Monami Ghosh

কলকাতার হলুদ ট্যাক্সি আর ট্রাম নিয়ে নস্টালজিয়া আছে

‘এমন নয় যে কলকাতার কলেজে পড়ব বলে এখানে এসেছি। আমি কাজের সূত্রেই কলকাতায় এসেছি’

Advertisement

মনামি ঘোষ

কসকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৫:৫৩
Share:

‘শুরুর দিকে যেমন রাস্তায় ঘুরতে পারতাম এখন আর পারি না’

আমি কলকাতার মেয়ে নই। যদিও এখন আমাকে কলকাতার মেয়ে বলা যায়।১৯৯৮-এ আমি কলকাতায় এসেছি। এই শহরে কুড়ি বছর পার করে ফেলেছি। এখন নিজেকে বলতে পারি কলকাতারই মেয়ে। যতটা সময় কলকাতায় থাকিনি তার থেকে বেশি সময় কলকাতায় থেকেছি। তবে অনেকের যেমন এই শহরের সঙ্গে ছোটবেলার স্মৃতি আছে, আমার সেরকম কিছু নেই।

Advertisement

এমন নয় যে কলকাতার কলেজে পড়ব বলে এখানে এসেছি। আমি কাজের সূত্রেই কলকাতায় এসেছি। কাজের জন্যই কলকাতার কলেজে ভর্তি হয়েছি। শুটিং শুরু করার সময় থেকেই কলকাতার সঙ্গে সম্পর্ক। আমার বয়ঃসন্ধির পরে পরেই। সেই তখন থেকে অনেক জিনিস ভাল হয়েছে, আবার কিছু কিছু জিনিস চেঞ্জও হয়েছে। আগে যেমন ট্রাম চড়তাম। ট্রাম তো এখন কলকাতার ঐতিহ্য হয়ে গিয়েছে।দেখাই যায় না। অনেক হলুদ ট্যাক্সি ছিল। আমার মনে আছে শুটিংয়ের প্রথম দিকে যখন আমার নিজের গাড়ি ছিল না তখন শুটিং শেষে হলুদ ট্যাক্সি করে বাড়ি ফিরতাম। শুটিংয়েও যেতাম হলুদ ট্যাক্সিতে। এখন নিজের গাড়িতে যাই। গাড়ি বা ড্রাইভারের সমস্যা হলে ওলা বা উবারে যাই। এখন বিষয়টাই পাল্টে গিয়েছে।শুধু আমার জীবনে না, ম্যাক্সিমাম লোকের জীবনেই পাল্টে গিয়েছে। প্রায় কেউ আর হলুদ ট্যাক্সিতে যাতায়াত করে না। আগে বাড়ি থেকে বেরোলেই মোড়ে মোড়ে হলুদ ট্যাক্সি দেখা যেত। এখন দেখাই যায় না।

আরও পড়ুন: ছোটবেলার কলকাতা যেন একটু বেশি ভাল ছিল

Advertisement

‘আমার মনে হয় শহরটার আরও পরিষ্কার হওয়া দরকার’

শুরুর দিকে যেমন রাস্তায় ঘুরতে পারতাম এখন আর পারি না। এইটা খুব আফসোস হয়। তবে বাংলার বাইরে, যেখানে আমাকে কেউ চেনে না সেখানে রাস্তায় ঘুরতে খুব ভালবাসি। স্ট্রিট ফুড খেতে ভালবাসি। এখানে পারি না বলে বিদেশে, বা যেখানে আমাকে কেউ চেনে না সেখানে গিয়ে স্ট্রিট ফুড খাই, ইচ্ছেমতো ঘোরাঘুরি করি, ফুটপাতে শপিং করি। এ সব করে শখ মেটাই। এখানে যে করা যায় না তা নয়। কিন্তু অনেকে এসে কথা বলবে...সেটা যে ভাল লাগে না তা নয়, কিন্তু ব্যক্তিগত স্পেসটা আর থাকে না। সেজন্য প্রথম দিকের কলকাতায় ঘোরাঘুরিটা খুব মিস করি। যদিও হলুদ ট্যাক্সি মিস করি না। তবে একটা নস্টালজিয়া আছে।মনে হয় যেন রাস্তায় হলুদ ট্যাক্সি দেখলে ভাল লাগবে। মনে হয় যেন কলকাতাটা অন্য রকম হয়ে গিয়েছে। হলুদ রংটার জন্য। কলকাতা মানে প্রথমেই মনে পড়ে এনটি ওয়ান স্টুডিও যেখান থেকে আমি প্রথম শুটিং শুরু করেছিলাম। তার আগে কলকাতায় আসা মানেই ছিল মাসির বাড়ি, পিসির বাড়ি আসা।

আরও পড়ুন: কলকাতা ভালবাসায় থাক, ভালবাসতে শেখাক

কলকাতার কিছু জায়গার ফুচকা অসাধারণ খেতে। কিছু বাঙালি রেঁস্তরা আছে সেরকম খাবার আর কোথাও পাওয়া যায় না, পৃথিবীর কোথাও না!

আমার মনে হয় শহরটার আরও পরিষ্কার হওয়া দরকার। কলকাতা একদমই পরিষ্কার নয়। বাইরে থেকে ঘুরে এসে খুব মন খারাপ হয়ে যায়। লোকে রাস্তায়যেতে যেতে একটা কিছু খেল, খেয়ে মোড়কটা রাস্তায় ফেলে দিল। একটা তো আইন থাকা উচিত, ক্যামেরার নজরদারি থাকা উচিত। যেরকম গাড়ির জন্য আছে। আমি অনেক শহর দেখেছি যেখানে রাস্তায় কিছু ফেললে তা দেখতে পেলে সঙ্গে সঙ্গে ফাইন করা হয়। ফাইন দেওয়ার ভয়ে রাস্তায় কেউ কিছু ফেলে না। রাস্তাঘাট একেবারে ঝকঝক করছে নিজের বাড়ির মেঝের মতো। ব্যাঙ্ককের একটা জায়গার কথা বলছি। কিন্তু এরকম নিয়ম অনেক জায়গায় আছে। ইয়োরোপ, আমেরিকার কথা ধরছিই না। আমাদের পাশের দেশ তাইল্যান্ডের কথা ভাবলেও আমাদের দেশ কত নোংরা মনে হয়। কলকাতার কথা হচ্ছে বলে এই শহরের কথাই বলছি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন