দেবীর বড়ই চিন্তা। বিল্লপত্তন গ্রামে তাঁর একনিষ্ঠ সাধক ভৃগুরাম বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে আর কে-ই বা আছেন তাঁর পুজো করবেন? এক দিন তিনি দেখা দিলেন স্বয়ং। ভৃগুরাম তখন সবে তন্দ্রাচ্ছন্ন। হঠাৎই দেখেন, দেবী এসে বসে রয়েছেন তাঁর পাশে। চোখে-মুখে চিন্তার মেঘ।
ভৃগুর সত্বর প্রশ্ন, “মা গো, তোমার কীসের চিন্তা?” মা বলে ওঠেন,, “এই বিল্লপত্তন গ্রামে অভয়া হয়ে থাকার জন্য আমিই তোকে নির্দেশ দিলাম। সবই হল। কিন্তু তোর পরে কে আমার পুজো করবে? আমি তো অভয়া, অচলা হয়েই থাকতে চাই…”
কিন্তু ভৃগুর কথাও ঠিক, তিনি কেবল সাধক মাত্র, উপরন্তু বেড়েছে বয়সের ভারও। কে-ই বা তাঁকে দেবে নিজ সন্তান?
দেবী নির্দেশ দেন, ‘অমাবস্যায় ব্রাহ্মণ ঘরের কুমারী এক মেয়ে, সর্পাঘাত করিবে, আসিবে তারে হেথায় নিয়ে। শক্তিপীঠে আনবে যখন, অবাক হবি না দেখে, এক মুষ্টি চিতাভস্ম দিবি তার মুখে।’
এ কেমন স্বপ্ন! ধড়মড়িয়ে উঠে বসেন ভৃগুরাম। দেবীর এ কোন নির্দেশ? কিছুই তো ঢুকছে না মাথায়। অথচ দেবীর কথা অমান্য করাও যাবে না।
দেবীর কথা মতো এক অমাবস্যায় শ্মশানে একটি মেয়ের মৃতদেহ এল। আত্মীয়-পরিজনদের কান্নার রোল শুনে পর্ণকুটির থেকে তড়িঘড়ি বেরিয়ে এলেন ভৃগু। সর্বনাশ! এ তো সাধারণ রমণী নয়, স্বয়ং বিল্লপত্তনের জমিদারের গুরুদেবের কন্যা। মনে মনে সবটাই বুঝতে পারলেন, সবই দেবীর ছলনা…
ভৃগুকে দেখেই তাঁর কাছে এসে কেঁদে পড়লেন সদ্য সন্তানহারা শোকাতুর পিতা। “শুনেছি তুমি নাকি মহাসাধক, আমার সন্তানকে বাঁচিয়ে দাও ঠাকুর।”
আবেদন শুনে কোনও কথাই বললেন না সাধক। কেবল নিভে যাওয়া ঠান্ডা চিতা থেকে কিছুটা ছাই তুলে মেয়েটির মুখে দিলেন। ‘জয় মা’ ধ্বনিতে মুখরিত করলেন চতুর্দিক। অমনি চোখ মেলে তাকাল মেয়েটি। স্বপ্নের মতো সব কথাই মিলে গেল। ভৃগুও ব্যক্ত করলেন বিন্দু বিসর্গ। তার পর আর কী! ধুমধাম করে বিয়ে হয়ে এল ওই বালিকা এবং ভৃগুর।
কথিত আছে, বিল্লপত্তনের যে গ্রামটিতে ভৃগুরাম এসেছিলেন, তা তন্ত্রসাধনায় আদর্শ। রোজ স্নানের আগে দেবীর মূর্তি গড়তেন নিজের হাতে। আর স্নান সেরে সেই মূর্তিরই পুজো করতেন তিনি। এক দিন স্নান সেরে এসে দেখলেন তাঁর পর্ণকুটিরের স্থানে এক বৃহৎ কালীমূর্তি দণ্ডায়মান। কাঁপতে কাঁপতে দেবীর চরণের কাছে বসে পড়লেন সাধক।
দেবী আশ্বাস দেন, তাঁর এই মূর্তিই যেন পূজিত হয় এ বার থেকে। সেই শুরু… আজও সেই দেবী পুজো পেয়ে আসছেন। শ্রীভৃগুরামের পর এই পুজোর দায়িত্ব নেন তাঁর বড় পুত্র শিবচন্দ্র তোর ন্যায়লঙ্কার। ( ‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’)। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।