতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন নাট্যরচনায় হাত। ‘প্রথম দিকে নিজের লেখা কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেছি। ‘ইন্দ্ররঙ্গ’ প্রযোজিত ‘আরব্য রজনী’ পরিচালনাও করেছি। তবে, যাত্রাভিনেতা দাদু দোলগোবিন্দ চট্টোপাধ্যায়ই আমার নাটক লেখার প্রেরণা।’ বলছিলেন মৌলানা আজাদ কলেজে অর্থনীতির শিক্ষক। পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে চলছে এন এস ডি, দিল্লিতে ‘রঙ্গ মহোৎসব’। তাতে তাঁর লেখা চারটি নাটক— ‘অদ্য শেষ রজনী’, ‘মনসামঙ্গল’, ‘পাসিং শো’, ও ‘নটী কিরণশশী’ অভিনীত হচ্ছে। অজস্র সম্মানে ভূষিত তাঁর নাট্যকারজীবনে এটাই হয়তো পরম প্রাপ্তি।

Kolkata's Korcha Korcha Raghab Bandyopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy