kitchen garden

বাতিল প্লাস্টিকের বোতলেই ফলান সব্জি-মশলা! কোন গাছ কী ভাবে হবে?

রান্নাঘরের ছোট কৌটোতে থাকা গোটা মশলা দিয়ে শুরু করুন হার্বসের চাষ।

Advertisement

সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৬:৪৭
Share:

বাগানের শাকসব্জি-মশলা দিয়েই হোক বাড়ির রান্না। ছবি: আইস্টক।

খাবার পাতে কাঁচালঙ্কা চাই? রান্নাঘরের জানলায় থাকা টব থেকে তুলে নিলেই হল। মুসুর ডালে ধনে পাতা দিতে চান অথবা পাস্তায় বেসিল? নিজের হাতে তৈরি বাগান থেকে তুলে নিন। বাজারে ছোটাছুটির দরকার নেই। “এমন কেন সত্যি হয় না আহা!” অবশ্যই হবে, দরকার কিছুটা সময়। সোসাল সাইট আর বোকা বাক্সর সামনে যে সময় ব্যয় করেন সেখান থেকে অল্প সময় চুরি করলেই এটা সম্ভব।

Advertisement

আমাজনের আগুন অথবা ওড়িশার ভয়ানক ঘূর্ণিঝড় সবের মূলে এক জনই ভিলেন। প্লাস্টিক। তবে এখনই চাইলেই আমরা প্লাস্টিককে প্রাত্যহিক জীবন থেকে বিদায় করতে পারব না। দুধের প্যাকেট, তেলের শিশি, ঘিয়ের কৌটো কিংবা পানীয় জল এই সবই বাড়িতে আনি প্লাস্টিকের পাত্রে। ব্যবহারের পর ময়লা ফেলার গাড়িতে না ফেলে এগুলো অনায়াসে বাগান করার কাজে লাগাতে পারি।

বাতিল বোতলের অর্ধেক কেটে নিয়ে নীচে জল বেরনোর জন্য ছোট্ট ছিদ্র করে রাখুন। আরও একটা কাজ বাকি। হার্বস হোক অথবা কিচেন গার্ডেন— মাটির যদি সার না পায় তবে গাছের বাড়বাড়ন্ত থমকে থাকে। না কোনও রাসায়ানিক সার নয়, চা পাতা আর সবজির খোসা একসঙ্গে মিক্সিতে একবার ব্লেন্ড করে নিয়ে বাতিল কৌটোতে বারান্দায় রেখে দিলে কয়েক দিনের মধ্যেই তৈরি জৈব সার। সার তৈরি, বাতিল বোতলের টবে মাটি আর সারের স্তর বানিয়ে তিন চার দিন রোদ-হাওয়া খাইয়ে নিন। এ বারে শুরু করুন গাছ লাগানো। রান্নাঘরের ছোট কৌটোতে থাকা গোটা মশলা দিয়ে শুরু করুন হার্বসের চাষ।

Advertisement

আরও পড়ুন: ঘরের মধ্যেই সমুদ্রতট! সঙ্গে থাকবে দোলনাও​

প্লাস্টিকের বোতল দিয়েই শুরু হোক গাছ লাগানোর নেশা।

ধনেপাতা: মুসুর ডাল বা পারশের ঝাল রান্নার পর উপরে সামান্য ধনে পাতা ছড়িয়ে না দিলে রান্না অসম্পূর্ণ থাকে। মশলার কৌটোয় থাকা গোটা ধনে নিজের হাতে বানানো বাতিল বোতলের টবে ছড়িয়ে উপরে সামান্য ঝুরো মাটি দিয়ে অল্প জলের ছড়া দিয়ে রেখে দিন। কয়েক দিনের মধ্যেই ফিনফিনে পাতলা ধনে শাক জন্মাবে। বেশি জল দেবেন না। পচে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। গাছ বড় হলে প্রয়োজন মতো বড় পাতা কাঁচি দিয়ে কেটে নিন। অনেক দিন গাছ আপনার হার্বসের জোগানদার হবে। আর যৎসামান্য অক্সিজেনও পাবেন ফ্রিতে।

আরও পড়ুন: ঘরের আলোকে স্বপ্নালু ও মায়াবী করে তুলবেন কী ভাবে

মৌরি: মৌরি পাতা আমরা সচারচার খাই না। কিন্তু কাশ্মীরী স্টাইলে রান্না মাংসতে মৌরির পাতা ছড়িয়ে দিলে স্বাদে নতুন মাত্রা যোগ হবে। একই ভাবে মৌরি ছড়িয়ে দিলেই কয়েক দিনের মধ্যে কচি পাতা মাথা উঁচু করে উঠে পড়বে।মেথি শাক: পাঁচফোড়নের কৌট থেকে মেথি নিয়ে একই পদ্ধতিতে চাষ করুন। ডাল বা ঝোল নামানোর পর মেথি পাতা দিয়ে চাপা দিয়ে রাখলে এর সুগন্ধ খাওয়ার ইচ্ছে বাড়িয়ে দেবে।

পুদিনা পাতা: শরবত হোক অথবা হরা কাবাব পুদিনা পাতা না হলে জমবে না। আর তা যদি হয় নিজের হাতে বানানো বাগানের তা হলে তো আনন্দের আর সীমা থাকবে না। পুদিনা পাতা বাজার থেকে কিনে আনার পর শেকড়-সহ গোড়া কাঁচি দিয়ে কেটে রাখুন। এর পর এগুলো এক বেলা জলে ভিজিয়ে নিন। সন্ধেবেলা পুতে দিন। প্রথম দিকে ছায়ায় রাখুন। গাছ বেড়ে উঠবে। পরিবর্তে পুদিনার দানা কিনে এনেও গাছ করতে পারেন।

বাড়ির ছাদেও হতে পারে পছন্দসই শাক-সব্জি-মশলার চাষ।

কারি পাতা: ইডলি, দোসা, সম্বরই হোক অথবা উপমা কিংবা উত্তাপম কারিপাতা না দিলে স্বাদ খোলতাই হয় না। কারি পাতার গাছে থাকা ছোট ফল বন্ধুদের বাড়ি থেকেই তুলে আনতে পারেন। এর পর টবের মাটিতে পুঁতে দিন। টাটকা কারিপাতা পেতে অসুবিধে হবে না। তবে নিয়মিত অল্প জল দেওয়া রোদ্দুরে দেওয়া ও বেশি রোদ্দুর থেকে বাঁচিয়ে ছায়ায় রাখা এগুলো তো করতেই হবে।

গন্ধরাজ লেবু: ঘোল হোক অথবা গন্ধরাজ চিকেন বা ফিশ নিজের বাগানের পাতা দিয়ে তৈরি করলে মন খুশ। আর সঙ্গে ফ্রি অক্সিজেন আর দূষণ মুক্তি তো আছেই। লেবুর দানা পুঁতে দিন বোতলের মাটিতে।

তা হলে দেরি না করে শুরু করুন দেশি হার্বস গার্ডেন। আর সেই হার্বস দিয়ে জমে যাক পুজোর দিনের রান্নাবান্না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন