সংগৃহীত চিত্র।
হলফ করে নিজেকে বিরাট সাহসী তকমা না দিতে পারলেও ভূতে তেমন ভীতি নেই কোনও দিনই। হ্যাঁ তবে অবশ্যই বিশ্বাস করি ‘এনার্জি’তে। নেতিবাচক ও ইতিবাচক শক্তির অস্তিত্ব এবং ‘তাঁদের’ প্রভাব টের পেয়েছি বহু বার। সেই নিয়ে গল্প না হয় অন্য দিন হবে। ‘ভূতে ভয় না পাওয়া’ মেয়েটি হঠাৎ যেন ভূতের অভিজ্ঞতা লিখতে বসছে, সেটাই বরং খোলসা করা যাক।
প্রায় ১০ বছর আগের কথা। আউটডোরে শ্যুটিং করে গিয়েছি। আগেই জানিয়ে রাখি, তখন আউটডোরে শ্যুটিং হলে সেখানে অভিভাবকদের সঙ্গে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। তা সে যা-ই হোক, আমরা উঠেছি মহিষাদল রাজবাড়ির কাছাকাছি একটি হোটেলে। ওই রাজবাড়িতেই আমাদের শ্যুটিং হত। রাতের বেলা হোটেলের প্রতিটি ঘরে আমরা দু’জন করে থাকতাম।
সেই দিন বাঁধল গোল! জুন মাসের রাত। প্রবল বৃষ্টি বাইরে। খুব সম্প্রতি যেমন বৃষ্টির দাপট কলকাতা দেখল, তার চেয়ে কিছু শতাংশই কম হবে বোধ হয়। আর সেই রাতেই আমার ঘরে আমি একা। আমার ঘরের সঙ্গী ফিরে গিয়েছিলেন কলকাতায়।
ভয় লাগছিল না, এমনটা বললে মিথ্যে বলা হবে। এমন সময়ে আমার ভয়টা দ্বিগুণ হল বারান্দার দরজায় আঘাতের শব্দে। না, ঝড়-বৃষ্টির দাপট নয়, যেন কোনও প্রাণী বা মানুষ ‘দুম দুম’ করে ধাক্কা মারছে দরজায়। তখন আমার বয়সটাও অল্প। সঙ্গে সঙ্গে মাকে ফোন করলাম। সবটা জানালাম। মা বললেন খাটের নীচটা এক বার ভাল করে দেখে নিতে। না হলে, সারারাত টিভি চালিয়ে রাখতে যাতে ভয় না লাগে। কিন্তু তাতেও ফের আওয়াজের পুনরাবৃত্তি হওয়ায় মনে হল হাওয়ার কারণেই এমনটা হচ্ছে। বারান্দার দরজাটা খুলে আমি অবাক। কোথায় হাওয়া! বরং সামনের দিকে বিকট একটি গাছ নড়ছে অদ্ভুত ভাবে।
এখানেই শেষ নয়, খানিক ক্ষণ পরেই শুনতে পাই স্নানঘরে কল খোলার আওয়াজ। এমনটা নয় যে বন্ধ করে আসিনি। কল বন্ধ করার পরেও আবার ফের একই জিনিস! বুঝতে পারলাম, আমার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। সিলিংয়ের উপর দিয়ে শুনতে পারছি ছোট বাচ্চাদের হেঁটে যাওয়ার শব্দ। না, আর দেরি নয়। সঙ্গে সঙ্গে ফোন করলাম নুসরত দি (নুসরত জাহান)-কে। ওই ছবিতে দিদিও ছিল। নুসরত দি প্রস্তাব দিল, ওই রাতটা ওর ঘরেই কাটাতে। কিন্তু ভূতের এত উপদ্রবের পর সারারাত কি আর দু’ চোখের পাতা এক করা যায়!
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।