সংগৃহীত চিত্র।
জগদ্ধাত্রী পুজো মানেই চন্দননগর, আর চন্দননগর মানেই এক মায়াবী আলোর বুনন। হুগলির এই প্রাচীন ফরাসি উপনিবেশটি এখন যেন আবেগের রঙে রাঙা। রেল, সড়ক, নদীপথে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে, কার্যত জনস্রোত। শহর জুড়ে এখন উৎসবের উত্তেজনা, লক্ষ লক্ষ মানুষের আগমন।
এ বারের আকর্ষণগুলির মধ্যে বড় তালডাঙ্গা জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির মণ্ডপ বিশেষ নজর কেড়েছে। এখানকার থিম— 'চোখ থাকতে কানা'— যার মূল বার্তা কুসংস্কার বিরোধী চেতনা। মণ্ডপ জুড়ে রয়েছে সমাজকে সচেতন করার এক গভীর আহ্বান। থিমের গভীরে যে মানবিক স্পর্শ, তা মন ছুঁয়ে যায়।
তবে তালডাঙ্গার দেবী মূর্তি এ বছর সেজে উঠেছেন এক্কে বারে অন্য রূপে। ডাকের সাজকে এখানে দেওয়া হয়েছে এক আধুনিক ‘মুভিং এলিমেন্ট’-এর ছোঁয়া। সোনার গয়না আর ডাকের সাজের কারুকার্য মিলিয়ে তৈরি হয়েছে এক ডায়নামিক ভিজ্যুয়াল এফেক্ট, যা চলমান আলোর সঙ্গে মিলে প্রতিমার নন্দনভঙ্গিকে আরও মনোহর করে তুলেছে। আলোর-ছায়ার এই শিল্প-খেলা রাতের চন্দননগরকে আরও নাটকীয় করে তুলেছে।
মাতৃ মূর্তির উপরে দোলনায় দুলছে রাধা-কৃষ্ণের মূর্তি, এই গোটা সাজসজ্জা ডাকের সাজেই সেজে উঠেছে। ক্লোজ-শট ভিডিও ফুটেজে প্রতিমার শাড়ির বর্ডার, মুকুট আর হার-দোলনার সূক্ষ্ম কারুকাজ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
দর্শনার্থীদের ভিড় সামলাতে গোটা চন্দননগর শহরকে সিসিটিভিতে মুড়ে ফেলা হয়েছে, কড়া নিরাপত্তা জারি। যানজট এড়াতে ২০২৫ সালের জগদ্ধাত্রী পুজোয় চন্দননগরের সিগনেচারকে ঘিরে বিশেষ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তাই দর্শনে যাওয়ার আগে সময় ও রুট পরিকল্পনা করে নেওয়া জরুরি। উৎসবের এই মরসুমে চন্দননগরের মণ্ডপে মণ্ডপে আলোর রোশনাইয়ের পাশাপাশি মায়ের শান্ত মূর্তি আর অভিনব সাজ মনকে এক অন্য জগতে নিয়ে যাচ্ছে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।