Durga Puja 2022

বন্ধুদের সঙ্গে ঠাকুর দেখার সময় মনের মানুষটি পিছনে থাকলেও কথা বলার সাহস হয়নি!

মায়ের হিটলারি শাসনের বেড়া টপকে পুজোয় প্রেম করার সাহস হয় নি অপরাজিতার। বাবার কাঁধে চেপে ঠাকুর দেখাই একমাত্র সুখের স্মৃতি।

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২২ ১৬:১০
Share:

অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য

হাওড়ায় দুটো বড় পুজোর মধ্যে অন্নপূর্ণা ক্লাবে খুব ভিড় হত। আমি তখন খুব ছোট। এত ভিড় হত যে, কোলে চেপেও ঠাকুর দেখতে পারতাম না। বাবা ছিলেন ছ’ফুট লম্বা। আমাকে সটান কাঁধে বসিয়ে নিতেন। আর আমিও শক্ত করে বাবার চুল ধরে থাকতাম। এ ভাবেই আমার ঠাকুর দেখা। ওই ক্লাবের মণ্ডপে লাগানো হত বিশাল এক ঝাড়বাতি। অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতাম তার দিকে। আমার জীবনে দুর্গা পুজোর সব থেকে সুখের স্মৃতি এটাই।

Advertisement

বাড়িতে ছিল মায়ের হিটলারি শাসন। বড় হওয়ার পরেও পুজো বলে সেই শাসনে কোনও ছাড় ছিল না। বন্ধুদের সঙ্গে সন্ধে ৬ টায় বেরোলে ৯টার মধ্যে বাড়ি ঢুকতেই হত। না হলে মা কেটে ফেলে দেবে! কোনও ছেলেকে ভাল লাগল, তার সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করছে, কী করে বলব? যে দিকেই তাকাতাম, হয় দাদার বন্ধু , নয় তো কাকা বা বাবার বন্ধু। সোজা বাড়িতে খবর পৌঁছে যাবে। বাবাকে নিয়ে কোনও চাপ নেই, কিন্তু কাকা, দাদা সাংঘাতিক, আর মায়ের কানে পৌঁছলে তো আমি শেষ! ওই বন্ধুদের সঙ্গে হেঁটে ঠাকুর দেখার সময় সে-ও পিছনে পিছনে যেত। ব্যস পুজোর প্রেম মানে এই টুকুই! পুজোয় প্যান্ডেলে বসে আড্ডা বা বিসর্জনের সময় নাচা- কোনও কিছুরই অনুমতি ছিল না।

তবে পুজোয় জুতোর ফোস্কাও আমার কাছে দারুণ স্মৃতি! জুতো পরে ঠাকুর দেখতে বেরোতাম আর পায়ে ফোস্কা নিয়ে জুতো হাতে বাড়ি ফিরতাম!

Advertisement

মাধ্যমিকের আগে বাবা চলে গেলেন। তার পর তিন বছরে আমার পুজোয় আনন্দ বলতে কিছুই ছিল না। তবেবিয়ের পর জীবন পুরোটাই অন্য রকম হয়ে গেল। আমি যেন হাতির পাঁচ পা দেখলাম। সারা রাত ঠাকুর দেখা, বিসর্জনে তুমুল নাচ। পুজো ‘ফুল অন’। কোনও বারণ নেই। লোকে তো ক্যামেরা নিয়ে অপেক্ষা করত কখন অপা বিসর্জনের সঙ্গে নাচতে নাচতে যাবে দেখার জন্য!

এখন বাড়িতে দুর্গা পুজো করি। পুজোটা মা দুর্গাকে নিয়েই কেটে যায়। প্রতি বছরই আমি ইউনিটের লোকদের কিছু না কিছু উপহার দিই। এ বার আমিও উপহার পেয়েছি।রত্নাদি ( ঘোষাল) খুব সুন্দর রুপোর সিংহবাহিনী দুর্গা উপহার দিয়েছেন। এত দিন পিতলের একচালার মা দুর্গার মূর্তি পুজো করতাম। এ বছর রত্নাদির দেওয়া দুর্গা প্রতিমা পুজো করব। আমার (অন-স্ক্রিন) মেয়ে মুন্নি ব্যাগ দিয়েছে আর (অন-স্ক্রিন) জা শ্রী দারুণ দুল দিয়েছে!এক কথায় পুজো এ বার জমজমাট!

এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন