গোপালচন্দ্র মুখোপাধ্য়ায় ওরফে ‘গোপাল পাঁঠা’! দ্য গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংয়ের প্রেক্ষাপট নিয়ে ইদানীং নতুন করে আলোচনা শুরু হওয়ায়, এই নামটি নিয়েও ফের এক বার চর্চা বেড়েছে।
তথ্য বলছে, গোপালের জন্ম হয়েছিল বউবাজারের মলঙ্গা লেনের একটি পরিবারে। বিপ্লবী অনুকূলচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ছিলেন তাঁর পরম আত্মীয়।
এ হেন গোপালচন্দ্র অনেক অল্প বয়স থেকেই মাংসের দোকান চালাতেন। যে কারণে প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায় তাঁকে ভালোবেসে 'গোপাল পাঁঠা' বলে ডাকতেন! সেই থেকেই তিনি ওই নামে সকলের কাছে পরিচিত হন।
গোপাল ছিলেন পরম কালীভক্ত। মাংসের দোকানেই দেবীর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেখানে নিত্যপুজো ও বলিদানের বিধি পালন করা হত। সেই কালী মূর্তিই ছিল তাঁর দোকানের পরিচয় বা 'ট্রেড মার্ক'!
দক্ষিণ কলকাতায় আজও রয়েছে ‘গোপাল পাঁঠা’র মাংসের দোকান। তাঁর শুরু করা নিয়ম-রীতি যেখানে আজও নিষ্ঠাভরে পালন করেন তাঁর উত্তরসূরিরা।
ভবানীপুর এলাকায় যদুবাবুর বাজার থেকে গাঁজা পার্কের দিকে যেতে গেলে এই দোকানটি পড়ে।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, আগেকার মতোই আজও এই দোকানের কোনও সাইন বোর্ড নেই। কিন্তু, তাতেও দোকান চিনতে কোনও সমস্যা হয় না। ভিতরে থাকা কালী মূর্তি দেখেই সকলে দোকান চিনে নেন।
দোকানের সামনে গেলেই ভিতরে দেখা যাবে সেই প্রতিমা। একই সঙ্গে, ‘গোপাল পাঁঠা’র ছবিও সেখানে দেওয়ালে টাঙানো থাকতে দেখা যাবে।
গোপালের উত্তরসূরিরা জানান, আজও যাবতীয় প্রথা মেনে প্রতিদিন এবং প্রতি অমাবস্যায় পুজো করা হয়।
এ ছাড়া, প্রতি বছর কালীপুজোর সময়ে দেবীর নতুন মূর্তি দোকানে প্রতিষ্ঠা করা হয়। বছরভর সেই মূর্তি সেখানেই থাকে। পরবর্তী কালীপুজোর আগে পুরনো মূর্তি বিসর্জন দিয়ে একই আদলে তৈরি নতুন মূর্তি পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা হয়। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।