প্রতীকী চিত্র।
আর ক'দিন পরই শুরু হতে চলেছে বাঙালির আরও এক আবেগের উৎসব — জগদ্ধাত্রী পুজো। রাজ্যের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর এবং হুগলি জেলার চন্দননগরে এই পুজো বিখ্যাত হলেও, সাধারণত কৃষ্ণনগরে একদিন - অর্থাৎ - কেবল নবমীর দিনেই মূল পুজো সম্পন্ন হয়। কিন্তু, কৃষ্ণনগরের নুড়িপাড়া বারোয়ারির জগদ্ধাত্রী পুজো এই নিয়মের এক উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। এই পুজো চলে টানা চার দিন ধরে! আর সেই কারণেই এখানকার দেবী পরিচিত 'চারদিনি মা' নামে।
দীর্ঘ ১৩৩ বছরের ঐতিহ্য - কেন দেবী এখানে চারদিনি:
নুড়িপাড়া বারোয়ারির এই জগদ্ধাত্রী পুজোর বয়স প্রায় ১৩৩ বছর। অর্থাৎ - এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এই পুজো তার ঐতিহ্য বহন করে চলেছে।
মূল কারণ:
সাধারণত, চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়। কৃষ্ণনগরের নুড়িপাড়া বারোয়ারি চন্দননগরের সেই প্রথা অনুসরণ করে তাদের পুজোও চার দিন ধরে করে থাকে। এই ব্যতিক্রমী রীতির কারণেই এই মায়ের নাম হয়েছে 'চারদিনি মা'।
পুজোর সময়কাল:
মূলত, ষষ্ঠী তিথি থেকে শুরু হয়ে এই পুজো চলে নবমী তিথি পর্যন্ত, মোট চার দিন ধরে। এর পর দশমীতে ঘট বিসর্জন ও প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়।
বিশেষ আকর্ষণ:
পুজো কমিটি জানায়, এই চার দিন ধরে রাত জেগে ঠাকুর দেখা, খাওয়া-দাওয়া, এবং নানা ধরনের সাংস্কৃতিক ও প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। নবমীর দিন দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের জন্য দুপুর বেলা মহাভোগ খাওয়ানোর ব্যবস্থাও থাকে।
কৃষ্ণনগরের নুড়িপাড়া বারোয়ারির এই চার দিনব্যাপী আরাধনা শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি দুই ঐতিহ্যবাহী জনপদ — কৃষ্ণনগর এবং চন্দননগর — এর পুজো পদ্ধতির এক সুন্দর সমন্বয়! মাতৃমূর্তি এখানে সিংহবাহিনী। ডাকের সাজে সজ্জিত হয়ে চারদিনি মা প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থীর মন জয় করে নেন।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।