দুর্গাপুজো কবে, কোথায় কার হাত ধরে শুরু হয়েছে এই নিয়ে নানা মুনির নানা মত। বিভিন্ন ধরনের জনশ্রুতি শোনা যায়। তবে খোদ বাংলার এই দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বিগত ১০২৯ বছর ধরে।
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের এই দুর্গাপুজো শতাব্দী প্রাচীন। মল্ল রাজাদের মৃন্ময়ীর পুজো এটি। বর্তমানে আর রাজাদের রাজ্যপাট নেই। কিন্তু আজও প্রাচীন ধারা বজায় রেখে এই পুজো হয়ে আসছে।
আজও তিনটি তোপ দেগে শুভ সূচনা হয় এই রাজবাড়ির পুজোর। কৃষ্ণ নবমীর দিন মূর্ছা পাহাড় থেকে কামান দেগে দুর্গাপুজোর আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হয়।
ফলে বুঝতেই পারছেন এই বছর ইতিমধ্যেই এই বাড়ির দুর্গাপুজো শুরু হয়ে গিয়েছে। আসলে দেবী দুর্গার বোধনের জন্য মোট ৭টি কল্পারম্ভ রয়েছে, তার একটি হল জিতাষ্টমীর পর দিন। অর্থাৎ কৃষ্ণ নবমীর দিন থেকে পুজো শুরু হয় এখানে, চলে শুক্ল পক্ষের দশমী পর্যন্ত।
বলা হয়ে থাকে ‘জিতার ডালায় বোধন আসে’, অর্থাৎ জীমূতবাহনের বাহনের পুজোর ডালির হাত ধরেই যেন পুজোর সূচনা ঘটে।
কৃষ্ণ নবমীর দিনই কামান দাগার পর ‘বড় ঠাকরুণ’কে মৃন্ময়ী মন্দিরে নিয়ে আসা হয়।
এই ‘বড় ঠাকরুণ’ আদতে হলেন মহাকালীর পট। এখানে তাতেই পুজো হয়।
মাধব সায়রের ঘাটে হাতে লেখা রাজ পরিবারের যে নিজস্ব প্রাচীন বলিনারায়ণী পুঁথি রয়েছে সেটা পড়েই বিশেষ পুজো করা হয়।
স্নান পর্ব সারা হয়। শোভাযাত্রা করে দেবীর পটকে মন্দিরে আনা হয়।
এর পর মন্দিরের সামনে বড় ঠাকরুণকে আবারও পুজো করে তাঁকে মন্দিরে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই প্রায় ১৫ দিন ধরে পূজিত হন দেবী। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)