কালীপুজো ও দীপাবলিতে বাজি ফাটানো নিয়ে কলকাতা পুলিশ ও সুপ্রিম কোর্টের তরফে কড়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তাতে স্পষ্ট করা হয়েছে, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং নিরাপত্তা বজায় রাখতে এ বারও প্রশাসন কঠোর ভূমিকা পালন করবে। সেই কারণেই বাজি ও ফানুস ব্যবহারে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
শহর কলকাতায় ফানুস ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে ফানুস বা স্কাই ল্যান্টার্ন ওড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা থাকছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার স্বয়ং। এই নির্দেশিকা অমান্য করলেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশ 'জিরো টলারেন্স' নীতি অনুসরণ করছে। পুলিশ কমিশনার শহরের সমস্ত থানায় নির্দেশ দিয়েছেন, ফানুস কিংবা বাজি সংক্রান্ত নিয়ম ভাঙলেই 'জিরো টলারেন্স' নীতি অনুসারে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ বারের কালীপুজো তথা দীপাবলিতে কেবল মাত্র সবুজ বাজিই পোড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শব্দবাজি পুরোপুরি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, দূষণ কমাতেই শুধুমাত্র পরিবেশবান্ধব সবুজ বাজি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। অন্য কোনও ধরনের বাজি ব্যবহার করা যাবে না।
এ ছাড়াও, বাজি পোড়াতে হবে সময় মেনে। এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশ নির্দেশিকা দিয়েছে — শুধুমাত্র রাত ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বাজি ফাটানো যাবে।
এর পাশাপাশি, কালীপুজোয় ভিড় সামলাতেও প্রস্তুত রয়েছে কলকাতা পুলিশ। পুজোর মণ্ডপ ও জনসমাগমের জায়গাগুলিতে আমজনতার সুরক্ষার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও যানজট এড়ানোই প্রধান লক্ষ্য।
অন্য দিকে, দেশের রাজধানী দিল্লি এবং সংলগ্ন জাতীয় রাজধানী অঞ্চলে (এনসিআর) দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজি সংক্রান্ত বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট কড়া নির্দেশ দিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলে শুধুমাত্র দীপাবলির মতো নির্দিষ্ট কয়েকটি উৎসবের দিনে কয়েক ঘণ্টার জন্য বাজি পোড়ানোর অনুমতি দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বি আর গভই ও বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রণের বেঞ্চের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ২০ অক্টোবর, দীপাবলির দিন সকাল ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত এবং রাত ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে বাজি ফাটানো যাবে।
সুপ্রিম কোর্ট আরও নির্দেশ দিয়েছে– নিষিদ্ধ বাজিগুলির উৎপাদন, বিক্রি এবং অনলাইন বা ই-কমার্স সাইটে বিক্রির উপরে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখতে হবে।
বস্তুত, কলকাতা হোক বা দিল্লি— উভয় ক্ষেত্রেই প্রশাসন এবং আদালত পরিবেশ রক্ষা করে উৎসব উদযাপনের বার্তা দিয়েছে। যা সকলকে মেনে চলতে আহ্বান করা হয়েছে। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)