Artists of Mahisasuramardini

‘মহিষাসুরমর্দিনী’র কুশীলবদের চেনেন?

পঙ্কজ মল্লিক, বাণীকুমার, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র ছাড়াও আরও অনেক তারকা ছিলেন ‘মহিষাসুরমর্দিনী’র নেপথ্যে। নক্ষত্রদের সমাবেশে জমজমাট হয়ে উঠত মহালয়ার প্রভাত।

Advertisement

সৌভিক রায়

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:০০
Share:

প্রতীকী চিত্র

মহালয়ার ভোরের ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ আদতে এক ঝাঁক কিংবদন্তি তারকার সমাবেশ। ১৯৩২ থেকে আজও যার জনপ্রিয়তা এক চুলও কমেনি। এই বিশেষ প্রভাতী অনুষ্ঠানটির ঘোষণা বা প্রচারপত্রে

Advertisement

লেখা হতো — ‘মহিষাসুরমর্দিনী

রচনা ও প্রবর্তনা— বাণীকুমার

Advertisement

সঙ্গীত-সর্জন— পঙ্কজকুমার মল্লিক

গ্রন্থনা ও স্তোত্রপাঠ— বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র

সঙ্গীতবীথি— মহিষাসুরমর্দিনী’

(ঘোষণাটিও বাণীকুমার অর্থাৎ বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্যের লেখা)

তিন কিংবদন্তি ছাড়াও আরও অনেক তারকা ছিলেন ‘মহিষাসুরমর্দিনী’র নেপথ্যে। অনুষ্ঠানের মূল ভিত্তি ছিল সঙ্গীত ও স্তোত্রপাঠ। পঙ্কজ মল্লিক, কৃষ্ণ ঘোষ, আভাবতী, মানিকমালা, প্রফুল্লবালা, বীণাপানি, প্রভাবতির মতো সেকালের নামকরা শ্রেষ্ঠ গায়ক-গায়িকারা একক ও কোরাসে গান করেছিলেন। একে একে আসেন অনিল দাস, অরুণকৃষ্ণ ঘোষ, ধীরেন বসু, রবীন ব্যানার্জী, শৈল দেবী, ইলা ঘোষ, সুপ্রভা ঘোষ (সরকার), কল্পনা হাজরা প্রমুখ। একাধিক বার শিল্পী বদল হয়েছে। বহু শিল্প এসেছেন, যুক্ত হয়েছেন এই ঐতিহাসিক উস্থাপনার সঙ্গে। যেমন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। চারের দশকে প্রথম বারের জন্য এই ঐতিহ্যবাহী গীতিআলেখ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন হেমন্ত। কোরাস ছাড়াও ‘জাগো দুর্গা’ গানটি একক কণ্ঠে তিনি গাইতেন। পরে সেই গানটি গাইতেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়।

‘যা চণ্ডী মধুকৈটভাদি’, ‘সিংহস্থা শশিশেখরা’, ‘অহং রুদ্রেভির্বসুভিশ্চরাম্যহম্‌’, ‘জটাজূটসমাযুক্তামর্ধেন্দুকৃতশেখরাম্‌’, ‘জয় জয় জপ্যজয়ে’, ‘জয়ন্তী মঙ্গলা কালী’-র মতো গানগুলি সমবেত কণ্ঠে অর্থাৎ কোরাসে গাওয়া হতো। ‘বাজলো তোমার আলোর বেণু’ গেয়েছিলেন সুপ্রীতি ঘোষ, ‘ওগো আমার আগমনী’-আলো শিপ্রা বসুর গাওয়া, ‘তব অচিন্ত্য রূপ-চরিত-মহিমা’-য় কণ্ঠ দান করেন মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের।

‘অখিল-বিমানে তব জয়-গানে’ গেয়েছিলেন কৃষ্ণা দাশগুপ্ত। শ্যামল মিত্র, অসীমা ভট্টাচার্য, আরতি মুখোপাধ্যায়েরা কণ্ঠ দান করেছিলেন ‘শুভ্র শঙ্খ-রবে’ গানটিতে। ‘নমো চণ্ডী, নমো চণ্ডী’ গানটি গান বিমলভূষণ, ‘মাগো তব বিনে সঙ্গীত প্রেম-ললিত’ সুমিত্রা সেনের গাওয়া, ‘বিমানে বিমানে আলোকের গানে’ গাইতেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, ‘হে চিন্ময়ী’ গেয়েছিলেন তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘অমল-কিরণে ত্রিভুবন-মনোহারিণী’ প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাওয়া, ‘শান্তি দিলে ভরি’ গান উৎপলা সেন।

যন্ত্রসঙ্গীতে ছিল সুরেন্দ্রলাল দাস ও মুন্সী আহমেদ নির্দেশিত ‘যন্ত্রীসংঘ’। সারেঙ্গিতে মুন্সি, হারমোনিয়াম খুশি মহম্মদ, বেহালা তারকনাথ দে, ম্যান্ডোলিন সুরেন পাল, গিটার সুজিত নাথ, এসরাজ দক্ষিণামোহন ঠাকুর, শান্তি ঘোষ, বেহালা অবণী মুখোপাধ্যায়, পিয়ানো বাজাতেন খোদ রাইচাঁদ বড়াল। এ ছাড়াও তবলা ও অন্য আরও কিছু বাদ্যযন্ত্রের শিল্পীরা যুক্ত ছিলেন। এই নেপথ্য-নায়কদের মিলিত উদ্যোগই জন্ম দিয়েছিল মহিষাসুরমর্দিনী নামক বিস্ময়ের।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement