Germany

কলকাতাকেই খুঁজে নিলাম জার্মানির ছোট্ট শহরে, নিজেদের ছোট্ট পুজোয়

কলকাতাটাকেই তুলে নিয়ে গিয়েছি এরল্যাঙ্গেনে। তিনটি পরিবার মিলে যত্ন করে সাজিয়ে গুছিয়ে ছোট্ট শারদোৎসব। পাঁচ দিন ধরে একেবারে যৌথ পরিবারের পুজোর স্বাদ।

Advertisement

দীপঙ্কর সরকার

এরল্যাঙ্গেন, জার্মানি শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২১ ২০:২৫
Share:

তিনটি পরিবার মিলে যত্ন করে সাজিয়ে গুছিয়ে ছোট্ট শারদোৎসব।

পুজোয় কলকাতা ফেরার সুযোগ বন্ধ? কুছ পরোয়া নেই। কলকাতাকেই আমরা তুলে নিয়ে গিয়েছি এরল্যাঙ্গেনে। তিনটি পরিবার মিলে যত্ন করে সাজিয়ে গুছিয়ে ছোট্ট শারদোৎসব। পাঁচ দিন ধরে একেবারে যৌথ পরিবারের পুজোর স্বাদ। সাজগোজ, আড্ডা, জমিয়ে ভোজ। সব কিছুই যথাযথ।

Advertisement

কলকাতা থেকে প্রায় সাত হাজার কিলোমিটার দূরে জার্মানির এই ছোট্ট শহর এরল্যাঙ্গেন। সেখানেই আমাদের ততোধিক ছোট্ট ক্লাব ‘দুর্গা ভিলে’। করোনায় দেশে ফেরা এখন দূর অস্ত। পুজোয় বাড়ি ফেরার সুযোগ যে আবার কবে পাব! ঢাকের বাদ্যি, ধূপধুনো, অঞ্জলি, লালপেড়ে শাড়ি, ধুতি-পাঞ্জাবির উৎসবকেই তাই নিয়ে আসা নিজেদের নাগালের মধ্যে। শুধু পারিবারিক পুজোর মজা নয়, কুমোরটুলিকেও নিয়ে এসেছি এখানেই। নিজেরাই মূর্তি গড়েছি, সাবেক সাজের প্রতিমা। মণ্ডপ সাজাচ্ছি নিজেরাই।

আমি মূর্তি গড়তাম ছোটবেলা থেকেই। সে অভ্যাসে দাঁড়ি পড়ে গিয়েছিল। ষোলো বছর পর ফের নিজে হাতে মূর্তি গড়া। সে-ও এক আলাদা তৃপ্তি। প্রতিমা গড়া থেকে মণ্ডপসজ্জা— তার দায়িত্ব আমার। বাকি দুই বন্ধু পুজোর খাওয়াদাওয়া, অনুষ্ঠান-সহ বাকি আয়োজন করছেন যত্ন করে। আর দেশ থেকে উড়ে আসছেন পুরোহিত। সেই রানাঘাট থেকে।

Advertisement

পুজোর যাবতীয় খরচ-খরচা নিজেদেরই।

পুজোর যাবতীয় খরচ-খরচা নিজেদেরই। তবে যতটা ছোট্ট করে করব ভেবেছিলাম, আশপাশের মানুষের উদ্দীপনা দেখে আড়ে বহরে বাড়াতেই হচ্ছে আয়োজন। বিজ্ঞাপন দিয়ে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এখানকারই বেশ কিছু মানুষ, এ দেশে পড়তে আসা ছেলেমেয়েরা, কিছু সংস্থাও। তবে বনেদি বাড়ির মেজাজ নিয়েও আমাদের পুজো কিন্তু সর্বজনীন। যে কেউ দেখতে আসতে পারবেন, যখন খুশি।

কলকাতাকে এরল্যাঙ্গেনে আনতে চেয়েছিলাম নিজেদের জন্যই। মানে, জার্মানির বাঙালিদের জন্য তো বটেই। উদ্দেশ্য ছিল বাঙালিয়ানার উদ্‌যাপনের স্বাদ বিদেশের কাছে তুলে ধরাও। পুজো ঘিরে আমাদের সেই উন্মাদনা চারিয়ে গিয়েছে অন্যদের মধ্যেও। মানে জার্মানি প্রবাসী ভারতীয় থেকে ভিনদেশি মানুষ, সকলের মধ্যেই দেখছি সেই উত্তেজনা। যা দেখছি, প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিনশো মানুষ আমাদের পুজোয় আসবেন, পুজোয় অন্তত এক দিন ভোগও খাবেন।


ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। আমরা সেজেগুজে তৈরি। আমাদের তিন পরিবারের পুজোর উদ্বোধন করেছেন এরল্যাঙ্গেনের মেয়র। এ বার চারটে দিন স্রেফ নির্ভেজাল আনন্দ। একেবারে কলকাতার মতো। বাড়ির মতোও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন